ETV Bharat / jagte-raho

প্রেমিকার বাড়ির কাছে যুবকের অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ - যুবককে খুন

প্রেমিকার বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে যুবকের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার হল। নাম রঞ্জিত মণ্ডল (২১)।

প্রেমিকার সঙ্গে রঞ্জিত মণ্ডল
author img

By

Published : Feb 23, 2019, 11:38 PM IST

ভুপতিনগর, ২৩ ফেব্রুয়ারি : প্রেমিকার বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে যুবকের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার হল। নাম রঞ্জিত মণ্ডল (২১)। অভিযোগ, রঞ্জিতের প্রেমিকা ও তার পরিবারের লোকজন পিটিয়ে খুনের পর রঞ্জিতের মৃতদেহ পুড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থানার খানজাতপুরের। রঞ্জিতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত সাতজনকে আটক করেছে ভূপতিনগর থানার পুলিশ। মৃতদেহ কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

ভূপতিনগর পুলিশের তরফে জানা যায়, ওই থানা এলাকারই দক্ষিণ বায়ন্দা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত কলকাতায় একটি সোনার দোকানে কাজ করত। খানজাতপুরে তার মামাবাড়ি। সেই সুবাদে এই গ্রামে আসা যাওয়া ছিল। বছর পাঁচেক আগে গ্রামেরই যুবতি পারুলের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বাড়িতেই জানত সম্পর্কের কথা। রঞ্জিতের ঘন ঘন যাওয়া আসা ছিল। মেয়েটির বাড়িও যেত। পাড়ার লোকজন জানত সবটাই।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, পারুলের বাড়িতে টাকা-পয়সা দিত রঞ্জিত। মোবাইল, সোনাদানাও দিয়েছিল প্রেমিকাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, পারুল ব্যক্তিগত ছবি পাঠাত রঞ্জিতকে। সেই ছবি থেকে আন্দাজ করা যায়, দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পারুলকে বিয়ে করতে চেয়েছিল রঞ্জিত। কিন্তু, নিমরাজি ছিল পারুল। সেই থেকেই সম্ভবত অশান্তির সূত্রপাত। তবে কেউ কেউ একথাও বলছেন, পারুলের বাড়ির লোকজন রঞ্জিতের মৃত্যুর সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়। রঞ্জিত গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

রঞ্জিতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে রঞ্জিত কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরে। ও পারুলের সঙ্গে বিয়ে করতে চাইত। কিন্তু, পারুল বিয়েতে রাজি হয়নি। এনিয়ে মানসিকস অশান্তিতে ভুগছিল রঞ্জিত। সেদিন পারুলের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি খানজাতপুরের কয়েকজনকে পারুলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানায় রঞ্জিত। গ্রামবাসীদের জানায়, পারুলকে সে কয়েকলাখ টাকার জিনিসপত্র দিয়েছে। কিন্তু,এখন পারুল বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। সেদিনের মতো বাড়ি ফিরে আসে রঞ্জিত।

undefined

রঞ্জিতের পরিবারের তরফে জানা যায়, রঞ্জিত বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল পারুলকে। কিন্তু, পারুল বেঁকে বসে। অনেক বোঝানোর পরও সে বিয়েতে রাজি হয়নি। মৃতের বাবা শক্তিপদ মণ্ডল বলেন, "আমার ছেলে আগে দিল্লিতে কাজ করত। সেইসময় বেশি টাকা রোজগার করত। মাসখানেক হয়েছে কলকাতায় কাজ শুরু করেছে। এখানে এত টাকা রোজগার হত না। সরস্বতী পুজোয় পারুল (নাম পরিবর্তিত) আমার ছেলের কাছে একটি সোনার চেন ও দু'হাজার টাকা চেয়েছিল। কিন্তু, আমার ছেলে তা দিতে পারেনি। তখনই পারুল ওকে বলে তাহলে আমাকে ভুলে যাও।"

রঞ্জিতের পরিবার জানিয়েছে, গয়না না দেওয়ায় পারুল দূরত্ব তৈরি করে। কিন্তু, রঞ্জিত বিয়ে করতে চাইত। এরপর গতকাল পারুল ফোন করে রঞ্জিতকে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠায়। বলে বিয়ে করবে। রঞ্জিত সেখানে গেলে পারুল ও তার বাড়ির লোকজন রঞ্জিতকে প্রথমে পিটিয়ে খুন করে। তারপর ঝোপের মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়ে কেরোসিন বা পেট্রল জাতীয় কিছু ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়রা অর্ধদগ্ধ রঞ্জিতের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

যদিও পারুলের পরিবারের সদস্যরা খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রঞ্জিত আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তারা।

undefined

এবিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মানব বড়ুয়া বলেন, "তদন্ত হওয়ার আগে কোনও মন্তব্য করা উচিত হবে না। তবে, প্রেমঘটিত ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছে। পাশাপাশি তৃতীয় কোনও ব্যক্তির দ্বারাও এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।"

মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থানে আসেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থান পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

ভুপতিনগর, ২৩ ফেব্রুয়ারি : প্রেমিকার বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে যুবকের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার হল। নাম রঞ্জিত মণ্ডল (২১)। অভিযোগ, রঞ্জিতের প্রেমিকা ও তার পরিবারের লোকজন পিটিয়ে খুনের পর রঞ্জিতের মৃতদেহ পুড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থানার খানজাতপুরের। রঞ্জিতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত সাতজনকে আটক করেছে ভূপতিনগর থানার পুলিশ। মৃতদেহ কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

ভূপতিনগর পুলিশের তরফে জানা যায়, ওই থানা এলাকারই দক্ষিণ বায়ন্দা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত কলকাতায় একটি সোনার দোকানে কাজ করত। খানজাতপুরে তার মামাবাড়ি। সেই সুবাদে এই গ্রামে আসা যাওয়া ছিল। বছর পাঁচেক আগে গ্রামেরই যুবতি পারুলের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বাড়িতেই জানত সম্পর্কের কথা। রঞ্জিতের ঘন ঘন যাওয়া আসা ছিল। মেয়েটির বাড়িও যেত। পাড়ার লোকজন জানত সবটাই।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, পারুলের বাড়িতে টাকা-পয়সা দিত রঞ্জিত। মোবাইল, সোনাদানাও দিয়েছিল প্রেমিকাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, পারুল ব্যক্তিগত ছবি পাঠাত রঞ্জিতকে। সেই ছবি থেকে আন্দাজ করা যায়, দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পারুলকে বিয়ে করতে চেয়েছিল রঞ্জিত। কিন্তু, নিমরাজি ছিল পারুল। সেই থেকেই সম্ভবত অশান্তির সূত্রপাত। তবে কেউ কেউ একথাও বলছেন, পারুলের বাড়ির লোকজন রঞ্জিতের মৃত্যুর সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়। রঞ্জিত গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

রঞ্জিতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে রঞ্জিত কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরে। ও পারুলের সঙ্গে বিয়ে করতে চাইত। কিন্তু, পারুল বিয়েতে রাজি হয়নি। এনিয়ে মানসিকস অশান্তিতে ভুগছিল রঞ্জিত। সেদিন পারুলের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি খানজাতপুরের কয়েকজনকে পারুলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানায় রঞ্জিত। গ্রামবাসীদের জানায়, পারুলকে সে কয়েকলাখ টাকার জিনিসপত্র দিয়েছে। কিন্তু,এখন পারুল বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। সেদিনের মতো বাড়ি ফিরে আসে রঞ্জিত।

undefined

রঞ্জিতের পরিবারের তরফে জানা যায়, রঞ্জিত বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল পারুলকে। কিন্তু, পারুল বেঁকে বসে। অনেক বোঝানোর পরও সে বিয়েতে রাজি হয়নি। মৃতের বাবা শক্তিপদ মণ্ডল বলেন, "আমার ছেলে আগে দিল্লিতে কাজ করত। সেইসময় বেশি টাকা রোজগার করত। মাসখানেক হয়েছে কলকাতায় কাজ শুরু করেছে। এখানে এত টাকা রোজগার হত না। সরস্বতী পুজোয় পারুল (নাম পরিবর্তিত) আমার ছেলের কাছে একটি সোনার চেন ও দু'হাজার টাকা চেয়েছিল। কিন্তু, আমার ছেলে তা দিতে পারেনি। তখনই পারুল ওকে বলে তাহলে আমাকে ভুলে যাও।"

রঞ্জিতের পরিবার জানিয়েছে, গয়না না দেওয়ায় পারুল দূরত্ব তৈরি করে। কিন্তু, রঞ্জিত বিয়ে করতে চাইত। এরপর গতকাল পারুল ফোন করে রঞ্জিতকে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠায়। বলে বিয়ে করবে। রঞ্জিত সেখানে গেলে পারুল ও তার বাড়ির লোকজন রঞ্জিতকে প্রথমে পিটিয়ে খুন করে। তারপর ঝোপের মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়ে কেরোসিন বা পেট্রল জাতীয় কিছু ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়রা অর্ধদগ্ধ রঞ্জিতের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

যদিও পারুলের পরিবারের সদস্যরা খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রঞ্জিত আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তারা।

undefined

এবিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মানব বড়ুয়া বলেন, "তদন্ত হওয়ার আগে কোনও মন্তব্য করা উচিত হবে না। তবে, প্রেমঘটিত ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছে। পাশাপাশি তৃতীয় কোনও ব্যক্তির দ্বারাও এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।"

মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থানে আসেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থান পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

sample description
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.