নারা, 9 জুলাই: জাপানের একটি সংবাদমাধ্যম কিয়োডো নিউজকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শিনজো আবেকে খুনের ইচ্ছে থাকলেও প্রথম নিশানা কিন্তু তিনি ছিলেন না ৷ হ্যাঁ, পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছে তাঁর হত্যাকারী তেতসুয়া ইয়ামাগামী ৷ তেতসুয়া প্রথমে একটি ধর্মীয় সংগঠনের এক নেতাকে আক্রমণের ছক কষেছিল (Shinzo Abey shooter Tetsuya Yamagami initially planned to attack a religious group leader) ৷ কারণ ?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, 41 বছর বয়সি প্রাক্তন নৌসেনা তেতসুয়ার মা সেই ধর্মীয় সংগঠনকে অনুদান দিতে দিতে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন ৷ ইয়ামাগামী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে ফেলেছিল, জাপানে এই ধর্মপ্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক দেশের প্রভাবশালী নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ৷ এদিকে তার মায়ের এক পয়সাও না-থাকার জন্য দায়ী এই ধর্মীয় সংগঠন ৷
তাই শেষে পরিকল্পনা পালটে শিনজোকেই টার্গেট করে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া মায়ের ছেলে ৷ রবিবার দেশে হাউজ় অফ কাউন্সিলরদের নির্বাচন ৷ তার আগে শিনজো ঠিক কোথায় কোথায় ভাষণ দিয়েছেন এবং দেবেন, সেই সমস্ত জায়গাগুলো ভালো করে ঘুরে দেখে তেতসুয়া ইয়ামাগামী ৷ এমনকী পরিকল্পনা নিখুঁত করতে বারে বারে যায় এলাকাগুলোতে ৷ তারপর শুক্রবার, 8 জুলাই সকালে খুব কাছ থেকে দু'বার ঘাড় লক্ষ্য করে গুলি । ভাষণ দিতে দিতেই লুটিয়ে পড়েন শিনজো আবে ৷ জ্ঞান হারান এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় ৷ দেউলিয়া হওয়ার শোধ নিতেই কি তাহলে 67 বছরের সংরক্ষণশীল লিবারাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাকে খুন করল ধর্মপ্রাণ-মায়ের এই সন্তান ?
আরও পড়ুন: হ্যান্ডশেকিং দূরত্ব থেকে দু'বার গুলি! শিনজোর নিরাপত্তা বলয়ে তেতসুয়ার প্রবেশ নিয়ে চর্চা চলছেই
তবে ইয়ামাগামী স্বীকার করেনি যে সে কোনও অপরাধ করেছে ৷ কারণ, তার মতে, সে আবের রাজনৈতিক বিশ্বাসের বিরোধী ৷ শুক্রবারই পুলিশ তার বাড়ি থেকে বিস্ফোরক পদার্থ, বাড়িতে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, কম্পিউটার উদ্ধার করেছে ৷
বর্তমানে ইয়ামাগামী বেকার ৷ 2020-র শরতে সে কানসাই অঞ্চলের একটি সংস্থায় কাজে যোগ দেয় ৷ এবছরের মে মাসে সেই কাজটি ছাড়ে তেতসুয়া ৷ তারও আগে সে জাপানের নৌসেনায় ছিল ৷ 2005-এর অগস্টে মেরিটাইম সেল্ফ-ডিফেন্স ফোর্সের চাকরিও ছেড়ে দেয় শিনজোর আততায়ী ৷
শনিবার সকালে টোকিওয় শিনজো আবের বাসভবনে পৌঁছয় তাঁর শববাহী গাড়ি ৷ নারা থেকে তাঁর সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন স্ত্রী আকি ৷ এই ঘটনায় শিনজো আবের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷
আরও পড়ুন: শেষরক্ষা হল না, মারা গেলেন জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে