বেজিং, 4 অগস্ট: লাগাতার হুমকি, হুঁশিয়ারি চলছিলই ৷ তা উপেক্ষা করেই তাইওয়ান সফরে (Taiwan Visit) যান মার্কিন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি (Nancy Pelosi) ৷ বুধবার সেই সফর সেরে ফিরে যান তিনি ৷ আর তার 24 ঘণ্টা কাটতে কাটতেই বৃহস্পতিবার আসরে নামল চিন ৷ তাইওয়ানকে চারিদিক থেকে ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করল লাল ফৌজ (China Army Drill) ৷ তথ্য বলছে, এর আগে এশিয়া মহাদেশের এই অঞ্চলে চিনা সেনাবাহিনীর এত বড় মহড়া দেখা যায়নি ! স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ন্য়ান্সি পেলোসি তাইওয়ান ছাড়তেই ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রকে চারপাশ থেকে ঘিরতে শুরু করে চিনা রণতরী ৷ জলপথে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশগুলির দখল নেয় তারা ৷
গত 25 বছরে তাইওয়ানে ন্য়ান্সির মতো এত উঁচু পদের কোনও মার্কিন প্রতিনিধি তাইওয়ান সফরে আসেননি ৷ বুধবারই তিনি তাঁর ভাষণে স্পষ্ট করে দেন, চিনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই আমেরিকা তাইওয়ানের পাশে থাকবে ৷ ওয়াশিংটনের এই ঘোষিত অবস্থানে বেজায় চটেছে বেজিং ৷ এই প্রেক্ষাপটে আমেরিকাকে জবাব দিতেই তাদের এই সামরিক মহড়া বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
প্রসঙ্গত, তাইওয়ানকে ঘিরে ধরে চিনের এই মহড়া শুধুমাত্র যে তাইপেকেই বিপদে ফেলবে তাই নয়, প্রভাবিত হবে অন্য়ান্য দেশের অর্থনীতিও ৷ কারণ, এই পথেই বহু দেশ তাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সারে ৷ সামরিক মহড়ার জেরে সেসব লাটে উঠতে পারে ৷
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর 12টা (স্থানীয় সময়) থেকে তাইওয়ানকে ঘিরে চিনের এই সামরিক মহড়া শুরু হয় ৷ চিনা বাহিনীকে অত্যাধুনিক ও ভারী আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালাতেও দেখা যায় বলে দাবি সূত্রের ৷ সরকারি সংবাদ সংস্থার সম্প্রচারিত খবরে জানানো হয়েছে, "তাইওয়ানকে ঘিরে আপাতত ছ'টি জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছে ৷ এই ছ'টি জায়গাতেই ঘাঁটি গেড়েছে লালফৌজ ৷ সেখান থেকেই চলছে মহড়া ৷ তাই আপাতত ওই এলাকাগুলিতে অন্য কোনও জাহাজ বা বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে ৷"
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আগামী রবিবার দুপুর 12টা পর্যন্ত এই সামরিক মহড়া চলবে ৷ ততক্ষণ পর্যন্ত তাইওয়ানকে ঘিরে একাধিক জায়গায় মহড়া চালিয়ে যাবে চিনা বাহিনী ৷ কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাইওয়ান উপকূল থেকে এই মহড়াস্থলের দূরত্ব মাত্র 20 কিলোমিটার ৷ ঘটনাস্থলে উপস্থিত আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, তাইওয়ানকে ঘিরে কার্যত অস্থায়ী সামরিক শিবির গড়ে তুলেছে চিন ৷ সেখান থেকেই আকাশে 'প্রোজেক্টাইল' (projectiles) ছুড়ছেন সেনার সদস্যরা ৷
আরও পড়ুন: Sheikh Hasina on Conspiracy: কেউ বা কারা তাঁর সরকার ফেলার চক্রান্ত করছে, দাবি হাসিনার
তাইওয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখছে ৷ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, "তাইওয়ান কারও সঙ্গেই বিরোধে যেতে চায় না ৷ তাইওয়ান যুদ্ধও চায় না ৷ কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তারা যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখছে ৷"