হায়দরাবাদ/নয়াদিল্লি, 20 অক্টোবর: ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক চাপানউতোর ক্রমশ বাড়ছে ৷ ভারতে তাদের নাগরিকদের জন্য কানাডা একটি নির্দেশিকা বা পরামর্শ জারি করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব আরেক দফা বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ অন্যদিকে, কূটনৈতিক কর্মী হ্রাসের কারণে মুম্বই, চণ্ডীগড় এবং বেঙ্গালুরুতে কানাডিয়ান কনস্যুলার পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে ।
কানাডা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে, তারা ভারতে তাদের কূটনৈতিক কর্মী কমিয়েছে । এর পরেই, কানাডা ভারতে তাদের নাগরিকদের সতর্ক থাকার জন্য একটি অ্যাডভাইজারি জারি করেছে এবং আবারও উস্কানিমূলক পদক্ষেপ করেছে । অন্যদিকে, তারা ঘোষণা করেছে যে, কর্মীদের হ্রাসের কারণে মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং চণ্ডীগড়ে সমস্ত ধরনের ব্যক্তিগত পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
ব্যক্তিগত বিবরণ না-বলার পরামর্শ: কানাডা তার অ্যাডভাইজারিতে বলেছে, "সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পটভূমিতে ভারতের মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়ায় কানাডার বিরোধিতা করা হয়েছে । এর ফলে কানাডায় বিরোধী আন্দোলন ও বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । কানাডাবাসীদের (ভারতে বসবাসকারী) হুমকি ও হয়রানির মুখে পড়তে হতে পারে । তাই আপনারা (কানাডিয়ান) দিল্লি-এনসিআর এলাকায় নতুন লোকেদের থেকে সতর্ক থাকুন । তাঁদের কোনও ব্যক্তিগত বিবরণ জানাবেন না ৷"
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল! কানাডা ফিরছেন 41 কূটনীতিক
ওই অ্যাডভাইজারিতে কানাডিয়ান নাগরিকদের বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড় এবং মুম্বইতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়েছে ৷ তাঁদের সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, কীভাবে সাধারণত বড় শহরগুলিতে কিছু লোক বিদেশি এবং পর্যটকদের টার্গেট করে তাঁদের জিনিস চুরি করে । তাই কানাডার নির্দেশ, "জনবহুল জায়গায় যাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন ৷"
ওই শহরগুলিতে ভিসা ও কনস্যুলার পরিষেবা স্থগিত: কূটনৈতিক কর্মীদের প্রত্যাহারের প্রেক্ষিতে কানাডা তার অ্যাডভাইজারিতে কানাডা প্রকাশ করেছে যে, বেঙ্গালুরু, মুম্বই এবং চণ্ডীগড় শহরে সমস্ত ধরনের ব্যক্তিগত পরিষেবা বন্ধ করা হচ্ছে । এ কারণে এ সব শহরে ব্যক্তিগত ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । এই অঞ্চলের কানাডিয়ানদেরকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, তাঁরা যদি কিছু প্রয়োজন হয় তবে দিল্লিতে কানাডার হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন যে, ভারতীয় এজেন্টরা খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন ৷ তাঁর এই দাবির পরই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে । ভারত দৃঢ়ভাবে এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে । কানাডার কূটনীতিকরা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ করছেন বলে অভিযোগ করে, কূটনৈতিক কর্মীদের সংখ্যা ভারসাম্যপূর্ণ করার পরামর্শ দেয় দিল্লি । সেই মতোই নয়াদিল্লি কানাডাকে তাদের কূটনৈতিক কর্মী কমানোর জন্য একটি আল্টিমেটাম জারি করে । এই প্রেক্ষাপটে, কানাডা সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে, তারা ভারত থেকে 41 জন কূটনৈতিক কর্মীকে প্রত্যাহার করেছে ।