ETV Bharat / international

সুলেইমানির মৃত্যুর পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে সেনা সরানো নিয়ে অ্যামেরিকা দোলাচলে

author img

By

Published : Jan 8, 2020, 4:58 AM IST

কোনও দেশের মেজর জেনেরালকে এমনভাবে  বিদেশী কোনও রাষ্ট্রের তরফে হামলা চালিয়ে খুন করার ঘটনা অভূতপূর্ব । সুতরাং বলাই বাহুল্য যে ইরান বিষয়টি চুপচাপ মেনে নেবে না । সুলেইমানির উপর অ্যামেরিকার হামলা চালানোর ঘটনায় কূটনীতির অনেক হিসেবই মিলছে না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।

Qasem Soleimani
সুলেইমানির মৃত্যু

বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন অ্যামেরিকা সফলভাবে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA) - এর মাধ্যমে ইরানের পরমাণু প্রকল্পের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন । কিন্তু ওবামার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোটা বিষয়টি কার্যত ভেস্তে দিয়েছেন । বর্তমানে ট্রাম্পের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে JCPOA-র বোধহয় শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে । ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পারমাণবিক চুক্তি থেকে অ্যামেরিকা সরে গিয়েছে । দমন নীতি হিসাবে ইরানের উপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে । পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যে জটিল শিয়া-সুন্নি বিরোধকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সৌদি আরব ও ইজ়রায়েলের মধ্যে বিরোধকেও ব্যবহার করা হয়েছে । জারেদ কুশনির আমলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একাধিক সদর্থক পদক্ষেপ করা হলেও ইরানের সমস্যা দিন দিন জটিল হয়েছে । তার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সংকট তীব্র হয়েছে । ওই এলাকায় বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় ইরানের হাত থাকার অভিযোগ উঠেছে । মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের পাশাপাশি আরও কিছু দেশ যেমন ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, গাজ়া এলাকা, সিরিয়া ও লেবানন অ্যামেরিকার স্বার্থপূরণে সমস্যা তৈরি করছে । অন্যদিকে ইরান প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক সন্দেহজনক সামরিক সংগঠন যেমন হামাস, হিজবুল্লা, শিয়া মিলিশিয়া ও হাউথিসের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ । এই গোষ্ঠীগুলি সর্বদা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে ব্যস্ত ।

অ্যামেরিকা JCPOA থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের পারস্য উপসাগর এলাকায় হারমুজ় প্রণালীতে অস্থিরতা বেড়েছে । এই প্রণালী ওই এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তাই সেখানে অস্থিরতা বাড়ায় আর্থিক সংকটের আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল । ইতিমধ্যে ওই এলাকায় অ্যামেরিকার ড্রোন ও জাহাজে হামলা, সৌদি আরবের তৈল শোধনাগারে হামলার ঘটনায় নির্দিষ্ট করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি । কিন্তু সেই সব ঘটনার পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের আল কাদস বাহিনীর প্রধান মেজর জেনেরাল কাসেম সুলেইমানির উপর হামলা চালানো হয় । 27 ডিসেম্বর অ্যামেরিকার এক ব্যবসায়ী জঙ্গি হামলায় নিহত হন । তারপর গত শুক্রবার বাগদাদ বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সুলেইমানির গাড়ির উপর ড্রোন হামলা চালায় অ্যামেরিকা । হামলায় ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয় সুলেইমানির । সুলেইমানি ছাড়াও ইরান সমর্থক সামরিক নেতা আল মুহানাদিও ওই হামলায় নিহত হন । এই ঘটনায় ইরানে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে । মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সংকট চরমে পৌঁছায় । কারণ কোনও দেশের মেজর জেনেরালকে এমনভাবে বিদেশী কোনও রাষ্ট্রের তরফে হামলা চালিয়ে খুন করার ঘটনা অভূতপূর্ব । সুতরাং বলাই বাহুল্য যে ইরান বিষয়টি চুপচাপ মেনে নেবে না । সুলেইমানির উপর অ্যামেরিকার হামলা চালানোর ঘটনায় কূটনীতির অনেক হিসেবই মিলছে না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । কারণ ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সুলেইমানির উপর এমন সময় হামলা হল যখন ইরান ও অ্যামেরিকা কোনও দেশই যুদ্ধ চায় না । শুধু তাই নয়, দুই দেশই বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন ইশুতে বেড়ে চলা উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করছে । তাই এই পরিস্থিতিতে সুলেইমানির মৃত্যু ইরানের সমস্ত মহলেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে । সুলেইমানির শেষযাত্রায় যে পরিমাণ লোকের জমায়েত হয়েছিল তা দেখে সেই ক্ষোভের আঁচ পাওয়া যায় । জমায়েত থেকে সুলেইমানির মৃত্যুর জন্য অ্যামেরিকার উপর প্রতিশোধের দাবিতে স্লোগান ওঠে । প্রতিশোধের বার্তা দিয়ে অনলাইনেও অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের বিভিন্ন মহল থেকে বার্তা দেওয়া হয় । ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খামেইনি এবং দেশের অন্য নেতারা অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন । এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আগামী দিনগুলি যে যথেষ্ট সংকটময় হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য । এই সংকটের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা । তাই নিরাপত্তার খাতিরে ইতিমধ্যে অ্যামেরিকা ইরাকে অবস্থিত তাদের দূতাবাস থেকে সমস্ত কর্মী ও নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে । ইরাকের পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের দেশ থেকে অ্যামেরিকার সমস্ত নাগরিককে চলে যেতে বলা হবে । মধ্যপ্রাচ্যে অ্যামেরিকা এই মুহূর্তে দোলাচলে রয়েছে । অ্যামেরিকা খুব শীঘ্রই আফগানিস্তান ও সিরিয়া থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কিন্তু সুলেইমানির মৃত্যুর পর মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক সংকট চরমে ওঠায় শেষ পর্যন্ত অ্যামেরিকা সেনা সরাবে না কি বাড়তি সেনা ওই এলাকায় মোতায়েন করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।

সুলেইমানির উপর হামলা ঘটনাকে যুক্তিযুক্ত বলে ব্যাখ্যা করেছেন অ্যামেরিকার বিদেশ সচিব পম্পেও । তিনি বলেন, "এটা স্পষ্ট যে এখন পৃথিবী অনেক নিরাপদ । কারণ কাসেম সুলেইমানি আর এই ধরাধামে নেই । প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন । কারণ সুলেইমানির সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ ছিল । সেই সংগঠনগুলি অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজকর্মে জড়িত । তাই তাদের নাশকতামূলক কাজকর্ম বন্ধ করতে সুলেইমানির উপর এই হামলা চালানো হয় । " এদিকে, সুলেইমানির মৃত্যুর ঘটনার পর ইরান জানিয়েছে অ্যামেরিকার উপর প্রতিশোধ নেবে । সেই প্রসঙ্গে ট্রাম্প জানান, ইরান এমন কোনও অবিবেচক কাজ করলে তাদের 52টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হামলা চালানো হবে । প্রতিটি ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে বলে আমরা জানি । কিন্তু ইরানের অবিবেচক কাজের জন্য অ্যামেরিকা যদি হামলা চালায় তবে সেক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া সমান ও বিপরীত না-ও হতে পারে ।" তবে অ্যামেরিকার উপর হামলা চালানোর জন্য ইরান সমর্থিত বিভিন্ন সামরিক সংগঠন ইতিমধ্যে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা । অ্যামেরিকা ও ইরান দুই পক্ষের কাছেই শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছে বিভিন্ন দেশ । কিন্তু তারাও পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে খুব একটা আশাবাদী নয় । কারণ সুলেইমাইনির উপর হামলা চালিয়ে তা স্বীকার করে অ্যামেরিকা যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে শান্তির আবেদন কতটা কাজে দেবে তা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি সন্দিহান । ইতিমধ্যে দুইপক্ষের মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে । মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েছে । ইরান ইতিমধ্যে জানিয়েছে, পারমাণবিক প্রকল্পের কাজে তারা আর কোনও বিধিনিষেধ মানবে না । মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থির পরিস্থিতির প্রভাব পড়বে তেলের উৎপাদনের উপর । আর তেমনটা হলে তার প্রভাব পড়বে বিশ্বের একাধিক দেশের অর্থনীতির উপরেও ।

তেল আমদানির ক্ষেত্রে ভারত অনেকাংশে ইরানের উপর নির্ভরশীল । তাই ইরান ও অ্যামেরিকার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঘটনায় ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে । ইতিমধ্যে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর কথা বলেছেন অ্যামেরিকা, ইরান ও ওমানে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে । আগামী সপ্তাহে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফের ভারতে আসার কথা । ইতিমধ্য়ে মধ্যপ্রাচ্যে এই সংকট কাটাতে সমস্ত মহল থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে । কিন্তু পরিস্থিতির যে কোনও মুহূর্তে অবনতি হতে পারে ।

বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন অ্যামেরিকা সফলভাবে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA) - এর মাধ্যমে ইরানের পরমাণু প্রকল্পের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন । কিন্তু ওবামার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোটা বিষয়টি কার্যত ভেস্তে দিয়েছেন । বর্তমানে ট্রাম্পের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে JCPOA-র বোধহয় শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে । ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পারমাণবিক চুক্তি থেকে অ্যামেরিকা সরে গিয়েছে । দমন নীতি হিসাবে ইরানের উপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে । পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যে জটিল শিয়া-সুন্নি বিরোধকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সৌদি আরব ও ইজ়রায়েলের মধ্যে বিরোধকেও ব্যবহার করা হয়েছে । জারেদ কুশনির আমলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একাধিক সদর্থক পদক্ষেপ করা হলেও ইরানের সমস্যা দিন দিন জটিল হয়েছে । তার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সংকট তীব্র হয়েছে । ওই এলাকায় বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় ইরানের হাত থাকার অভিযোগ উঠেছে । মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের পাশাপাশি আরও কিছু দেশ যেমন ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, গাজ়া এলাকা, সিরিয়া ও লেবানন অ্যামেরিকার স্বার্থপূরণে সমস্যা তৈরি করছে । অন্যদিকে ইরান প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক সন্দেহজনক সামরিক সংগঠন যেমন হামাস, হিজবুল্লা, শিয়া মিলিশিয়া ও হাউথিসের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ । এই গোষ্ঠীগুলি সর্বদা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে ব্যস্ত ।

অ্যামেরিকা JCPOA থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের পারস্য উপসাগর এলাকায় হারমুজ় প্রণালীতে অস্থিরতা বেড়েছে । এই প্রণালী ওই এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তাই সেখানে অস্থিরতা বাড়ায় আর্থিক সংকটের আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল । ইতিমধ্যে ওই এলাকায় অ্যামেরিকার ড্রোন ও জাহাজে হামলা, সৌদি আরবের তৈল শোধনাগারে হামলার ঘটনায় নির্দিষ্ট করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি । কিন্তু সেই সব ঘটনার পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের আল কাদস বাহিনীর প্রধান মেজর জেনেরাল কাসেম সুলেইমানির উপর হামলা চালানো হয় । 27 ডিসেম্বর অ্যামেরিকার এক ব্যবসায়ী জঙ্গি হামলায় নিহত হন । তারপর গত শুক্রবার বাগদাদ বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সুলেইমানির গাড়ির উপর ড্রোন হামলা চালায় অ্যামেরিকা । হামলায় ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয় সুলেইমানির । সুলেইমানি ছাড়াও ইরান সমর্থক সামরিক নেতা আল মুহানাদিও ওই হামলায় নিহত হন । এই ঘটনায় ইরানে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে । মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সংকট চরমে পৌঁছায় । কারণ কোনও দেশের মেজর জেনেরালকে এমনভাবে বিদেশী কোনও রাষ্ট্রের তরফে হামলা চালিয়ে খুন করার ঘটনা অভূতপূর্ব । সুতরাং বলাই বাহুল্য যে ইরান বিষয়টি চুপচাপ মেনে নেবে না । সুলেইমানির উপর অ্যামেরিকার হামলা চালানোর ঘটনায় কূটনীতির অনেক হিসেবই মিলছে না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । কারণ ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সুলেইমানির উপর এমন সময় হামলা হল যখন ইরান ও অ্যামেরিকা কোনও দেশই যুদ্ধ চায় না । শুধু তাই নয়, দুই দেশই বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন ইশুতে বেড়ে চলা উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করছে । তাই এই পরিস্থিতিতে সুলেইমানির মৃত্যু ইরানের সমস্ত মহলেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে । সুলেইমানির শেষযাত্রায় যে পরিমাণ লোকের জমায়েত হয়েছিল তা দেখে সেই ক্ষোভের আঁচ পাওয়া যায় । জমায়েত থেকে সুলেইমানির মৃত্যুর জন্য অ্যামেরিকার উপর প্রতিশোধের দাবিতে স্লোগান ওঠে । প্রতিশোধের বার্তা দিয়ে অনলাইনেও অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের বিভিন্ন মহল থেকে বার্তা দেওয়া হয় । ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খামেইনি এবং দেশের অন্য নেতারা অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন । এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আগামী দিনগুলি যে যথেষ্ট সংকটময় হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য । এই সংকটের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা । তাই নিরাপত্তার খাতিরে ইতিমধ্যে অ্যামেরিকা ইরাকে অবস্থিত তাদের দূতাবাস থেকে সমস্ত কর্মী ও নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে । ইরাকের পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের দেশ থেকে অ্যামেরিকার সমস্ত নাগরিককে চলে যেতে বলা হবে । মধ্যপ্রাচ্যে অ্যামেরিকা এই মুহূর্তে দোলাচলে রয়েছে । অ্যামেরিকা খুব শীঘ্রই আফগানিস্তান ও সিরিয়া থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কিন্তু সুলেইমানির মৃত্যুর পর মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক সংকট চরমে ওঠায় শেষ পর্যন্ত অ্যামেরিকা সেনা সরাবে না কি বাড়তি সেনা ওই এলাকায় মোতায়েন করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।

সুলেইমানির উপর হামলা ঘটনাকে যুক্তিযুক্ত বলে ব্যাখ্যা করেছেন অ্যামেরিকার বিদেশ সচিব পম্পেও । তিনি বলেন, "এটা স্পষ্ট যে এখন পৃথিবী অনেক নিরাপদ । কারণ কাসেম সুলেইমানি আর এই ধরাধামে নেই । প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন । কারণ সুলেইমানির সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ ছিল । সেই সংগঠনগুলি অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজকর্মে জড়িত । তাই তাদের নাশকতামূলক কাজকর্ম বন্ধ করতে সুলেইমানির উপর এই হামলা চালানো হয় । " এদিকে, সুলেইমানির মৃত্যুর ঘটনার পর ইরান জানিয়েছে অ্যামেরিকার উপর প্রতিশোধ নেবে । সেই প্রসঙ্গে ট্রাম্প জানান, ইরান এমন কোনও অবিবেচক কাজ করলে তাদের 52টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হামলা চালানো হবে । প্রতিটি ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে বলে আমরা জানি । কিন্তু ইরানের অবিবেচক কাজের জন্য অ্যামেরিকা যদি হামলা চালায় তবে সেক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া সমান ও বিপরীত না-ও হতে পারে ।" তবে অ্যামেরিকার উপর হামলা চালানোর জন্য ইরান সমর্থিত বিভিন্ন সামরিক সংগঠন ইতিমধ্যে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা । অ্যামেরিকা ও ইরান দুই পক্ষের কাছেই শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছে বিভিন্ন দেশ । কিন্তু তারাও পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে খুব একটা আশাবাদী নয় । কারণ সুলেইমাইনির উপর হামলা চালিয়ে তা স্বীকার করে অ্যামেরিকা যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে শান্তির আবেদন কতটা কাজে দেবে তা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি সন্দিহান । ইতিমধ্যে দুইপক্ষের মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে । মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েছে । ইরান ইতিমধ্যে জানিয়েছে, পারমাণবিক প্রকল্পের কাজে তারা আর কোনও বিধিনিষেধ মানবে না । মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থির পরিস্থিতির প্রভাব পড়বে তেলের উৎপাদনের উপর । আর তেমনটা হলে তার প্রভাব পড়বে বিশ্বের একাধিক দেশের অর্থনীতির উপরেও ।

তেল আমদানির ক্ষেত্রে ভারত অনেকাংশে ইরানের উপর নির্ভরশীল । তাই ইরান ও অ্যামেরিকার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঘটনায় ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে । ইতিমধ্যে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর কথা বলেছেন অ্যামেরিকা, ইরান ও ওমানে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে । আগামী সপ্তাহে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফের ভারতে আসার কথা । ইতিমধ্য়ে মধ্যপ্রাচ্যে এই সংকট কাটাতে সমস্ত মহল থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে । কিন্তু পরিস্থিতির যে কোনও মুহূর্তে অবনতি হতে পারে ।

Mumbai, Jan 08 (ANI): Protest erupted at Mumbai's Gateway of India over JNU violence. A girl was seen protesting with 'Free Kashmir' placard, which sparked controversy and FIR was also registered against her. The girl said her name is Mehak and she is a writer by profession. She issued a clarification by saying that "narrative put around the situation is absolutely fake". "Like anybody else who believes in democracy I joined the protest, there were several people who were protesting. I saw a bunch of people who were painting placards, be it of NRC, CAA, JNU and then I saw a 'Free Kashmir' placard. I want to clarify I am not a Kashmiri and I am a Maharashtra," said Mehak. "So when I saw this placard, I realised why we were there, it was to raise voice for basic human rights, and right now internet shutdown since last 5 months, they have completely lost that right, so I was protesting for peace," she stated further.

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.