আয়ুর্বেদে দুনিয়ার সকলই উপাদান ৷ গো-মূত্রের উপকারিতার কথা তো শোনাই যায় ৷ এমনকী মানুষের মূত্রপানের উপকারিতার কথাও ওঠে ! তাই বলে তা দাঁতে ছোঁয়ানো ! ভাবতেই পারে না মানুষ ৷ অনেকেই বলবে, অ্যা-মা, ছিঃ ! কিন্তু মানুষ বিচিত্র প্রাণী ৷ অতএব, পশু ও মানুষের মূত্রের বিশেষ গুণ থাকবে আর মানুষ তা জানবে না, ব্যবহার করবে না, হয় না-কি ! প্রাচীন রোমানরা যেমন, মানুষের মূত্রের গুরুত্ব বুঝেছিল খুব ৷
দু'রকমভাবে কাজে লাগিয়েছিল তারা সেই মূত্রকে ৷ প্রথমটা মেনে নেওয়া যায় ৷ আসলে তখন তো আজকের মতো ডিটারজেন্টের এত এত ব্র্যান্ড ছিল না ৷ তাই বলে জামাকাপড় নোংরা হত না, তা তো নয় ৷ সে সব পরিষ্কারে পশুর, এমনকী মানুষের মূত্র যে কার্যকরী, বুঝেছিল রোমানরা ৷ এইসঙ্গে তারা খেয়াল করে, দাঁত ভালো থাকে মূত্র দিয়ে দাঁত মাজলে ! ঝকঝকে... জেল্লা দেয় দু'পাটি ৷
এতএব, জামাকাপড় পরিষ্কার ও দাঁত মাজার জন্য নিয়মিত মূত্র সংগ্রহের প্রয়োজন হয়ে পড়ল ৷ পশুর মূত্র তো একভাবে সংগ্রহ হত, কিন্তু মানুষের মূত্র সংগ্রহের জন্য রীতিমতো পরিকল্পনা করে নগরের রাস্তার পাশে কিছু দূর অন্তর রাখা থাকত মাটির পাত্র ৷ সেখানেই প্রস্রাব করত মানুষ ৷ সেই মূত্রই পরে কাজে লাগানো হত জামাকাপড় কাচার কাজে ৷ এমনকী লন্ড্রিগুলিও মূত্র সংগ্রহ করত রাস্তার ধারের ওই মূত্রপাত্র থেকে ৷ অন্যদিকে, সরাসরি মূত্র দিয়ে দাঁত মাজার পাশাপাশি প্রাচীন রোমানরা মূত্র দিয়েই মাউথওয়াশ ও দাঁতের মাজন তৈরি করেছিল ৷ সেই সময় সবচেয়ে দামি মূত্র ছিল পর্তুগীজ মূত্র ৷ তা নাকি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ছিল ৷ জানা যায়, রোমন আমজনতা প্রচুর পরিমাণ মূত্র ব্যবহার করছে দেখে তৎকালীন রোমান রাজা মূত্রের উপর কর বসান ৷
সদ্য ত্যাগ করা মূত্রে কিন্তু কাজ হত না ৷ মূত্রে যে অ্যামোনিয়া থাকে, তা পেতে মূত্রকে থিতিয়ে যাওয়ার সময় দিতে হত ৷ তারপর তা জলে মিশিয়ে কাজে লাগানো হত ৷ উল্লেখ্য, আজকের দিনের অধিকাংশ ডিটারজেন্ট তথা ক্লিনারে কিন্তু অ্যামোনিয়াই থাকে ৷ সেটাই নোংরা পরিষ্কারের অন্যতম উপাদান ৷ অর্থাৎ কিনা রোমানরা বিরাট ভুল কিছু করেনি ৷ আজকের আমাদের ঘেন্না লাগলেও তাদের সিদ্ধান্তেও ছিল বিজ্ঞান ৷