অক্সফোর্ড, 20 জুলাই : অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোরোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রাথমিক ট্রায়াল সফল হয়েছে । আগামী মাস থেকে ভারতেও এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হবে । ব্রিটেনের মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, AZD1222 নামে পরিচিত এই ভ্যাকসিন শতাধিক মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল ।
অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা ইতিমধ্যেই সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে প্রায় দুই বিলিয়ন ডোজ় তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে । সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার তরফে সংস্থার CEO আদার পুনাওয়ালা সংবাদসংস্থা PTI-কে জানিয়েছেন, "অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি । ভ্যাকসিনটির তৃতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা চলছে । আমরা অগাস্ট মাস থেকেই ভারতে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালু করব । বর্তমান পরিস্থিতি ও ট্রায়ালের অগ্রগতির দিকে নজর রেখে, আমরা আশা করছি 2020 সালের শেষের দিকে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন বাজারে আনতে পারব ।"
প্রসঙ্গত, ল্যানলেট জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যাঁদের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর কেমন প্রতিক্রিয়া মিলছে, তা দেখাই ছিল এই পর্যায়ের মূল লক্ষ্য । ওই জার্নালে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এই পরীক্ষা সফল হয়েছে এবং কোনওরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও নেই ।
আরও পড়ুন : ভারতে মানবদেহে শুরু কোভিড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল
অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার গবেষকরা বলেছেন, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে, 18 থেকে 55 বছর বয়সি মানুষদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে । অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনার ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর ডাঃ অ্যাড্রিয়ান হিল জানিয়েছেন, "প্রায় সকলের মধ্যেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে । এই ভ্যাকসিনটি মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয় ।"
তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে, সেগুলি সংক্রমণ রোধের কাজ করবে । পাশাপাশি, ভ্যাকসিনটি শরীরের T-কোশগুলিকে সক্রিয় করবে যা কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করবে ।
আরও পড়ুন : হায়দরাবাদ NIMS-এ শুরু মানবদেহে কোভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ
ব্রিটেনের পাঁচটি হাসপাতাল এপ্রিল ও মে মাসে এই ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ে মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল । 18 বছর থেকে শুরু করে 55 বছর বয়স পর্যন্ত 1077 জন সুস্থ মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছিল ।
ভ্যাকসিনের প্রয়োগের পর দেখা গেছিল, এদের সকলের শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে T-কোশ অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে । ভ্যাকসিন প্রয়োগের 56 দিন পরেও এই অ্যান্টিবডি শরীরে কার্যকর ছিল ।