কিয়েভ (ইউক্রেন), 20 জুন : একে অপরের হাত ছাড়ব না ৷ কখনও...৷ তাই আলেকজান্দ্রা আর ভিক্টোরিয়া দু'জনে একসঙ্গে হাতকড়া পরেছিলেন । ভ্যালেন্টাইন'স ডে-র দিন ৷ এবার আর কোনও ভাবেই একজনের অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া সম্ভব নয় । চাইলেও নয়, না-চাইলেও নয় ৷ টানা 123 দিন এভাবে কাটানোর পর দেশের জাতীয় টিভি চ্যানেলে সকলের সামনে 17 জুন হাতকড়া কাটালেন প্রেমিক-যুগল ৷ কিন্তু কেন ?
আলেকজান্দ্রা কুদলে আর ভিক্টোরিয়া পুসতোভিতোভা । ইউক্রেনের উত্তরপূর্বের খারকিভ শহরের বাসিন্দা ৷ আসলে ওই সময় সম্পর্কটা ভেঙে যাচ্ছিল ৷ কিন্তু ভাঙন আটকাতে নতুন করে গড়ার পরিকল্পনায় এই পথ বেছে নেন যুগল ৷ এমনটা হলে তো আর একে অপরকে ছাড়তে পারব না, কিছুতেই ৷
প্রত্যেকটা কাজ একসঙ্গে করা, মানে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে থাকা ৷ বাজারে গিয়ে জিনিস কেনা, ধূমপান করা, জুতোর ফিতে বাঁধা এরকম আরও সব কাজ একসঙ্গেই করতে হয়েছে ৷ তাহলে ? না, কিছু অস্বস্তিকর সত্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই চারমাসে ৷ কারওরই "ব্যক্তিগত" কিছু ছিল না ৷
আরও পড়ুন : সপ্তাহের প্রথম তিনদিন প্রথমপক্ষের, পরের তিনদিন দ্বিতীয়পক্ষের ; রবিবার বাবা-মায়ের
29 বছরের ভিক্টোরিয়ার কথায়, "প্রত্যেক মহিলার জীবনে একান্ত গোপন, নিজস্ব একটা জায়গা আছে । সেটা থাকা দরকার ৷ এই সময়ে ওর কাছ থেকে আলাদা কোনও গুরুত্ব পাইনি । কারণ, আমরা সারাক্ষণ একসঙ্গে ছিলাম ৷ ও আমাকে 'তোমায় মিস করছি' এটা বলেনি কখনও, অথচ সেটাই শুনতে চাইতাম ৷"
তবে এই চারমাসে এটা জেনেছেন, দু'জনে সম্পূর্ণ আলাদা মনের ৷ ভিক্টোরিয়ার জীবনের সবচেয়ে শান্ত সময় ছিল 123 দিন ৷ কী বলছেন আলেকজান্দ্রা ? "আমাদের দু'জনের ওয়েভলেনথ একেবারে আলাদা", বললেন 33 বছরের গাড়ির সেলসম্যান কুদলে ৷
তবু হাতকড়া খোলার পর চোখে জল ভিক্টোরিয়ার । আর আলেকজান্দ্রা ? সবার সামনে প্রেমিকাকে বলেছেন, "আমরা যেভাবে চারমাস কাটিয়েছি, তাতে আমি খুশি, অনুশোচনার কিছু নেই ৷ ভবিষ্যতে একসঙ্গে না থাকলেও আনন্দে থাকব ৷"
নিজেদের হাতকড়াটা নিলামে বিক্রি করে কোনও চ্যারিটিতে দান করবেন বলে ঠিক করেছেন প্রেমিক-যুগল ৷ পৃথিবীতে এভাবে সম্পর্ক বাঁচানোর চেষ্টা এখনও পর্যন্ত কেউ করেনি, তাই নাম উঠেছে ইউক্রেনের রেকর্ড বুকে ৷
এবার দু'জন নীচের দিকে তাকিয়ে, আলাদা আলাদা, এটাই শেষ ছবি ইনস্টাগ্রামে একসঙ্গে, ফলোয়ারের সংখ্যা 7800 ৷