ETV Bharat / international

কোন পথে মুশারফের ফাঁসির রায় - পাকিস্তান

2014 সালেই মুশারফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চার্জ গঠন হয় । তার পাঁচ বছর পর ফাঁসির রায় দিল বিশেষ আদালত । এই রায়টি যদি কার্যকর হয় তাহলে তা পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের উপর একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে । প্রতিবেদন লিখছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনেরাল ডি এস হুডা ৷

Pervez Musharraf
পারভেজ় মুশারফ
author img

By

Published : Dec 23, 2019, 10:15 AM IST

পেশওয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকর আহমেদ শেঠের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ 17 ডিসেম্বর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ় মুশারফকে । বিশেষ আদালতের রায়ের বীজ লুকিয়ে আছে 2007 সালে । 2007 সালে সংবিধান বাতিল করে সাংবিধানিক জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হল । 2014 সালেই মুশারফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চার্জ গঠন হয় । তার পাঁচ বছর পর রায় দিল বিশেষ আদালত ।

দিন দুয়েক পর আদালতের রায়ের প্রতিলিপি প্রকাশ্যে এসেছে । সে রায়ে দেখা গেছে, শুধু মুশারফই নন, আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়েও । বিচারপতি শেখ তাঁর রায়ে বলেছেন, ''এক জন মানুষ এমন চরমপন্থী পদক্ষেপ করতে পারেন এটা বিশ্বাস করাই অত্যন্ত কষ্টকর । সেই মানুষটিকে যারা সর্বক্ষণ বেষ্টন করে থাকত, সেনাবাহিনীর সেই সব পদস্থ কর্তারাও সমান ভাবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ।"

মুশারফ পদচ্যুত হয়েছিলেন 2016 সালে । এখন যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও সময় তাঁর ফাঁসি কার্যকর হতে পারে । তবে, এই রায়টি যদি কার্যকর হয় তাহলে তা পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের উপর একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে । আসলে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক কোন পথে এগোবে তার উপর । রাজনৈতিক নেতৃত্ব চাইবে সামরিক শাসন থেকে বেরিয়ে আসতে । একইরকমভাবে সেনা কোনওদিনই তাদের অধিকার ছেড়ে দিতে চাইবে না ।

পথ দেখিয়েছে বিশেষ আদালত । অতীতে দেখা গেছে, 'প্রয়োজনীয়তার মতবাদ'-কে সামনে রেখে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের হাত থেকে সেনা ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে । এখানে প্রয়োজনীয়তা বলতে বোঝানো হয়েছে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে আরও ভালো সরকারি ভূমিকার কথা । পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট 1977 সালে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ক্ষমতাচ্যুত করে জেনেরাল জিয়া উল হকের ক্ষমতা অধিগ্রহণ পর্বটিকে যে ভাবে দেখেছিল, নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করে মুশারফের ক্ষমতালাভকে একই চোখে দেখা হয়েছে ।

গত মাসেই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সেনাপ্রধান বাজওয়ারের তিন বছরের মেয়াদ বৃদ্ধিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিল । তারপরই মুশারফের ফাঁসির রায় । পর পর দুটি রায় বুঝিয়ে দিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আইনের উর্ধ্বে নয় । অবশ্যই এ সব পাকিস্তানের সেনার অনুকূলে বলা যাবে না । হুসেন হাক্কানি তাঁর 'পাকিস্তান : মসজিদ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে' বইতে অধ্যাপক অখিল শাহের সম্পর্কে পর্যালোচনা করেছেন, যিনি 2007 থেকে 2013 সালের মধ্যে 100 জন সেনা কর্তার সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন । তিন চতুর্থাংশ দাবি করেছেন, সংকটময় সময় সেনার ক্ষমতা অধিগ্রহণ পুরোপুরি বৈধ । একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, সংকটের সময়ে রাজনৈতিক নেতারা পরস্থিতি মোকাবিলা করতে মোটেই সক্ষম নন ।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কোনওদিনই চাইবে না তাদের হাত থেকে ক্ষমতা চলে যাক । দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলির উপর সেনা তার প্রভাব বিস্তার করতে চায় । নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্ষেত্রের ডিরেক্টর জেনেরাল এই নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । ISPR-র একটি রির্পোটের ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনেরাল একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন । এক বিবৃতিতে সশস্ত্রবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনেরাল আসিফ গফুর বলেছেন, "যিনি 40 বছর ধরে দেশের সেবা করেছেন, দেশরক্ষার লড়াই করেছেন তিনি দেশদ্রোহী হতে পারেন না । আদালতে সংবিধানকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তির মৌলিক অধিকার থেকে।’’

মুশারফকে ফাঁসির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের কাছে যে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ তাতে কোনও সন্দেহ নেই । এখন দেখার পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলি কেমন পদক্ষেপ করে । অতীত বলছে, পাকিস্তানে কোনও সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হয়নি । সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে সদর্থক ভূমিকা দেখা যায় । যদিও শেষ পর্যন্ত কী হবে, সেটা চূড়ান্ত নয়, পুরো বলটাই এখন ইমরান খানের কোর্টে ।

পেশওয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকর আহমেদ শেঠের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ 17 ডিসেম্বর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ় মুশারফকে । বিশেষ আদালতের রায়ের বীজ লুকিয়ে আছে 2007 সালে । 2007 সালে সংবিধান বাতিল করে সাংবিধানিক জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হল । 2014 সালেই মুশারফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চার্জ গঠন হয় । তার পাঁচ বছর পর রায় দিল বিশেষ আদালত ।

দিন দুয়েক পর আদালতের রায়ের প্রতিলিপি প্রকাশ্যে এসেছে । সে রায়ে দেখা গেছে, শুধু মুশারফই নন, আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়েও । বিচারপতি শেখ তাঁর রায়ে বলেছেন, ''এক জন মানুষ এমন চরমপন্থী পদক্ষেপ করতে পারেন এটা বিশ্বাস করাই অত্যন্ত কষ্টকর । সেই মানুষটিকে যারা সর্বক্ষণ বেষ্টন করে থাকত, সেনাবাহিনীর সেই সব পদস্থ কর্তারাও সমান ভাবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ।"

মুশারফ পদচ্যুত হয়েছিলেন 2016 সালে । এখন যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও সময় তাঁর ফাঁসি কার্যকর হতে পারে । তবে, এই রায়টি যদি কার্যকর হয় তাহলে তা পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের উপর একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে । আসলে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক কোন পথে এগোবে তার উপর । রাজনৈতিক নেতৃত্ব চাইবে সামরিক শাসন থেকে বেরিয়ে আসতে । একইরকমভাবে সেনা কোনওদিনই তাদের অধিকার ছেড়ে দিতে চাইবে না ।

পথ দেখিয়েছে বিশেষ আদালত । অতীতে দেখা গেছে, 'প্রয়োজনীয়তার মতবাদ'-কে সামনে রেখে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের হাত থেকে সেনা ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে । এখানে প্রয়োজনীয়তা বলতে বোঝানো হয়েছে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে আরও ভালো সরকারি ভূমিকার কথা । পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট 1977 সালে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ক্ষমতাচ্যুত করে জেনেরাল জিয়া উল হকের ক্ষমতা অধিগ্রহণ পর্বটিকে যে ভাবে দেখেছিল, নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করে মুশারফের ক্ষমতালাভকে একই চোখে দেখা হয়েছে ।

গত মাসেই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সেনাপ্রধান বাজওয়ারের তিন বছরের মেয়াদ বৃদ্ধিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিল । তারপরই মুশারফের ফাঁসির রায় । পর পর দুটি রায় বুঝিয়ে দিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আইনের উর্ধ্বে নয় । অবশ্যই এ সব পাকিস্তানের সেনার অনুকূলে বলা যাবে না । হুসেন হাক্কানি তাঁর 'পাকিস্তান : মসজিদ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে' বইতে অধ্যাপক অখিল শাহের সম্পর্কে পর্যালোচনা করেছেন, যিনি 2007 থেকে 2013 সালের মধ্যে 100 জন সেনা কর্তার সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন । তিন চতুর্থাংশ দাবি করেছেন, সংকটময় সময় সেনার ক্ষমতা অধিগ্রহণ পুরোপুরি বৈধ । একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, সংকটের সময়ে রাজনৈতিক নেতারা পরস্থিতি মোকাবিলা করতে মোটেই সক্ষম নন ।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কোনওদিনই চাইবে না তাদের হাত থেকে ক্ষমতা চলে যাক । দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলির উপর সেনা তার প্রভাব বিস্তার করতে চায় । নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্ষেত্রের ডিরেক্টর জেনেরাল এই নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । ISPR-র একটি রির্পোটের ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনেরাল একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন । এক বিবৃতিতে সশস্ত্রবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনেরাল আসিফ গফুর বলেছেন, "যিনি 40 বছর ধরে দেশের সেবা করেছেন, দেশরক্ষার লড়াই করেছেন তিনি দেশদ্রোহী হতে পারেন না । আদালতে সংবিধানকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তির মৌলিক অধিকার থেকে।’’

মুশারফকে ফাঁসির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের কাছে যে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ তাতে কোনও সন্দেহ নেই । এখন দেখার পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলি কেমন পদক্ষেপ করে । অতীত বলছে, পাকিস্তানে কোনও সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হয়নি । সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে সদর্থক ভূমিকা দেখা যায় । যদিও শেষ পর্যন্ত কী হবে, সেটা চূড়ান্ত নয়, পুরো বলটাই এখন ইমরান খানের কোর্টে ।

New Delhi, Dec 23 (ANI): Three people died and 10 got injured after a fire broke out at a cloth godown in North-West Delhi's Kirari. The mishap took place in the wee hours of December 23. The fire has been doused and the injured have been admitted to hospital.
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.