কাবুল, 27 অগস্ট : দেখলে মনে হবে না যে একদিন আগেই এই স্থানে প্রবল বিস্ফোরণ ঘটেছে ৷ মৃত্যু হয়েছে মানুষের ৷ বিস্ফোরণের ছিন্নভিন্ন দেহগুলিও দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানদের আটকাতে পারেনি ৷ নয়তো বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানন্দরের সামনে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পরও আজ সকাল থেকে কাতারে কাতারে মানুষ সেখানে ভিড় জমাতেন না ৷ বাচ্চা, বুড়ো, মহিলা সবাই রয়েছেন সেই দলে ৷ প্রাণ হাতে নিয়ে তালিবানি শাসনের বেড়াজাল থেকে নিজেদের বাঁচাতে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন আফগানরা ৷
আফগানিস্তান তালিবানি কব্জায় আসতেই দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে ৷ অন্যান্য দেশের নাগরিকরা তো রয়েছেই, খোদ আফগানরাই ভিটেমাটি ছেড়ে পালাচ্ছেন ৷ সড়কপথে যাওয়ার উপায় নেই ৷ তাই ভরসা একমাত্র বিমানপথ ৷ আর এতেই ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৷ বিমানবন্দরটিতে বিভিন্ন দেশের বিমানের ওঠানামা লেগেই রয়েছে ৷ ঠিক সেভাবেই বৃহস্পতিবারও কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ ৷ অধিকাংশই আফগানিস্তানের ৷ সেই ভিড়ে মধ্যেই ঘটে জোড়া আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ৷ সঙ্গে চলে গুলি ৷ তাতেই মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষা 72 জনের ৷ মারা গিয়েছেন 12 জন মার্কিন সেনা ৷ পরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে জঙ্গী গোষ্ঠী আইএসআইএস ৷
আফগানিস্তানে এখন পদে পদে মৃত্যু ভয় ৷ আবার যে বিস্ফোরণ ঘটবে না, তা কেউ বলতে পারছেন না ৷ কিন্তু দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানরা শুক্রবার সকাল থেকেই হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের সামনে জড়ো হয়েছেন ৷ এতবড় বিস্ফোরণের পরও বিমানবন্দরের বাইরে থিকথিকে ভিড় প্রমাণ করছে সেই মরিয়া ভাবকেই ৷ বিমানবন্দরের বাইরে এক আফগান নাগরিক বলছেন, "আমি মন থেকে বিশ্বাস করি যে যেকোনও মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে ৷ ঈশ্বর এর সাক্ষী রয়েছেন ৷ ভীষণ কঠিন সময়ের মধ্যে আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি ৷ যে কারণে আমরা ভয়কে জয় করে এখানে জড়ো হয়েছি ৷"
আরও পড়ুন : Kabul Airport Blast : অ্যাবে গেটে দেশ ছাড়ার অপেক্ষায় ভিড়, সেই ভিড়ই ছিন্নভিন্ন বিস্ফোরণে
গতকালের বিস্ফোরণে 60 জন আফগানের মৃত্যু হয়েছে ৷ প্রাণ হারিয়েছেন 13 জন মার্কিন সেনা ৷ 143 জন আহত হয়েছেন ৷ আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে কাবুল বিমানবন্দরে এমন বিস্ফোরণের আশঙ্কার কথা পশ্চিমি দেশগুলোর তরফে আগেই জানানো হয়েছিল ৷ সাধারণ মানুষকে বিমানবন্দরটি পারতপক্ষে এড়ানোর চেষ্টা করার কথাও বলা হয়েছিল ৷ বিমানবন্দরের এক আধিকারিক আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের আশঙ্কাও ব্যক্ত করেছিলেন ৷ তারপরই বৃহস্পতিবার ঘটে এই ঘটনা ৷