ইসলামাবাদ, 19 সেপ্টেম্বর : ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে বাসমতি চালের ভৌগোলিক সূচক(GI) ট্যাগের জন্য আবেদন করেছে ভারত । আর এতেই বাসমতি চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে পাকিস্তান । অন্যদিকে ইসলামাবাদ মার্চে জারি করা ভৌগোলিক সূচক আইন এখনও কার্যকর করতে পারেনি ।
ভারতের আবেদন অনুযায়ী, বাসমতি হল লম্বা জাতীয় সুগন্ধি শস্য যা ভারতীয় উপমহাদেশের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে উৎপাদিত হয় । হিমালয়ের পাদদেশে সমভূমি অঞ্চলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা উত্তর ভারতের একটি অংশ । ভারতের ওই আবেদনে বলা হয়েছে, "বিশেষ প্রজাতির এই বাসমতি চাল পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের সমস্ত জেলা এবং উত্তর প্রদেশের পশ্চিমে, জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কিছু জেলায় উৎপন্ন হয় ।"
শীর্ষস্থানীয় পাকিস্তানি চাল রপ্তানিকারীরা ভারতের এই আবদনে অবিলম্বে বিরোধিতা করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন । রাইস এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন অফ পাকিস্তান(REAP) এর সদস্য তৌফিক আহমেদ জানান, "ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে ভারতের আবেদন আমাদের এখনই বিরোধ করা প্রয়োজন নইলে ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে রপ্তানির ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ।"
তিনি আরও জানান, "বারবার অনুরোধ ও স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর ধরে এই গুরুতর বিষয়টিকে উপেক্ষা করে আসছে । এখন যদি এই সমস্যাটি দ্রুততার সাথে পরিচালিত না হয় তবে আমাদের কাছে ভারতীয় নামে বাসমতি চাল বিক্রি করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না ।"
আহমেদ জানান, যেহেতু এই চাল পাকিস্তানেও উৎপাদিত হয় তাই সংজ্ঞা সংশোধনের জন্য আন্তর্জাতিক অভিধানের সাথেও পাকিস্তানকে পরামর্শ করতে হবে । তিনি জানান, দুর্ভাগ্যক্রমে আন্তর্জাতিক বাজারে হিমালয়ান লবণ ও মুলতানি মাটি ভারতীয় নামে পরিচিত ।
পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রকের সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে ভারতের আবেদনে পাকিস্তান অবশ্যই বিরোধিতা করবে । যেহেতু GI আইন জারি করা হয়েছে পাকিস্তানে উৎপন্ন সমস্ত GI পন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে তুলে ধরা হবে ।
পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রক ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অরগানাইজ়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, ইওরোপিয়ান রাইস রেজাইম এবং তার শুল্কমুক্ত ব্যবস্থায় বাসমতি চাল উভয় দেশের পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে । সুতরাং EU-তে বাসমতির একচেটিয়া অধিকার দাবি করে ভারত অনৈতিক কাজ করছে । তিনি আরও জানান, কেমব্রিজ অভিধানে এবং উইকিপেডিয়াতেও বাসমতি চালের উৎপাদনে ভারত ও পাকিস্তানের নাম উল্লখ আছে ।
ইসলামাবাদ চলতি বছরের মার্চ মাসে GI (রেজিস্ট্রেশন এবং সুরক্ষা) আইন কার্যকর করেছে । যা এটি বাসমতি চালের একচেটিয়া অধিকারের দাবিতে ভারতীয় আবেদনের বিরোধিতা করার অধিকার দেয় ।