দিল্লি, ৩ মার্চ : ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ট্রেনিং ক্যাম্প। একটি অডিয়ো বার্তায় একথা স্বীকার করল মাসুদ আজ়হারের ভাই মৌলানা আম্মার।
সোশাল মিডিয়ায় একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ্যে এসেছে। গলার স্বরটি মৌলানা আম্মার বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে সে স্বীকার করেছে, ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান জইশের "মারকাজ়"-এ (ধর্মীয় শিক্ষার কেন্দ্র) বোমা ফেলে। কোনও অফিসিয়াল এজ়েন্সির প্রধান কার্যালয়ের পরিবর্তে জেহাদ শিক্ষার একটি কেন্দ্রে অভিযান চালানো হয়েছে। ভারতের অভিযান প্রসঙ্গে জইশ প্রধানের ভাই বলেছে, "ভারতীয় যুদ্ধবিমান কোনও এজেন্সির গোপন আস্তানায় আক্রমণ চালায়নি। তারা অফিসিয়াল এজ়েন্সির প্রধান কার্যালয়ে বোমা ফেলেনি। একটি ধর্মীয় কেন্দ্রে বোমা ফেলা হয়েছে যেখানে কাশ্মীরের মানুষের সাহায্যের জন্য জেহাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।"
ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রতে কী শেখানো হত তা নিয়েও মুখ খুলেছে মৌলানা আম্মার। তার বক্তব্য, সেখানে কাশ্মীরের সমস্যাকে নিজেদের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করার শিক্ষা দেওয়া হত। আর সেই কেন্দ্রেই অভিযান চালানো যুদ্ধের ডাক দেওয়ার সামিল। সে বলেছে, "আজ শত্রুপক্ষ পাহাড় টপকে আমাদের জমিতে ঢুকেছে। আর আমাদের ধর্মীয় কেন্দ্রে আক্রমণ চালিয়েছে। এটা যুদ্ধের ঘোষণা।" জইশের ট্রেনিং ক্যাম্পে অভিযান চালানোয় ভারতকে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছে আজ়হারের ভাই। তার কথায়, "এটা কোনও এজেন্সির জিহাদ নয়। নিজেদের ভূ-খণ্ড থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের আক্রমণ করেছে। তার জেরে নিশ্চিত করেছে, আমরা ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদ শুরু করব।"
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের বালাকোটে জইশের তিনটি ট্রেনিং ক্যাম্পে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। সেই অভিযানে জইশের প্রথম সারির একাধিক জঙ্গি নেতাসহ প্রায় ৩০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কিন্তু, প্রথম থেকেই সেই দাবি নস্যাৎ করে আসছিল পাকিস্তান সরকার ও সেদেশের সেনা। তাদের দাবি, ভারত বোমা ফেললেও তা ফাঁকা জায়গায় পড়েছে। কয়েকটি বাড়ি ছাড়া কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। একই দাবি করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ। সেই বিতর্কের মাঝে মাসুদ আজ়হারের ভাইয়ের অডিয়ো বার্তায় স্বীকারোক্তি ভারতের বিভিন্ন অংশের দাবিকে আরও মজবুত করল।