বেজিং, 7 ফেব্রুয়ারি : ট্র্যাজেডি! তিনিই প্রথম কোরানা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন ৷ আর সেই চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াংয়ের প্রাণ কেড়ে নিল কোরোনা ভাইরাসই ৷
কোরোনা ভাইরাসের কথা দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেছিলেন তিনি ও বাকি 7 চিকিৎসক ৷ ইউহানের বাসিন্দা ওয়েনলিয়াং গত বছর ডিসেম্বর মাসেই বলেছিলেন রোগের লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে এটি কোরোনা ভাইরাস ৷ মহামারীর হাত থেকে রক্ষার জন্য সবাইকে সতর্ক করার চেষ্টাও করেছিলেন, তার বদলে পুলিশের হাতে অপদস্থ হতে হয় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৷
34 বছর বয়সী লি ওয়েনলিয়াং গত বছর ডিসেম্বর মাসে চিনের জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ‘উইচ্যাট’ (WeChat)-এ প্রাক্তনীদের গ্রুপে একটি মেসেজ করেন যেখানে লেখা ছিল, ‘‘হাসপাতালে 7 জন রোগী ভরতি হয়েছেন সার্স রোগের উপসর্গ নিয়ে, তাঁদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাকি রোগীদের থেকে আলাদা করে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রেখেছে ৷ সকলে স্থানীয় সি-ফুড মার্কেটে কাজ করতেন ’’৷ তিনি বলেন, রোগীদের পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মনে হচ্ছে যে এটি কোরোনা ভাইরাস, এর উপসর্গের সঙ্গে সার্স (severe acute respiratory syndrome)-এর মিল আছে যা 2003 সালে চিনে ও পরে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং 800 জন চিনে মারা যান ৷
লি তাঁর বন্ধুদের বলেন, তারা যেন নিজের পরিজনদের ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক করে দেয় এবং বাইরের কাউকে এই বিষয়ে না জানায় ৷ কিন্তু ওই মেসেজের স্ক্রিনশট কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় ৷ কিছুদিনের মধ্যেই ইউহান পুলিশ গুজব ছড়ানোর অভিযোগ আনে এবং বাকি চিকিৎসকদের মতোই তাঁকেও পুলিশি হেনস্থার শিকার হতে হয় ৷ 8 জন চিকিৎসক যারা প্রথম কোরোনা ভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন, তাদের মধ্যে লি ওয়েনলিয়াংঅন্যতম ৷
এদিকে সংবাদ সংস্থা PTI -এর খবর, বৃহস্পতিবার কোরোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 636-এ, আক্রান্তের সংখ্যা 31 হাজার ৷ অন্যদিকে জাপানের ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে খোঁজ মিলল আরও 41 জনের, যাঁরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৷ এই নিয়ে কেবল ওই জাহাজেই কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌছাল 61-তে ৷ জাপানে 25জন কোরোনা আক্রান্তের সঙ্গে ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা মিলিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে 86-তে, যা চিনের পর সর্বোচ্চ কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৷
ব্রিটেন, জার্মানি ও ইতালিতে নতুন করে কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মিলিয়ে ইউরোপে মোট আক্রান্তের সংখ্যা 31-এ পৌছালো ৷ কানাডার তরফ থেকে কাল প্রথম বিমান 176 জনকে চিন থেকে দেশে ফেরানো হল ৷ সারা বিশ্বেই ধীরে ধীরে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ৷