ETV Bharat / international

চিনকে মাথায় রেখে প্রতিরক্ষায় পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া

author img

By

Published : Jun 5, 2020, 6:50 PM IST

ভারত, জাপান ও অ্যামেরিকার নৌবাহিনীর মধ্যে মালাবার মহড়া হয়ে থাকে । গতকাল দুই দেশের বৈঠকের পর এবার সেই মহড়ায় অংশ নিতে পারে অস্ট্রেলিয়াও ।

প্য়াসিফিক রিজিওন
প্য়াসিফিক রিজিওন

দিল্লি, 5 জুন : ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার নৌ-ক্ষেত্রে সহযোগিতার মনোভাব এবং পারস্পরিক সহাবস্থানই দুই দেশের কূটনৈতিক মিত্রতার মূল বিষয় । গতকাল দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্কট মরিসনের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতির যে নথি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দায়বদ্ধতার কথাই বলা হয়েছে ।

এই ভিশন ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, "ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্য এই অঞ্চলে একটি মুক্ত, অন্তর্ভূক্তিমূলক নিয়মাবলী প্রতিষ্ঠা করা ।" তাৎপর্যপূর্ণভাবে, দক্ষিণ চিন সাগর এবং ভারত মহাসাগরে চিনের আগ্রাসনের দিকে নজর রেখে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই দেশের তরফেই রসদ আদানপ্রদানের একটি ব্যবস্থা হয়েছে । এর জেরে দুই দেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ আরও দৃঢ় হবে । দিল্লি ও ক্যানবেরা গত ছ’বছরে তাদের প্রতিরক্ষা মহড়ার সংখ্যা চারগুণ বাড়িয়েছে । যার মধ্যে অন্যতম নৌ-সেনার মহড়া ‘অজিনডেক্স’।

ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সার্বিক কৌশলগত বোঝাপড়ার বিষয়ে জারি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মিউচুয়াল লজিস্টিক্স সাপোর্ট (MLSA)-র মধ্য দিয়ে সামরিক মহড়ার সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে দু'পক্ষই সম্মত হয়েছে ।"

ক্যানবেরার প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার নভদীপ পুরী বলেন, "সার্বিক কৌশলগত বোঝাপড়া একটি বিশেষ সম্পর্ক তৈরি করে । যেখানে MLSA-র মাধ্যমে সামরিক আদানপ্রদানের পাশাপাশি কোয়াডও শক্তিশালী হবে । আমাদের এধরনের চুক্তি প্রত্যেক কোয়াড সদস্যের (জাপান, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া) সঙ্গে করা উচিত । এছাড়াও প্রতি দু-বছরে একবার বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্তরেও আলোচনা হবে । ভারত-অস্ট্রেলিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে অর্থপূর্ণ করে তোলার এটাও একটা অংশ ।"

২০১৬ সালে তাঁর সময়েই দু’দেশের মধ্যে একটি হোয়াইট শিপিং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল । MLSA-র মাধ্যমে দুই দেশই একে অন্যের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের সুযোগ পাবে, যার মধ্যে রয়েছে রিফুয়েলিং এবং সেনাকর্মীদের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা । এই ব্যবস্থার আরও উদ্দেশ্য হল, দ্বিপাক্ষিক মহড়ার মধ্য দিয়ে ভারতীয় নৌসেনা এবং রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা ।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্গত ন্যাশনাল সিকিওরিটি কলেজের প্রধান এবং "কনটেস্ট ফ র দা ইন্দো-প্যাসিফিক"-এর লেখক রোরি মেডকাফ বলেন, "ভারত মহাসাগরের দুটি প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়া ও ভারত । এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের নৌসেনা ও উপকূলরক্ষীবাহিনী একসঙ্গে কাজ করতে, প্রশিক্ষণ নিতে ও গোয়েন্দা তথ্যের আদানপ্রদান করতে পারবে । এর জেরে আমরা ভারত মহাসাগরের উপর নজরদারি করতে পারি । যাতে বেআইনিভাবে মাছ ধরা থেকে কোনও নৌ-শক্তির গতিবিধি সংক্রান্ত নানা তথ্য আদানপ্রদান সম্ভব হবে ।"

এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ভারতীয় নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত মুখপাত্র ক্যাপ্টেন ডি কে শর্মা বলেন, যারা স্বাধীন নৌ-গতিবিধিতে বিশ্বাস করে, সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনকে, বিশেষত রাষ্ট্রসংঘে সমুদ্র আইন বিষয়ক কনভেনশনকে (UNCLOS) সম্মান করে, তাদের একজোট হওয়া উচিত । ক্যাপ্টেন শর্মার আশা, বৃহস্পতিবারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের পর ছ’মাসের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া মালাবার মহড়ায় যোগ দেবে । যা ভারত, জাপান ও অ্যামেরিকার নৌবাহিনীর মধ্যে হয়ে থাকে ।

ক্যাপ্টেন শর্মা আরও বলেন, “এটা কাম্য এবং প্রতীক্ষিত পদক্ষেপ । অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ঠিক মাঝামাঝি অবস্থান করছে । এখানেই একটি বিশেষ অঞ্চলে চিনের আগ্রাসনের ঝুঁকি রয়েছে । ভারতীয় নৌসেনাকে এই অঞ্চলে কাজ করতে হলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে ।" তিনি মনে করিয়ে দেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উত্তর-পূর্বে জাপানের সঙ্গে, দক্ষিণ পূর্বে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এবং পূর্বে অ্যামেরিকার সঙ্গে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ নৌ-সমঝোতা রয়েছে । আর যেখানে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিন হাত বাড়াচ্ছে এবং ক্রমশ সক্রিয় হয়েছে, সেখানে ভারত-অস্ট্রেলিয়া বোঝাপড়াই যুক্তিপূর্ণ পদক্ষেপ ।"

অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা অফিসার আরও বলেন, "বাকি রয়েছে শুধু অস্ট্রেলিয়াকে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক মালাবার মহড়ায় আমন্ত্রণ জানানো এবং বিষয়টিকে কোয়াডের মাত্রা দেওয়া, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে এটি অবশ্যই কাম্য ।"

কোয়াড বা কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগে ভারত, জাপান ও অ্যামেরিকার পাশাপাশি অংশীদার অস্ট্রেলিয়াও । সর্বশেষ বৈঠক হয়েছে বিদেশমন্ত্রীদের স্তরে । কিন্তু ক্যানবেরার সঙ্গে বেজিংয়ের অতীত ঘনিষ্ঠতার দিকে তাকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে মালাবার মহড়ায় কয়েকবছর ডাকা হয়নি । কোরোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে তদন্ত চাওয়ার ফলে চিন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজ়িল্যান্ডকে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিচ্ছে, যার ফলে পরিস্থিতির এই বদল ।

এবিষয়ে নভদীপ পুরীর বক্তব্য, "অতীতে আমরা চিনের কাজকর্মের দিকে মনোযোগ দিচ্ছিলাম । কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, চিন অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমতো হেনস্থা করছে । আমরা দেখেছি, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কী হচ্ছে ? চিন হংকং, তাইওয়ান, ভিয়েতনামে শক্তি প্রদর্শন করছে । চিন অন্যান্য দেশের মধ্যে অংশদারী ত্বরান্বিত করতে অনুঘটকের কাজ করছে।”

ক্যানবেরা থেকে রোরি মেডকাফ বলেন, "আমরা দেখতে চাই, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের নৌসেনা, উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিমানবাহিনী একে অপরের ঘাঁটিতে যাচ্ছে, রসদ ও তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে । চিন ক্রমে সক্রিয় হচ্ছে এই অঞ্চলে । তখন এই পারস্পরিক সহযোগিতা আমাদের দুই গণতন্ত্রের স্বার্থের দিকে নজর রাখবে এবং শক্তির ভারসাম্য তৈরি করবে ।"

আজ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ রসদ ও তথ্য আদানপ্রদানের সমঝোতা রয়েছে প্রায় 36টি দেশের সঙ্গে । যার মধ্যে রয়েছে অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলের উপকূলবর্তী দেশগুলি । যে বড় শক্তিগুলির সঙ্গে এই বোঝাপড়া হয়নি, তার মধ্যে রয়েছে চিন ও পাকিস্তান ।

অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী মারিসা পেইনের জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সমুদ্র নিরাপত্তায় অস্ট্রেলিয়া-ভারতের পারস্পরিক সহযোগিতায় উপকূলরক্ষা বাহিনী এবং অসামরিক নৌপরিবহন সংস্থাগুলির মধ্যে যোগাযোগ দৃঢ় হবে এবং দু'দেশের নৌসেনা মধ্যে আদানপ্রদানও আরও সুদৃঢ় হবে ।"

দিল্লি, 5 জুন : ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার নৌ-ক্ষেত্রে সহযোগিতার মনোভাব এবং পারস্পরিক সহাবস্থানই দুই দেশের কূটনৈতিক মিত্রতার মূল বিষয় । গতকাল দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্কট মরিসনের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতির যে নথি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দায়বদ্ধতার কথাই বলা হয়েছে ।

এই ভিশন ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, "ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্য এই অঞ্চলে একটি মুক্ত, অন্তর্ভূক্তিমূলক নিয়মাবলী প্রতিষ্ঠা করা ।" তাৎপর্যপূর্ণভাবে, দক্ষিণ চিন সাগর এবং ভারত মহাসাগরে চিনের আগ্রাসনের দিকে নজর রেখে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই দেশের তরফেই রসদ আদানপ্রদানের একটি ব্যবস্থা হয়েছে । এর জেরে দুই দেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ আরও দৃঢ় হবে । দিল্লি ও ক্যানবেরা গত ছ’বছরে তাদের প্রতিরক্ষা মহড়ার সংখ্যা চারগুণ বাড়িয়েছে । যার মধ্যে অন্যতম নৌ-সেনার মহড়া ‘অজিনডেক্স’।

ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সার্বিক কৌশলগত বোঝাপড়ার বিষয়ে জারি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মিউচুয়াল লজিস্টিক্স সাপোর্ট (MLSA)-র মধ্য দিয়ে সামরিক মহড়ার সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে দু'পক্ষই সম্মত হয়েছে ।"

ক্যানবেরার প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার নভদীপ পুরী বলেন, "সার্বিক কৌশলগত বোঝাপড়া একটি বিশেষ সম্পর্ক তৈরি করে । যেখানে MLSA-র মাধ্যমে সামরিক আদানপ্রদানের পাশাপাশি কোয়াডও শক্তিশালী হবে । আমাদের এধরনের চুক্তি প্রত্যেক কোয়াড সদস্যের (জাপান, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া) সঙ্গে করা উচিত । এছাড়াও প্রতি দু-বছরে একবার বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্তরেও আলোচনা হবে । ভারত-অস্ট্রেলিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে অর্থপূর্ণ করে তোলার এটাও একটা অংশ ।"

২০১৬ সালে তাঁর সময়েই দু’দেশের মধ্যে একটি হোয়াইট শিপিং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল । MLSA-র মাধ্যমে দুই দেশই একে অন্যের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের সুযোগ পাবে, যার মধ্যে রয়েছে রিফুয়েলিং এবং সেনাকর্মীদের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা । এই ব্যবস্থার আরও উদ্দেশ্য হল, দ্বিপাক্ষিক মহড়ার মধ্য দিয়ে ভারতীয় নৌসেনা এবং রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা ।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্গত ন্যাশনাল সিকিওরিটি কলেজের প্রধান এবং "কনটেস্ট ফ র দা ইন্দো-প্যাসিফিক"-এর লেখক রোরি মেডকাফ বলেন, "ভারত মহাসাগরের দুটি প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়া ও ভারত । এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের নৌসেনা ও উপকূলরক্ষীবাহিনী একসঙ্গে কাজ করতে, প্রশিক্ষণ নিতে ও গোয়েন্দা তথ্যের আদানপ্রদান করতে পারবে । এর জেরে আমরা ভারত মহাসাগরের উপর নজরদারি করতে পারি । যাতে বেআইনিভাবে মাছ ধরা থেকে কোনও নৌ-শক্তির গতিবিধি সংক্রান্ত নানা তথ্য আদানপ্রদান সম্ভব হবে ।"

এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ভারতীয় নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত মুখপাত্র ক্যাপ্টেন ডি কে শর্মা বলেন, যারা স্বাধীন নৌ-গতিবিধিতে বিশ্বাস করে, সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনকে, বিশেষত রাষ্ট্রসংঘে সমুদ্র আইন বিষয়ক কনভেনশনকে (UNCLOS) সম্মান করে, তাদের একজোট হওয়া উচিত । ক্যাপ্টেন শর্মার আশা, বৃহস্পতিবারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের পর ছ’মাসের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া মালাবার মহড়ায় যোগ দেবে । যা ভারত, জাপান ও অ্যামেরিকার নৌবাহিনীর মধ্যে হয়ে থাকে ।

ক্যাপ্টেন শর্মা আরও বলেন, “এটা কাম্য এবং প্রতীক্ষিত পদক্ষেপ । অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ঠিক মাঝামাঝি অবস্থান করছে । এখানেই একটি বিশেষ অঞ্চলে চিনের আগ্রাসনের ঝুঁকি রয়েছে । ভারতীয় নৌসেনাকে এই অঞ্চলে কাজ করতে হলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে ।" তিনি মনে করিয়ে দেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উত্তর-পূর্বে জাপানের সঙ্গে, দক্ষিণ পূর্বে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এবং পূর্বে অ্যামেরিকার সঙ্গে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ নৌ-সমঝোতা রয়েছে । আর যেখানে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিন হাত বাড়াচ্ছে এবং ক্রমশ সক্রিয় হয়েছে, সেখানে ভারত-অস্ট্রেলিয়া বোঝাপড়াই যুক্তিপূর্ণ পদক্ষেপ ।"

অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা অফিসার আরও বলেন, "বাকি রয়েছে শুধু অস্ট্রেলিয়াকে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক মালাবার মহড়ায় আমন্ত্রণ জানানো এবং বিষয়টিকে কোয়াডের মাত্রা দেওয়া, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে এটি অবশ্যই কাম্য ।"

কোয়াড বা কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগে ভারত, জাপান ও অ্যামেরিকার পাশাপাশি অংশীদার অস্ট্রেলিয়াও । সর্বশেষ বৈঠক হয়েছে বিদেশমন্ত্রীদের স্তরে । কিন্তু ক্যানবেরার সঙ্গে বেজিংয়ের অতীত ঘনিষ্ঠতার দিকে তাকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে মালাবার মহড়ায় কয়েকবছর ডাকা হয়নি । কোরোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে তদন্ত চাওয়ার ফলে চিন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজ়িল্যান্ডকে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিচ্ছে, যার ফলে পরিস্থিতির এই বদল ।

এবিষয়ে নভদীপ পুরীর বক্তব্য, "অতীতে আমরা চিনের কাজকর্মের দিকে মনোযোগ দিচ্ছিলাম । কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, চিন অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমতো হেনস্থা করছে । আমরা দেখেছি, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কী হচ্ছে ? চিন হংকং, তাইওয়ান, ভিয়েতনামে শক্তি প্রদর্শন করছে । চিন অন্যান্য দেশের মধ্যে অংশদারী ত্বরান্বিত করতে অনুঘটকের কাজ করছে।”

ক্যানবেরা থেকে রোরি মেডকাফ বলেন, "আমরা দেখতে চাই, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের নৌসেনা, উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিমানবাহিনী একে অপরের ঘাঁটিতে যাচ্ছে, রসদ ও তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে । চিন ক্রমে সক্রিয় হচ্ছে এই অঞ্চলে । তখন এই পারস্পরিক সহযোগিতা আমাদের দুই গণতন্ত্রের স্বার্থের দিকে নজর রাখবে এবং শক্তির ভারসাম্য তৈরি করবে ।"

আজ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ রসদ ও তথ্য আদানপ্রদানের সমঝোতা রয়েছে প্রায় 36টি দেশের সঙ্গে । যার মধ্যে রয়েছে অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলের উপকূলবর্তী দেশগুলি । যে বড় শক্তিগুলির সঙ্গে এই বোঝাপড়া হয়নি, তার মধ্যে রয়েছে চিন ও পাকিস্তান ।

অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী মারিসা পেইনের জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সমুদ্র নিরাপত্তায় অস্ট্রেলিয়া-ভারতের পারস্পরিক সহযোগিতায় উপকূলরক্ষা বাহিনী এবং অসামরিক নৌপরিবহন সংস্থাগুলির মধ্যে যোগাযোগ দৃঢ় হবে এবং দু'দেশের নৌসেনা মধ্যে আদানপ্রদানও আরও সুদৃঢ় হবে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.