ETV Bharat / international

সুপার পাওয়ার হবে চিন, ভারত-চিন সীমানা উত্তেজনা চরমেই, বলছে মার্কিন রিপোর্ট

author img

By

Published : Apr 14, 2021, 1:54 PM IST

Updated : Apr 14, 2021, 2:21 PM IST

গত বছরের মে মাসে ভারত-চিন সীমান্তে দুদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ভয়ঙ্কর মারামারি পর দুদেশের সীমানা বিতর্ক আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে ৷ ফেব্রুয়ারি মাসে বার বার বৈঠকের পর দুই দেশই নিজের সেনাবাহিনী আর জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছে ৷ আপাত দৃষ্টিতে শান্তির পরিস্থিতি ফিরেছে মনে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত একটি রিপোর্ট কিন্তু উল্টো কথা বলছে ৷ রয়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীও ৷

ভারত-চিন সীমানার উত্তেজনা চরমেই
ভারত-চিন সীমানার উত্তেজনা চরমেই

নিউদিল্লি, 14 এপ্রিল : লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল থেকে বাহিনী সরালেও ভারত-চিন সীমানা নিয়ে উত্তেজনার পারদ আগের মতোই তুঙ্গে ৷ কারণ চিন তার ক্রমবর্ধমান শক্তিবৃদ্ধি আর দুই দেশের মধ্যে বিতর্কিত অঞ্চলগুলির উপর অধিকার পুরোপুরি ছেড়ে দেয়নি ৷ এমনকি ওই অঞ্চলের প্রতিবেশীদের চুপচাপ বেজিংয়ের কথা শুনতে বাধ্য করছে ৷ এমনই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেলিজেন্স সংস্থা ৷

  • ভারত-চিন সীমানা-কথা

এই দপ্তরের অ্যানুয়াল থ্রেট এসেসমেন্ট নামক রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, '1975 সালের পর ভারত-চিনের বিতর্কিত সীমারেখায় এরকম ভয়াবহ মারদাঙ্গা হয়েছে 2020-র মে মাসে ৷ এর পর চিন তাদের দখল করা জায়গাগুলো থেকে সেনা সরিয়ে নিলেও দুদেশের সীমানা বিতর্ক এখনও চরমে ৷ ফেব্রুয়ারির মাঝে ঘন ঘন বৈঠকের পর দুপক্ষই ওই অঞ্চলের বিতর্কিত জায়গার কিছু কিছু অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী আর জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছে ৷'

  • বেজিংয়ের শক্তিবৃদ্ধ

বেজিং তার বাড়তে থাকা সামরিক শক্তির সঙ্গে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি আর কূটনৈতিক পরিকাঠামোকে একত্রিত করছে ৷ তাদের পছন্দের অঞ্চলগুলি আর সেখানে তাদের অগ্রাধিকারকে সুরক্ষিত করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ এর জন্য প্রয়োজনীয় খরচ তুলতে আন্তর্জাতিক স্তরে ওয়াশিংটনের পেছনে ঘুরছে ৷

দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের শত্রু দাবিদারদের ভয় দেখানোর কাজটা তারা চালিয়ে যাবে ৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিবদমান জায়গাগুলোতে তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে তাদের বিমান, নৌ আর সমুদ্র সংক্রান্ত আইন গায়ের জোরে বলবৎ করতে চাইছে ৷ একই ভাবে পূর্ব চিন সাগরে জাপানের ওপরও চাপ সৃষ্টি করছে ৷

  • বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী উপ-মহাদেশ

বিশ্বে সুপার পাওয়ার হওয়ার লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাবে চিন ৷ যে অঞ্চলগুলি তার নিজের বলে মনে করছে, সেগুলিকে রক্ষা করা, সেখানে স্থানীয় বিষয়ে নিজের প্রভাব কার্যকর করবে ৷ আর এসব করতে পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সামরিক বাহিনী তৈরি করবে তারা ৷ আন্তর্জাতিক নিয়ম আর সম্পর্কগুলোকে কোনও পাত্তাই দেবে না তারা ৷ চিনের সামরিক বাহিনী তৈরির অঙ্গীকারের মধ্যে বহু বছর ধরে পরিকল্পনা চলছে ৷ সব দিক দিয়ে সামরিকবাহিনীকে ত্রুটিমুক্ত করার পদক্ষেপ করে চলেছে তারা ৷

আরও পড়ুন: ফুকুশিমার নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের লক্ষ লক্ষ টন বিষাক্ত জল ছাড়বে জাপান, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়

  • নিউক্লিয়ার ফোর্স

এমনকি চিন বিশাল আর ক্রমবর্ধমান ক্ষমতাসম্পন্ন নিউক্লিয়ার মিসাইল ফোর্স তৈরি করছে, যা আরও বেশি স্থায়ী, আর নানান দিক রয়েছে, তা আগের থেকেও বেশি হুঁশিয়ার ৷ আঞ্চলিক শক্তিবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে আর আন্তর্মহাদেশীয় জায়গায় দ্বিতীয়-আক্রমণ হানতে সক্ষম ৷

এমন ভাবে নিউক্লিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারের দ্রুত প্রসারণ, নানাদিক দিয়ে তাকে শক্তিশালী করার নজির নেই চিনের ইতিহাসে ৷ আগামী দশকের মধ্য়ে নিউক্লিয়ার শক্তিকে অন্ততপক্ষে দ্বিগুণ করে তোলা আর নিউক্লিয়ার ক্ষেত্রকে ত্রিমুখী করে তুলছে তারা ৷ বিশ্বের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে ঢুকতে একেবারেই নারাজ সুপার-পাওয়ার ৷ কারণ এতে অস্ত্র আধুনিকীকরণ করার প্রক্রিয়া আটকে যাবে ৷ আমেরিকা বা রাশিয়ার নিউক্লিয়ার আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে যা হয়েছে ৷

  • ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ

যদিও ভারতের আরেক বিতর্কিত প্রতিবেশী পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাধার সম্ভাবনা কম, তবে দুদেশের মধ্যে সঙ্কট দিনে দিনে আরও বাড়বে ৷ আসলে শক্তিবৃদ্ধির চাকাটা ঠিক কোন দিকে ঘুরছে, সে নিয়ে একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পাকিস্তানের সঙ্গে যে কোনও রকম ঝামেলার প্রত্যুত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সামরিক ভাবে আরও বেশি সক্রিয় হয়েছে ভারত ৷ সীমানা নিয়ে ঝামেলা বাড়লে নিউক্লিয়ার-অস্ত্রভাণ্ডার সম্পন্ন দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাড়ার আশঙ্কাও বাড়বে ৷ কাশ্মীরের অস্থির পরিস্থিতিকে কাবু করার ক্ষেত্রে আর বিভিন্ন জায়গায় ভারতের সামরিক আক্রমণ সেই সম্ভাবনার কিছু খণ্ডচিত্র মাত্র ৷

  • আফগানিস্তান নিয়ে

তালিবান গোষ্ঠী এই যুদ্ধক্ষেত্রের সুযোগটাকে কাজে লাগাবে ৷ জোট সরকার যদি সমর্থন তুলে নেয় এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে আফগান সরকার চেষ্টা করবে তালিবানদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ৷ তবে এই যুদ্ধক্ষেত্রে কাবুল ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে আর তালিবান গোষ্ঠী নিশ্চিত যে তারাই সামরিক শক্তিতে জয়ী হবে ৷

সব দিক দিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী দেশ হওয়ার পথে চিন, কার্যত তাকেই মান্যতা দিল এই রিপোর্ট ৷

নিউদিল্লি, 14 এপ্রিল : লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল থেকে বাহিনী সরালেও ভারত-চিন সীমানা নিয়ে উত্তেজনার পারদ আগের মতোই তুঙ্গে ৷ কারণ চিন তার ক্রমবর্ধমান শক্তিবৃদ্ধি আর দুই দেশের মধ্যে বিতর্কিত অঞ্চলগুলির উপর অধিকার পুরোপুরি ছেড়ে দেয়নি ৷ এমনকি ওই অঞ্চলের প্রতিবেশীদের চুপচাপ বেজিংয়ের কথা শুনতে বাধ্য করছে ৷ এমনই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেলিজেন্স সংস্থা ৷

  • ভারত-চিন সীমানা-কথা

এই দপ্তরের অ্যানুয়াল থ্রেট এসেসমেন্ট নামক রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, '1975 সালের পর ভারত-চিনের বিতর্কিত সীমারেখায় এরকম ভয়াবহ মারদাঙ্গা হয়েছে 2020-র মে মাসে ৷ এর পর চিন তাদের দখল করা জায়গাগুলো থেকে সেনা সরিয়ে নিলেও দুদেশের সীমানা বিতর্ক এখনও চরমে ৷ ফেব্রুয়ারির মাঝে ঘন ঘন বৈঠকের পর দুপক্ষই ওই অঞ্চলের বিতর্কিত জায়গার কিছু কিছু অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী আর জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছে ৷'

  • বেজিংয়ের শক্তিবৃদ্ধ

বেজিং তার বাড়তে থাকা সামরিক শক্তির সঙ্গে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি আর কূটনৈতিক পরিকাঠামোকে একত্রিত করছে ৷ তাদের পছন্দের অঞ্চলগুলি আর সেখানে তাদের অগ্রাধিকারকে সুরক্ষিত করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ এর জন্য প্রয়োজনীয় খরচ তুলতে আন্তর্জাতিক স্তরে ওয়াশিংটনের পেছনে ঘুরছে ৷

দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের শত্রু দাবিদারদের ভয় দেখানোর কাজটা তারা চালিয়ে যাবে ৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিবদমান জায়গাগুলোতে তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে তাদের বিমান, নৌ আর সমুদ্র সংক্রান্ত আইন গায়ের জোরে বলবৎ করতে চাইছে ৷ একই ভাবে পূর্ব চিন সাগরে জাপানের ওপরও চাপ সৃষ্টি করছে ৷

  • বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী উপ-মহাদেশ

বিশ্বে সুপার পাওয়ার হওয়ার লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাবে চিন ৷ যে অঞ্চলগুলি তার নিজের বলে মনে করছে, সেগুলিকে রক্ষা করা, সেখানে স্থানীয় বিষয়ে নিজের প্রভাব কার্যকর করবে ৷ আর এসব করতে পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সামরিক বাহিনী তৈরি করবে তারা ৷ আন্তর্জাতিক নিয়ম আর সম্পর্কগুলোকে কোনও পাত্তাই দেবে না তারা ৷ চিনের সামরিক বাহিনী তৈরির অঙ্গীকারের মধ্যে বহু বছর ধরে পরিকল্পনা চলছে ৷ সব দিক দিয়ে সামরিকবাহিনীকে ত্রুটিমুক্ত করার পদক্ষেপ করে চলেছে তারা ৷

আরও পড়ুন: ফুকুশিমার নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের লক্ষ লক্ষ টন বিষাক্ত জল ছাড়বে জাপান, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়

  • নিউক্লিয়ার ফোর্স

এমনকি চিন বিশাল আর ক্রমবর্ধমান ক্ষমতাসম্পন্ন নিউক্লিয়ার মিসাইল ফোর্স তৈরি করছে, যা আরও বেশি স্থায়ী, আর নানান দিক রয়েছে, তা আগের থেকেও বেশি হুঁশিয়ার ৷ আঞ্চলিক শক্তিবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে আর আন্তর্মহাদেশীয় জায়গায় দ্বিতীয়-আক্রমণ হানতে সক্ষম ৷

এমন ভাবে নিউক্লিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারের দ্রুত প্রসারণ, নানাদিক দিয়ে তাকে শক্তিশালী করার নজির নেই চিনের ইতিহাসে ৷ আগামী দশকের মধ্য়ে নিউক্লিয়ার শক্তিকে অন্ততপক্ষে দ্বিগুণ করে তোলা আর নিউক্লিয়ার ক্ষেত্রকে ত্রিমুখী করে তুলছে তারা ৷ বিশ্বের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে ঢুকতে একেবারেই নারাজ সুপার-পাওয়ার ৷ কারণ এতে অস্ত্র আধুনিকীকরণ করার প্রক্রিয়া আটকে যাবে ৷ আমেরিকা বা রাশিয়ার নিউক্লিয়ার আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে যা হয়েছে ৷

  • ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ

যদিও ভারতের আরেক বিতর্কিত প্রতিবেশী পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাধার সম্ভাবনা কম, তবে দুদেশের মধ্যে সঙ্কট দিনে দিনে আরও বাড়বে ৷ আসলে শক্তিবৃদ্ধির চাকাটা ঠিক কোন দিকে ঘুরছে, সে নিয়ে একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পাকিস্তানের সঙ্গে যে কোনও রকম ঝামেলার প্রত্যুত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সামরিক ভাবে আরও বেশি সক্রিয় হয়েছে ভারত ৷ সীমানা নিয়ে ঝামেলা বাড়লে নিউক্লিয়ার-অস্ত্রভাণ্ডার সম্পন্ন দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাড়ার আশঙ্কাও বাড়বে ৷ কাশ্মীরের অস্থির পরিস্থিতিকে কাবু করার ক্ষেত্রে আর বিভিন্ন জায়গায় ভারতের সামরিক আক্রমণ সেই সম্ভাবনার কিছু খণ্ডচিত্র মাত্র ৷

  • আফগানিস্তান নিয়ে

তালিবান গোষ্ঠী এই যুদ্ধক্ষেত্রের সুযোগটাকে কাজে লাগাবে ৷ জোট সরকার যদি সমর্থন তুলে নেয় এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে আফগান সরকার চেষ্টা করবে তালিবানদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ৷ তবে এই যুদ্ধক্ষেত্রে কাবুল ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে আর তালিবান গোষ্ঠী নিশ্চিত যে তারাই সামরিক শক্তিতে জয়ী হবে ৷

সব দিক দিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী দেশ হওয়ার পথে চিন, কার্যত তাকেই মান্যতা দিল এই রিপোর্ট ৷

Last Updated : Apr 14, 2021, 2:21 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.