ওয়াশিংটন, 22 ফেব্রুয়ারি: অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরে CAA-NRC নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে । হোয়াইট হাউসের তরফে একটি বার্তায় শুক্রবার উঠে এল একথাই ৷ গণতন্ত্র রক্ষা নিয়েও নরেন্দ্র মোদিকে করা হতে পারে প্রশ্ন, এমনই জানা গিয়েছে ৷
2 দিন বাদেই সস্ত্রীক ভারত সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ তার আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প সফর নিয়ে সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিশিয়াল যাবতীয় তথ্য ভাগ করে নিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে, উত্তর দিলেন তাঁদের প্রশ্নেরও ৷ ট্রাম্পের সফরসূচি ও তার সফরসঙ্গী কারা হবে তা জানানোর পরই ওঠে আলোচনার প্রসঙ্গ ৷
হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উপর জোর দেবেন ৷ এই সম্পর্ক গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, কৌশলগত স্বার্থ ও দুই দেশের মানুষের মধ্যে স্থায়ী বন্ধনের উপর নির্ভরশীল ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো ৷ ট্রাম্পের এই সফরে বেশ কয়েকটি বিষয়ে জোর দেওয়া হবে ৷ এরমধ্যে অর্থনীতি ও শক্তিক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে ৷ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়েও হবে আলোচনা ৷
সাংবাদিকরা ভারতে CAA-NRC নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করলে তার জবাবে বলা হয়, গণতন্ত্র ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে জনসমক্ষে এবং মুখোমুখি আলোচনাতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলবেন ট্রাম্প ৷ তিনি এই বিষয়ে কথা বলবেন, বিশেষত ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে, যা প্রশাসনের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ৷ আমরা ভারতের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে সম্মান করি ৷ ভারতের সংবিধানেই ধর্মীয় স্বাধীনতা, সকল ধর্মকে সমান অধিকার ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উল্লেখ রয়েছে ৷ বর্তমানে যেসব বিষয় নিয়ে চর্চা চলছে, তার কিছু ঘটনা নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা হলে তিনি এই বিষয়ে কথা বলবেন বলেই আশা করা হচ্ছে ৷
ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে অ্যামেরিকার অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে বলা হয়, অ্যামেরিকা বরাবরই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলা উত্তেজনা হ্রাস করার উপর জোর দিয়েছে ৷ ট্রাম্প দুই দেশকে তাঁদের পার্থক্য নিরসনে পরস্পরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে ৷
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয় দেশকেই নিয়ন্ত্রণ সীমানায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করবেন এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে এমন কোনও প্রতিক্রিয়া বা বক্তব্য থেকে বিরত থাকবেন, উল্লেখ করা হয়েছে এমনই ।
ট্রাম্পের সফরে যে বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়া হবে, সেই বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথমত জোর দেওয়া হবে অর্থনীতি ও শক্তিক্ষেত্রে ৷ এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি 2017 সালে যে স্ট্র্যাটেজিক এনার্জি পার্টনারশিপ চালু করেছিলেন তা লভ্যাংশ আনতে সাহায্য করেছে । শক্তিসুরক্ষা উন্নত হয়েছে । শক্তির উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করেছে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে অপরিশোধিত তেল, LNG এবং কয়লার আমদানির পথও সহজতর করেছে এই চুক্তি । দ্বিতীয়ত, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে জোর দেওয়া হবে ৷ দুই দেশই সন্ত্রাসবাদ রুখতে উদ্যত ৷ অ্যামেরিকা ভারতকে ততটা শক্তিশালী দেখতে চায়, যার ফলে সামরিক বাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে সক্ষম ৷’’
ট্রাম্পের সফরসূচি সম্পর্কে বলা হয় যে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী-কন্যা ছাড়াও সফরে আসবেন 12 জনের সরকারি প্রতিনিধি দল ৷ সোমবার আমেদাবাদে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে 22 কিমি দীর্ঘ পথ পেরিয়ে পৌঁছাবেন সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়ামে ৷ আগ্রায় তাজমহল দেখতে যাবেন সস্ত্রীক ট্রাম্প, সঙ্গী হতে পারেন প্রধানমন্ত্রীও ৷ রাতে দিল্লিতে পৌঁছাবেন তাঁরা ৷ পরদিন সকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি ৷ ভারতের রাষ্ট্রপতি ও দুতাবাসের কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৷ রাষ্ট্রপতি ভবনে সরকারি নৈশভোজে যোগ দেবেন তাঁরা ৷