ওয়াশিংটন , ১৪ ডিসেম্বর : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা ইমপিচমেন্টের দাবিতে সিলমোহর । মার্কিন বিচারবিভাগীয় কমিটি ডেমক্র্যাটদের এই দাবিকে স্বীকৃতি জানাল । ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব মার্কিন আইনজীবীদের সংগঠনে ২৩-১৭ ভোটে পাশ হয়ে গেল । যার অর্থ খুব শীঘ্রই ইমপিচমেন্টের মুখে পড়তে চলেছেন প্রেসিডেন্ট । মার্কিন ইতিহাসে তিনি হতে চলেছেন চতুর্থ ব্যক্তি যাকে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে । বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ঘোষণা থাকলেও পক্ষ-বিপক্ষের তরজার জেরে শুক্রবার ইমপিচমেন্টের বিষয়টিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় ।
বিতর্কেক সূত্রপাত বছর খানেক আগে । ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ফোন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প । অভিযোগ ছিল , ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন এবং তাঁর ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প ।
হান্টার বাইডেন ইউক্রেনের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পনির বোর্ড সদস্য ছিলেন । সেসময় তাঁর বাবা জো ছিলেন অ্যামেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট । ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ফোন করে চাপ দেন, কী ভাবে হান্টারকে নিয়োগ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করার জন্য । তা না করলে ইউক্রেনকে যে পরিমাণ সামরিক সাহায্য অ্যামেরিকা দিচ্ছে তা বন্ধ করার হুমকিও নাকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প । বিপুল আর্থিক সাহায্য থেকে বঞ্চিত করার বিষয়ে ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতা ও পদমর্যাদার ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ ডেমক্র্যাটদের ।
বিতর্ক এখানেই শেষ নয় । নিজের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলানিকে এই কাজে ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ । ভোট যত এগিয়ে আসছে বিষয়টি নিয়ে ততই সুর চড়াচ্ছে ডেমক্র্যাটরা । পরিস্থিতি ক্রমেই ট্রাম্পের বিপক্ষে যাওয়ায় মুখ খুলেছেন তিনিও । কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে অনেকটাই ধাক্কা খেতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ।
প্রকাশ্য শুনানির দাবি ছিল ডেমক্র্যাটদের । সেই বিষয়েও সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে । যদিও ট্রাম্পের অপরাধ ইমপিচমেন্ট করার মত কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে । মার্কিন সংবিধান অনুসারে দেশদ্রোহী বা ঘুষ বা উচ্চতর কোনও অপরাধ করলে ইমপিচমেন্টের মুখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে । তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অপরাধ কতটা গুরুতর তা মোটের উপর স্পষ্ট নয় । এমনকি উচ্চতর অপরাধ বলতে কী সেটাও স্পষ্ট নয় সংবিধানে । যদিও পরিস্থিতি যা তাতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট শুরু করা কার্যত সময়ের অপেক্ষা । এখন দেখার পূর্বসূরিদের পথ অনুসরণ করে ট্রাম্প কি পদত্যাগ করবেন না শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন ।