ETV Bharat / international

কোথাও স্বজাতিভক্ষণ, কোথাও ডিনার টেবিলে মৃত, অদ্ভুত সব সৎকার

ধর্ম আলাদা হলে তো বটেই, আসল কথা এলাকা, দেশ, মহাদেশ বদলালেই বদলায় সৎকার পদ্ধতি ৷ তিব্বতের আকাশ-সৎকারের সঙ্গে মিল নেই ভাইকিং সর্দারের শেষকৃত্যের ৷ আরও আলাদা স্বজাতিভক্ষণ !

strange-all-funerals-rituals
strange-all-funerals-rituals
author img

By

Published : Oct 7, 2020, 7:01 AM IST

গোটা পৃথিবীতেই শেষকৃত্য নিয়ে সংবেদনশীল মানুষ ৷ নশ্বর জীবনের গুরুত্ব যতখানি, অনেক ক্ষেত্রে তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শেষ কাজ ৷ মৃত্যু চির রহস্যময় বলেই হয়তো ৷ তাই ধর্ম আলাদা হলে তো বটেই, আসল কথা এলাকা, দেশ, মহাদেশ আলাদা হলেই বদলে যায় সৎকারের পদ্ধতি ৷ যার মধ্যে এমন বহু প্রথা রয়েছে যা জানলে অবাক হতে হয় ৷

ভাইকিং সর্দারের সঙ্গে 'সতীদাহ'

আরব ভ্রমণকারী পরিব্রাজক আহমেদ ইবন ফাদলানের বর্ণনা থেকে জানা যায় স্ক্যান্ডেনেভিয়ার বিখ্যাত ভাইকিং জাতির সর্দারের শেষকৃত্য ছিল অদ্ভুত ৷ ভাইকিং সর্দারের মৃত্যু হলে দেহ দশদিন অবধি একটি অস্থায়ী সমাধির উপর রাখা থাকত ৷ মরদেহ পাহারায় থাকত একজন দাসী ৷ এই দাসীকেই সর্দারের সঙ্গে যেতে হবে একেবারে পরজন্মে ৷ সর্দারের মৃতদেহের সঙ্গে জীবিত দাসীকে একটি লম্বা আকৃতির কাঠের নৌকায় তুলে দেওয়া হত ৷ ওই নৌকায় দেওয়া হত সোনা-রূপা ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রীও ৷ এরপর নৌকোটিতে আগুন ধরিয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হত সমুদ্রে ৷ কতকটা যেন ভাসমান সতীদাহ !

নতুন পোশাকে ডিনার টেবিলে মৃত

মাদাগাস্কারে প্রতি পাঁচ থেকে সাত বছর অন্তর অদ্ভুত প্রথা পালিত হয় ৷ বিশেষ দিনে কবর খুঁড়ে মৃত ব্য়ক্তির দেহাবশেষ বের করে আনেন নিকটাত্মীয়রা ৷ মৃতকে নতুন পোশাক পরানো হয় ৷ ডিনার টেবিলে পারিবারিক ভোজেও তাকে বসানো হয় ৷ মৃত ব্য়ক্তিকে নিয়ে গানের তালে নাচতেও দেখা যায় আত্মীয়দের ৷ এমন পারিবারিক পুনর্মিলন উৎসব ইন্দোনেশিয়ার একটি জনজাতির মধ্যেও দেখা যায় ৷

তিব্বতের আকাশ-সৎকার

তিব্বত মালভূমির গড় উচ্চতা 16 হাজার ফুট ৷ যে কারণে এই অঞ্চলকে পৃথিবীর ছাদ বলা হয় ৷ তিব্বতের পাথুরে ভূমিতে মৃতকে কবর দেওয়া অতি কঠিন কাজ ৷ তাই এখানকার অধিবাসীদের সৎকার পদ্ধতিও আলাদা ৷ তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মৃত্যুর পর মরদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে শকুন জাতীয় পাখিদের খাইয়ে দেয় ৷ মানুষের মরদেহ খায় আকাশে ওড়া পাখি, এই কারণেই সৎকারের নাম আকাশ-সৎকার !

স্বজাতিভক্ষণ

ভেনিজুয়েলা ও ব্রাজিলের ইয়ানোমামো আদিবাসীদের মধ্যে এক কুৎসিত প্রথা প্রচলিত ছিল ৷ এই সমাজে কেউ মারা গেলে তার মাংস খেত আত্মীয়রা ৷ বিশ্বাস করা হত, মৃত ব্যক্তির মাংস খাওয়ার মাধ্যমে ওই ব্যক্তির সব ভালো গুণ, জ্ঞান, সাহস, বুদ্ধি যে মাংস খাচ্ছে তার মধ্যে সঞ্চারিত হবে ৷ যেন বা মৃতকে নিজের মধ্যে ধারণ করবে জীবিত ৷ নৃতাত্ত্বিকদের মতো, স্বজাতিভক্ষণ অতি প্রাচীনকালে কিছু জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত ছিল ৷ যদিও অনেকের দাবি, দক্ষিণ অ্যামেরিকা ও পাপুয়া নিউ গিনির কিছু অঞ্চলে আজও এই প্রথার অস্তিত্ব রয়েছে ৷

দেহ সংরক্ষণ

এই "সৎকার" পদ্ধতি জানা, তবু কুয়াশাময় ! এখানে সৎকার মানে সংরক্ষণ ৷ প্রাচীন মিশরের ফারাওদের মরদেহ মমি করে সমাহিত করা হত ৷ এই পদ্ধতিতে প্রথমেই দেহের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে ফেলা হত ৷ এরপর দেহের আর্দ্রতা অপসারিত করা হত ৷ সব শেষে লম্বা আকৃতির লিনেনের ওষুধ-কাপড়ে মুড়ে ফেলা হত মৃতের গোটা দেহ ৷ নৃতাত্বিকেরা হাজার বছর পরেও যে দেহ পেয়েছেন অবিকল অবস্থায় ৷

গোটা পৃথিবীতেই শেষকৃত্য নিয়ে সংবেদনশীল মানুষ ৷ নশ্বর জীবনের গুরুত্ব যতখানি, অনেক ক্ষেত্রে তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শেষ কাজ ৷ মৃত্যু চির রহস্যময় বলেই হয়তো ৷ তাই ধর্ম আলাদা হলে তো বটেই, আসল কথা এলাকা, দেশ, মহাদেশ আলাদা হলেই বদলে যায় সৎকারের পদ্ধতি ৷ যার মধ্যে এমন বহু প্রথা রয়েছে যা জানলে অবাক হতে হয় ৷

ভাইকিং সর্দারের সঙ্গে 'সতীদাহ'

আরব ভ্রমণকারী পরিব্রাজক আহমেদ ইবন ফাদলানের বর্ণনা থেকে জানা যায় স্ক্যান্ডেনেভিয়ার বিখ্যাত ভাইকিং জাতির সর্দারের শেষকৃত্য ছিল অদ্ভুত ৷ ভাইকিং সর্দারের মৃত্যু হলে দেহ দশদিন অবধি একটি অস্থায়ী সমাধির উপর রাখা থাকত ৷ মরদেহ পাহারায় থাকত একজন দাসী ৷ এই দাসীকেই সর্দারের সঙ্গে যেতে হবে একেবারে পরজন্মে ৷ সর্দারের মৃতদেহের সঙ্গে জীবিত দাসীকে একটি লম্বা আকৃতির কাঠের নৌকায় তুলে দেওয়া হত ৷ ওই নৌকায় দেওয়া হত সোনা-রূপা ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রীও ৷ এরপর নৌকোটিতে আগুন ধরিয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হত সমুদ্রে ৷ কতকটা যেন ভাসমান সতীদাহ !

নতুন পোশাকে ডিনার টেবিলে মৃত

মাদাগাস্কারে প্রতি পাঁচ থেকে সাত বছর অন্তর অদ্ভুত প্রথা পালিত হয় ৷ বিশেষ দিনে কবর খুঁড়ে মৃত ব্য়ক্তির দেহাবশেষ বের করে আনেন নিকটাত্মীয়রা ৷ মৃতকে নতুন পোশাক পরানো হয় ৷ ডিনার টেবিলে পারিবারিক ভোজেও তাকে বসানো হয় ৷ মৃত ব্য়ক্তিকে নিয়ে গানের তালে নাচতেও দেখা যায় আত্মীয়দের ৷ এমন পারিবারিক পুনর্মিলন উৎসব ইন্দোনেশিয়ার একটি জনজাতির মধ্যেও দেখা যায় ৷

তিব্বতের আকাশ-সৎকার

তিব্বত মালভূমির গড় উচ্চতা 16 হাজার ফুট ৷ যে কারণে এই অঞ্চলকে পৃথিবীর ছাদ বলা হয় ৷ তিব্বতের পাথুরে ভূমিতে মৃতকে কবর দেওয়া অতি কঠিন কাজ ৷ তাই এখানকার অধিবাসীদের সৎকার পদ্ধতিও আলাদা ৷ তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মৃত্যুর পর মরদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে শকুন জাতীয় পাখিদের খাইয়ে দেয় ৷ মানুষের মরদেহ খায় আকাশে ওড়া পাখি, এই কারণেই সৎকারের নাম আকাশ-সৎকার !

স্বজাতিভক্ষণ

ভেনিজুয়েলা ও ব্রাজিলের ইয়ানোমামো আদিবাসীদের মধ্যে এক কুৎসিত প্রথা প্রচলিত ছিল ৷ এই সমাজে কেউ মারা গেলে তার মাংস খেত আত্মীয়রা ৷ বিশ্বাস করা হত, মৃত ব্যক্তির মাংস খাওয়ার মাধ্যমে ওই ব্যক্তির সব ভালো গুণ, জ্ঞান, সাহস, বুদ্ধি যে মাংস খাচ্ছে তার মধ্যে সঞ্চারিত হবে ৷ যেন বা মৃতকে নিজের মধ্যে ধারণ করবে জীবিত ৷ নৃতাত্ত্বিকদের মতো, স্বজাতিভক্ষণ অতি প্রাচীনকালে কিছু জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত ছিল ৷ যদিও অনেকের দাবি, দক্ষিণ অ্যামেরিকা ও পাপুয়া নিউ গিনির কিছু অঞ্চলে আজও এই প্রথার অস্তিত্ব রয়েছে ৷

দেহ সংরক্ষণ

এই "সৎকার" পদ্ধতি জানা, তবু কুয়াশাময় ! এখানে সৎকার মানে সংরক্ষণ ৷ প্রাচীন মিশরের ফারাওদের মরদেহ মমি করে সমাহিত করা হত ৷ এই পদ্ধতিতে প্রথমেই দেহের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে ফেলা হত ৷ এরপর দেহের আর্দ্রতা অপসারিত করা হত ৷ সব শেষে লম্বা আকৃতির লিনেনের ওষুধ-কাপড়ে মুড়ে ফেলা হত মৃতের গোটা দেহ ৷ নৃতাত্বিকেরা হাজার বছর পরেও যে দেহ পেয়েছেন অবিকল অবস্থায় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.