ETV Bharat / international

কোভিড–১৯ প্রকোপের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইকুয়েডর

author img

By

Published : Apr 16, 2020, 6:56 PM IST

বর্তমানে ইকুয়েডরের অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর যে সেখানে মৃতদেহের সমাধির জন্য কফিন মিলছে না । ১.৭ কোটি জনবসতির দেশ ইকুয়েডরের মৃত্যুসংখ্যার এই আধিক্যের নেপথ্যে সঙ্গত কারণ রয়েছে ।

ECUADOR
ইকুয়েডর

কিউটো, 16 এপ্রিল: সঠিক সময়ে কোভিড–১৯ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়াই ইকুয়েডরকে ক্রমশ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে । দেশের নাগরিকরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশে গুরুত্ব দেননি । পরিণামে দেশ বর্তমানে বড়সড় স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছে । পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে ।

বর্তমানে দেশটির অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর যে সেখানে মৃতদেহের সমাধির জন্য কফিন মিলছে না । দেহগুলিকে রাস্তার ধারে ফেলে রাখা হচ্ছে পচার জন্য । ভাইরাসের উৎসকেন্দ্র গুয়াইয়াকুইলের অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর । ১.৭ কোটি জনবসতির দেশ ইকুয়েডরের মৃত্যুসংখ্যার এই আধিক্যের নেপথ্যে সঙ্গত কারণ রয়েছে । স্পেনের সঙ্গে ইকুয়েডরের সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত । এমনকী, ইকুয়েডরের সরকারি ভাষাও স্প্যানিশ । ইকুয়েডরের নাগরিকরা সাধারণত স্পেন এবং ইট্যালিতে যান আর এই দুই দেশই গোটা পৃথিবীতে বর্তমানে নভেল কোরোনা ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে । ২৯ ফেব্রুয়ারি স্পেন থেকে ৭০ বছর বয়সি এক মহিলা গুয়াইয়াকুইলে আসেন । কোরোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁকে কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়। সংস্পর্শে আসা ৮০ জনকে চিহ্নিত করে কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয় । কিন্তু স্পেনে এই ভাইরাসের প্রকোপ হওয়ার পর সেখানে পাঠরত কলেজ পড়ুয়ারা ইকুয়েডরে ফিরে আসেন । ঠিক সেই সময়ই স্পেন ফেরত পড়ুয়াদের কেউ কেউ গুয়াইয়াকুইলের কিছু অনুষ্ঠান এবং বিয়েতে যোগ দেন । এর ফলে তৈরি হয় অতি–সংক্রমণ অর্থাৎ ‘সুপার–স্প্রেড’ পরিস্থিতি । সংক্রমণ দ্রুত দেশের অভিজাত এলাকা থেকে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল বসতিগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে ।

ইকুয়েডরের সরকার দেশের নাগরিকদের নির্দেশ দিয়েছিল, সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে বাড়িতেই থাকতে। নাগরিকদের সুবিধার্থে সরকার ঘোষণা করেছিল যে, প্রতি পরিবারকে মাসে ৬০ মার্কিন ডলার করে দেওয়া হবে । ধনীরা সরকারি নির্দেশ মেনে বাড়িতে থাকলেও দরিদ্রদের কাছে বাড়িতে থাকার কোনও উপায় ছিল না । সরকারের দেওয়া ভরতুকি সংগ্রহ করতে মানুষ ব্যাঙ্কের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন, আর তার ফলে সংক্রমণ আরও বেড়ে যায় । কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে গিয়েও ভাইরাসের কবলে আসেন । শুধুমাত্র ইকুয়েডরের কোভিড–১৯ আক্রান্তের সংখ্যার ৭০ শতাংশেরও বেশি গুয়ায়াস প্রদেশের । হাসপাতালগুলিতে ভিড় উপচে পড়ছে । এমনকী আত্মীয়–পরিজনদের হাতে দেহ তুলে দিতেও বেশ কয়েকদিন লাগছে । গুয়াইয়াকুইলে জরুরি পরিষেবা পেতে যে ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল তা সবসময়ই ব্যস্ত, দিনভর বেজে চলেছে । সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ।এই সত্য মেনে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো নিজেও । যেহেতু পরীক্ষা এখনও চলছে তাই ঠিক কতজন কোভিড–১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তার হদিশ এখনও মেলেনি । কফিনের ঘাটতির জেরে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কার্ডবোর্ডের বাক্স ব্যবহার করছেন ।

সমাধিস্থলেও জায়গা নেই । সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চের শেষ পর্যন্ত গুয়াইয়াকুইল শহর থেকেই ১৩৫০টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে । প্ল্যাস্টিক কভারে দেহগুলিকে মুড়ে রাস্তায় এবং রাস্তার ধারগুলিতে স্রেফ পচার জন্য ফেলে রাখা হয়েছে । শেষ সপ্তাহেও আধিকারিকদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫০টি শবদেহ সরানো হয়েছে ।

কিউটো, 16 এপ্রিল: সঠিক সময়ে কোভিড–১৯ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়াই ইকুয়েডরকে ক্রমশ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে । দেশের নাগরিকরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশে গুরুত্ব দেননি । পরিণামে দেশ বর্তমানে বড়সড় স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছে । পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে ।

বর্তমানে দেশটির অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর যে সেখানে মৃতদেহের সমাধির জন্য কফিন মিলছে না । দেহগুলিকে রাস্তার ধারে ফেলে রাখা হচ্ছে পচার জন্য । ভাইরাসের উৎসকেন্দ্র গুয়াইয়াকুইলের অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর । ১.৭ কোটি জনবসতির দেশ ইকুয়েডরের মৃত্যুসংখ্যার এই আধিক্যের নেপথ্যে সঙ্গত কারণ রয়েছে । স্পেনের সঙ্গে ইকুয়েডরের সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত । এমনকী, ইকুয়েডরের সরকারি ভাষাও স্প্যানিশ । ইকুয়েডরের নাগরিকরা সাধারণত স্পেন এবং ইট্যালিতে যান আর এই দুই দেশই গোটা পৃথিবীতে বর্তমানে নভেল কোরোনা ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে । ২৯ ফেব্রুয়ারি স্পেন থেকে ৭০ বছর বয়সি এক মহিলা গুয়াইয়াকুইলে আসেন । কোরোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁকে কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়। সংস্পর্শে আসা ৮০ জনকে চিহ্নিত করে কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয় । কিন্তু স্পেনে এই ভাইরাসের প্রকোপ হওয়ার পর সেখানে পাঠরত কলেজ পড়ুয়ারা ইকুয়েডরে ফিরে আসেন । ঠিক সেই সময়ই স্পেন ফেরত পড়ুয়াদের কেউ কেউ গুয়াইয়াকুইলের কিছু অনুষ্ঠান এবং বিয়েতে যোগ দেন । এর ফলে তৈরি হয় অতি–সংক্রমণ অর্থাৎ ‘সুপার–স্প্রেড’ পরিস্থিতি । সংক্রমণ দ্রুত দেশের অভিজাত এলাকা থেকে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল বসতিগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে ।

ইকুয়েডরের সরকার দেশের নাগরিকদের নির্দেশ দিয়েছিল, সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে বাড়িতেই থাকতে। নাগরিকদের সুবিধার্থে সরকার ঘোষণা করেছিল যে, প্রতি পরিবারকে মাসে ৬০ মার্কিন ডলার করে দেওয়া হবে । ধনীরা সরকারি নির্দেশ মেনে বাড়িতে থাকলেও দরিদ্রদের কাছে বাড়িতে থাকার কোনও উপায় ছিল না । সরকারের দেওয়া ভরতুকি সংগ্রহ করতে মানুষ ব্যাঙ্কের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন, আর তার ফলে সংক্রমণ আরও বেড়ে যায় । কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে গিয়েও ভাইরাসের কবলে আসেন । শুধুমাত্র ইকুয়েডরের কোভিড–১৯ আক্রান্তের সংখ্যার ৭০ শতাংশেরও বেশি গুয়ায়াস প্রদেশের । হাসপাতালগুলিতে ভিড় উপচে পড়ছে । এমনকী আত্মীয়–পরিজনদের হাতে দেহ তুলে দিতেও বেশ কয়েকদিন লাগছে । গুয়াইয়াকুইলে জরুরি পরিষেবা পেতে যে ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল তা সবসময়ই ব্যস্ত, দিনভর বেজে চলেছে । সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ।এই সত্য মেনে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো নিজেও । যেহেতু পরীক্ষা এখনও চলছে তাই ঠিক কতজন কোভিড–১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তার হদিশ এখনও মেলেনি । কফিনের ঘাটতির জেরে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কার্ডবোর্ডের বাক্স ব্যবহার করছেন ।

সমাধিস্থলেও জায়গা নেই । সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চের শেষ পর্যন্ত গুয়াইয়াকুইল শহর থেকেই ১৩৫০টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে । প্ল্যাস্টিক কভারে দেহগুলিকে মুড়ে রাস্তায় এবং রাস্তার ধারগুলিতে স্রেফ পচার জন্য ফেলে রাখা হয়েছে । শেষ সপ্তাহেও আধিকারিকদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫০টি শবদেহ সরানো হয়েছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.