জেনেভা, 9 জুন : বিশ্বজুড়ে কোরোনা প্যানডেমিক পরিস্থিতি গুরুতর হচ্ছে ৷ জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO ) ৷ WHO জানায়, প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা ৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অ্যামেরিকাতেও বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা ৷ বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে অ্যামেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৷ তবে বিক্ষোভের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে ৷ সাবধানতা অবলম্বন করে করতে হবে প্রতিবাদ কর্মসূচি ৷ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে নভেল কোরোনা ভাইরাস হানায় প্রায় 8 লাখ 3 হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় 70 লাখেরও বেশি মানুষ ৷
পূর্ব এশিয়ার পর কোরোনা সংক্রমণের এপিসেন্টার হয়ে ওঠে ইউরোপ ৷ তবে বর্তমানে সংক্রমণের এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে অ্যামেরিকা ৷ এবিষয়ে জেনেভাতে একটি ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠক করেন WHO প্রধান টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেয়েসাস ৷ সেখানে তিনি বলেন, বর্তমানে ইউরোপের অবস্থার উন্নতি হলেও , বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে ৷ গত 10 দিনের মধ্যে 9 দিনেই প্রতিদিন প্রায় 1 লাখেরও বেশি কোরোনা ভাইরাসে সংক্রমণ রিপোর্ট হয়েছে ৷ শুধুমাত্র গতকালই 1 লাখ 36 হাজারেরও বেশি সংক্রমণ রিপোর্ট হয়েছে ৷ যা একদিনে সর্বোচ্চ ৷ গত রবিবারে কোরোনা সংক্রমণের প্রায় 75 শতাংশই হয়েছে 10 টি দেশ থেকে ৷ প্রধানত অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ সেগুলি ৷
প্রতিবাদ করুন 'নিরাপদে'
টেড্রোস আরও বলেন, " বিশ্বব্যাপী মানুষেরা এখনও সংক্রমিত হতে পারে কোরোনায় ৷ প্রায় 6 মাস ধরে চলছে এই কোরোনা প্যানডেমিক ৷ কোনও দেশেরই এখন এই কোরোনা যুদ্ধ থেকে সরে যাওয়া উচিত হবে না ৷ অ্যামেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে খুনের জেরে যে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হচ্ছে ৷ তার ফলে যে জনসমাবেশ হচ্ছে তার দিকে বেশি করে নজরদারি রাখতে হবে ৷ যাতে ফের কোরোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে ৷ WHO সম্পূর্ণভাবে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে ও সাম্যবাদকে সমর্থন করে ৷ বিশ্বব্যাপী এই আন্দোলন সমর্থন করি ৷ যে কোনওরকমের বৈষম্যর বিরুদ্ধে ৷ তবে , বিশ্বব্যাপী এই আন্দোলন করুন নিরাপদে ৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৷ " তিনি আরও বলেন, " যতটা সম্ভব সুরক্ষা বজায় রাখতে হবে ৷ এক অপরের থেকে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ৷ হাত পরিষ্কার রাখুন, বিক্ষোভে জনসমাবেশে উপস্থিত থাকলে মুখ ঢেকে রাখুন ৷ মাস্ক পরুন ৷ যদি অসুস্থ বোধ করেন , বাড়িতে থাকুন ৷ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷ "
কোয়ারানটিন প্রতিবাদকারীরা?
কোরোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বরাবর জোর দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৷ WHO এর অন্যতম আধিকারিক মাইকেল রায়ান বলেন, যে ব্যক্তি বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন,এমনটা নয় যে তিনি আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন ৷ তিনি বলেন, " এটি প্রধানত স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষণ ও স্থানীয় রিস্ক ম্যানেজমেন্টের বিষয় ৷ তবে জনসমাবেশে এমন পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে ৷ সেখানে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য আধিকারিকরা সতর্কতার ভিত্তিতে মানুষকে কোয়ারনটিনে থাকার পরামর্শ দিতে পারেন অথবা কোরোনা পরীক্ষা করাতে পারেন । "
রায়ান আরও বলেন, আমরা আশা করি যে সব মানুষ বর্তমানে অসুস্থ, তারা কোনও জনসমাবেশে যোগ দেবেন না ৷ তাঁদের বাড়িতেই থাকা উচিত ৷ তবে জাতীয় ও উপ-জাতীয় কর্তৃপক্ষ যদি ঝুঁকি নির্ধারণের জন্য জনস্বাস্থ্যমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তবে তা যেন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে হয় ৷ অন্যদিকে, টেড্রোস বলেন, WHO এখনও পর্যন্ত 110 টি দেশে 50 লাখেরও বেশি PPE কিট পাঠিয়েছে ৷ যদিও 129 টি দেশে 129 লাখেরও বেশি PPE কিট পাঠানোর লক্ষ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ।