বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের জন্য বিভিন্ন রকম কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে । ইসলামিক দেশগুলিতে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি বা পাথর ছুড়ে হত্যার বিধান রয়েছে । কিছু কিছু দেশে ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচার করে দোষীকে শাস্তি দেওয়া হয় । নিচে বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের কী কী শাস্তি দেওয়া হয়, তা সংক্ষেপে দেওয়া হল ।
উত্তর কোরিয়া : এই দেশে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় । ফায়ারিং স্কয়্যাডের সামনে দাঁড় করিয়ে দোষীকে মাথায় বা শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে গুলি করে হত্যা করা হয় ।
চিন : এই দেশে ধর্ষণ খুবই গুরুতর অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয় । ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত তদন্ত সেরে বিচার শেষ করা হয় । দোষীকে পেছন থেকে গুলি করে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় । কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাদের পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়া হয় । কিন্তু সমস্যা হল, চিনে অনেক ক্ষেত্রেই লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষিতা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান না ।
সৌদি আরব : এই দেশে ধর্ষণের ঘটনায় বিচার শেষ হওয়ার খুব অল্পদিনের মধ্যে দোষীকে শাস্তি দেওয়া হয় । ধর্ষণের ঘটনায় এদেশেও প্রাণদণ্ডের বিধান রয়েছে । দোষীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নিস্তেজ করে প্রকাশ্যে তার মুণ্ডচ্ছেদ করা হয় ।
ইরান : এই দেশে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় । দোষীকে প্রকাশ্যে গুলি করে বা ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয় । তবে যদি ধর্ষিতার অনুমতি থাকে, তবে প্রাণদণ্ডের পরিবর্তে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা 100 ঘা বেত মারা হয় ।
আফগানিস্তান : ধর্ষণের ঘটনার চার দিনের মধ্যে বিচার শেষ করে দোষীকে শাস্তি দেওয়া হয় । দোষীকে মাথায় গুলি করে বা ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয় । দোষী যদি চায় তবে সে নিজেই নিজেকে গুলি করে বা ফাঁসি দিয়ে প্রাণদণ্ড কার্যকর করতে পারে ।
পাকিস্তান : গণধর্ষণ, শিশুর উপর যৌন নির্যাতন বা অন্য যে কোনও ধরণের যৌন হেনস্থার ঘটনায় দোষীকে এ দেশে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় । এ ছাড়া কোনও মহিলার পোশাক ছিঁড়ে দিয়ে তাঁর শরীরের কোনও অংশ উন্মুক্ত করলে সেক্ষেত্রেও প্রাণদণ্ডের বিধান রয়েছে ।
কিউবা : এ দেশেও ধর্ষণের ঘটনায় প্রাণদণ্ডের বিধান রয়েছে । এ ছাড়া 12 বছরের কম মেয়েদের যৌন হেনস্থা করলে সেক্ষেত্রেও দোষীকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় ।
ফ্রান্স : ধর্ষণের ঘটনায় দোষীকে 15 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । তবে অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে কোনও কোনও ক্ষেত্রে দোষীকে 30 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় ।
ইজ়রায়েল : ধর্ষককে এ দেশে 16 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । তবে অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে কোনও কোনও ক্ষেত্রে দোষীর যাবজ্জীবন সাজাও হতে পারে । এ ছাড়া যে কোনও ধরণের যৌন হেনস্থার ক্ষেত্রেও দোষীর একই সাজা হতে পারে ।
বাংলাদেশ : ধর্ষণের ঘটনায় দোষীকে সাধারণত যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় । তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে দোষীর প্রাণদণ্ডের বিধানও রয়েছে ।
জাপান : এ দেশে ধর্ষককে 20 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । তবে ডাকাতি করার সময় যদি কেউ ধর্ষণ করে তবে সেক্ষেত্রে দোষীর প্রাণদণ্ডের বিধান রয়েছে ।
অ্যামেরিকা : এ দেশে দুই ধরনের আইন রয়েছে ধর্ষণের মামলার বিচারের জন্য । একটি হল ফেডেরাল আইন, অন্যটি হল স্টেট আইন । ফেডেরাল আইনে ধর্ষককে 30 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । একই ব্যক্তি যদি একাধিক বার ধর্ষণের বা যৌন হেনস্থার ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে তিন ধাপে তাকে আরও কঠোর সাজা দেওয়া হয় । লুইসিয়ানা ও ফ্লোরিডায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় প্রাণদণ্ডের বিধান রয়েছে ।
নরওয়ে : যৌন হেনস্থায় দোষীদের এ দেশে অপরাধের গুরুত্ব বুঝে 4 থেকে 20 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । কোনও মহিলার অনিচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে যে কোনও ধরনের যৌন আচরণকে এ দেশে অপরাধ বলে গণ্য করা হয় ।
রাশিয়া : অপরাধের গুরুত্ব বুঝে ধর্ষককে এ দেশে 4 থেকে 15 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । এ ছাড়া দোষী যাতে 20 বছর কোনও চাকরি না পায় সেই বিধানও আইনে রয়েছে । নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় দোষীকে আরও কঠোর শাস্তি দেওয়া হয় ।
নেদারল্যান্ড : ধর্ষণ সহ যে কোনও যৌন হেনস্থায় দোষীর 4 থেকে 15 বছরের কারাদণ্ড হতে পারে । এ দেশে কাউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফ্রেঞ্চ কিস করা যৌন হেনস্থার শামিল ।