কলকাতা, 9 মে: জোরকদমে চলছে শুভ্রজিৎ মিত্রর 'দেবী চৌধুরানী' নির্মাণের বিভিন্ন পর্বের কাজ । এরই মাঝে সামাজিক মাধ্যমে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে দেখা গেল পরিচালককে । আর তাতে আপ্লুত হয়ে ধন্যবাদ জানালেন অভিনেত্রীও। 'দেবী চৌধুরানী' ছবির জন্য শ্রাবন্তীকে অনেক পরিশ্রম এবং প্রশিক্ষণ নিতে হবে তা আগেই জানিয়েছিলেন পরিচালক। অশ্বচালনা থেকে অসিচালনা সবই রয়েছে তালিকায় ।
'দেবী চৌধুরানী'র পাশাপাশি আরও দু'টি ছবির কাজে শ্রাবন্তী এখন বেশ ব্যস্ত । একটি হল রাজর্ষি দে'র 'সাদা রঙের পৃথিবী' এবং অংশুমান প্রত্যুষের 'বাবুসোনা'। এই মুহূর্তে 'বাবুসোনা'র জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন অভিনেত্রী । শুভ্রজিৎ মিত্রর কাছ থেকে শ্রাবন্তীর নিষ্ঠা আর পরিশ্রমের কথা বিস্তারিত জানতে ইটিভি ভারত যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে ।
তিনি বলেন, "আমাদের তো এখন একটা লংটার্ম প্রসেস চলছে। বারবার খুঁটিনাটি প্রশ্ন করে শ্রাবন্তী । তার থেকেই বোঝা যায় যে ও নিজেকে কতটা ভাঙতে চাইছে। এই বিষয়টি থেকেই ওর কাজের প্রতি নিষ্ঠা কতখানি, তা প্রমাণিত হয়। একসঙ্গে অনেকটা পথই যেতে হবে আমাদের । মলাট চরিত্র করছে শ্রাবন্তী। দেবী চৌধুরানী হল বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি নারী চরিত্র। সিনেমার ইতিহাসেও অন্যতম। এর আগে সুচিত্রা সেন করেছেন। যদিও আমার এখানে চরিত্রের অঙ্কন একেবারেই আলাদা । তবু নামটার সঙ্গে তো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে আছে ৷ ছেলেখেলা করার বিষয় নয় ।"
শুভ্রজিৎ জানান, শ্রাবন্তী জানে চরিত্রের গুরুত্বটা ৷ তিনি বলেন, "এই গুরুত্বটা বুঝে নিয়ে যে পরিমাণ শ্রাবন্তী পরিশ্রম করছে সেটা প্রশংসনীয় । বিদেশে অন্য ছবির কাজে থাকলেও নিয়মিত কথা হচ্ছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে যে ওর মনটা পড়ে আছে দেবী চৌধুরানীতেই। এটাই তো একজন ডিরেক্টরকে বাড়তি প্রেরণা দেয় একটা কাজের প্রতি।"
প্রসঙ্গত, কৌশিক গঙ্গোাপাধ্য়ায় একবার ইটিভি ভারতকে বলেছিলেন, "শ্রাবন্তী সুযোগ পেলে নিজেকে কতটা ভাঙতে পারে সেটা কাবেরী অন্তর্ধানে দেখিয়ে দিয়েছে। ওকে সুযোগ দিতে হবে।" এই প্রসঙ্গে শুভ্রজিৎও সহমত হয়ে বলেন, "কৌশিকদার মতো একজন পরিচালক যেটা বলেছেন ভেবেই বলেছেন। 'কাবেরী অন্তর্ধান' দেখলেই বোঝা যায় শ্রাবন্তী নিজেকে কতটা ভাঙতে পারে । পাশাপাশি টনিদার (অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী) ছবি 'বুনোহাঁস', অপর্ণা সেনের 'গয়নার বাক্স'তে দারুণ অভিনয় করেছে শ্রাবন্তী। ওর যে অভিনয় ক্ষমতাটা আছে সেটা ব্যবহার করা দরকার।"
তাঁর মতে শ্রাবন্তীকে চল্লিশ শতাংশও ব্যবহার করা হয়নি ৷ তাঁর কথায়, "আমি বলব চল্লিশ শতাংশ সুযোগও কেউ দিয়ে উঠতে পারেনি। সেই সুযোগটা ওকে দেওয়া দরকার । যারা সিরিয়াস ছবি করেন তারা এখনও ব্যবহার করে উঠতে পারেননি এই অভিনেত্রীকে। আমার মনে হয় শ্রাবন্তীর কাজে 'দেবী চৌধুরানী' একটা বড় মাইলস্টোন হতে চলেছে।"
আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদ, কাশ্মীর ফাইলস নিয়ে আইনি চিঠি বিবেক অগ্নিহোত্রীর
সবমিলিয়ে কী কী করতে হবে শ্রাবন্তীকে? শুভ্রজিৎ বলেন, "সোহাগদি অ্যাক্টিং ওয়ার্কশপ করাবেন। শ্রাবন্তীকে ঘোড়া চালানো শিখতে হবে । ফিজিক্যাল টেনিং অনেকদিন হল শুরু করেছে । এ ছাড়াও লাঠি চালানো, তলোয়ার চালানো, মিক্স মার্শাল আর্ট এগুলোও শিখতে হবে । শ্যাম কৌশলজি এসে স্পেশাল ট্রেনিং দেবেন। শ্রাবন্তী ছাড়াও বুম্বাদা, বিবৃতি, দর্শনা, অর্জুন, কিঞ্জল সবাইকেই শিখতে হবে। শেখার জার্নিটা চলবে অনেকদিন। এই ধরনের ক্যানভাসের ছবি তো হয় না সচরাচর বাংলায়, যে শ্যুটিং চলতে চলতেই যুদ্ধবিদ্যা শিখতে হয় । তাই আমি একটু বেশি সময় নিয়েই এগোচ্ছি যাতে পারফেকশনটা থাকে।"