কলকাতা, 12 মে: প্রয়াত কবি কাজী নজরুল ইসলামের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী কল্যাণী কাজী । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল 87 বছর । তাঁর সুরহৃদ্ধ কণ্ঠে অসামান্য গায়কীতে নজরুল গীতি, দীর্ঘকাল শ্রোতার মনোরঞ্জন করে এসেছে । তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে বহুবার গান গেয়েছেন পঞ্চকবির কন্যা ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়াত শিল্পীর স্মৃতিচারণ এই শিল্পী ।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন সংগীতশিল্পী কল্যাণী কাজী । কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল । তাঁর ছাত্রছাত্রীরা সকলেই শোকাহত । দুই পুত্র এবং এক কন্যাকে রেখে গেলেন শিল্পী কল্যানী । মাত্র 18 বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয় কাজী অনুরুদ্ধর সঙ্গে । সেই সূত্র ধরেই পেয়েছেন নজরুলের সান্নিধ্য । ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "মধুসূদন দত্ত'র ভাষাতেই বলতে হয়, একে একে নিভিছে দেউটি...। মাথার উপর থেকে ছাদ সরে যাচ্ছে আমাদের। ওঁনার মেয়ে আমার বন্ধু। সেই সূত্রে বহুবার ওঁনার বাড়িতে গিয়েছি। দেখা হয়েছে। ওঁনার হাতের রান্না খেয়েছি। তাই আমার অনেক প্রাপ্তি ঘটেছে ওঁনার কাছ থেকে।"
আরও পড়ুন: 'যেদিন লব বিদায়...' প্রয়াত বিদ্রোহী কবির পুত্রবধূ কল্যাণী কাজী
তিনি আরও বলেন, "খুব ভালো রান্না করতেন কল্যাণী মাসি। খেতে এবং খাওয়াতে দুইই ভালোবাসতেন। এতটুকু নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না তাঁর জীবনে। হাসিমুখে থাকতেন সবসময়। আমুদে ছিলেন, মজার মজার কথা বলতেন। আর ভালোবাসতেন সাজতে। অন্তরের সমস্যা রাখতেন অন্দরে। বাইরে প্রকাশ করতেন না ।"
শিল্পীর সঙ্গে বহুবার মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই স্মৃতিচারণায় পঞ্চকবির কন্যা বলেন, "আমি যখন গান গাইতে এসেছি, তখনকার শিল্পীদের মধ্যে কল্যাণী মাসি একজন। আমরা যেমন সিনিয়রদের সম্মান করতাম, সিনিয়ররাও আমাদের স্নেহ করতেন। ওঁদের মধ্যে একটা মাতৃসুলভ ব্যাপার ছিল। সঙ্গীত দুনিয়ায় সুন্দর পরিবেশ-পরিমণ্ডল ছিল। আজ সেই দিন অতীত ৷ কল্যাণী মাসির সঙ্গে শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র সদন, ফণীভূষণ মঞ্চে বহুবার অনুষ্ঠান করেছি। মাথার উপর থেকে ছাদগুলো একে একে সরে যাচ্ছে।"