মুম্বই, 26 নভেম্বর: প্রয়াত বর্ষীয়াণ মারাঠি অভিনেতা বিক্রম গোখলে ৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই পুনের দীননাথ মঙ্গেশকর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তিনি ৷ শেষ পর্যন্ত শনিবার সমস্ত প্রয়াস ব্যর্থ করে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন এই অভিনেতা ৷ আসুন আজ ফিরে দেখা যাক তাঁর রঙিন আলোর জগৎ (Vikram Gokhale Passes Away) ৷
এই সুদক্ষ অভিনেতার জন্ম পুনেতে ৷ তাঁর প্রপিতামহী দুর্গাবাঈ কামত ছিলেন ভারতীয় ছবির প্রথম মহিলা অভিনেত্রী ৷ আবার তাঁর পিতামহী কমলাবাঈ ছিলেন ভারতীয় ছবির প্রথম মহিলা শিশু শিল্পী ৷ তাঁর বাবা চন্দ্রকান্ত গোখলেও প্রায় 70টির বেশি মারাঠি এবং হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন ৷ তাই বাড়িতে ছোটবলা থেকেই ছিল অভিনয়ের পরিবেশ ৷ আর তাই সেই অভিনয়ের নেশা খুব ছোট থেকেই সংক্রমিত করেছিল বিক্রমকেও (Vikram Gokhale Film Career) ৷ তাঁকে ছবিতে প্রথম সুযোগ দেন ভারতীয় ছবির পথিকৃৎ দাদা সাহেব ফালকে ৷
অভিনয়ের পাশাপাশি বিক্রম একজন সমাজসেবী হিসাবেও বেশ পরিচিত ছিলেন ৷ আহত সেনাদের সেবার জন্য় একটি 'চ্য়ারিটেবল সোসাইটি'-ও গড়ে তুলেছিলেন তিনি ৷ শুধু রূপোলি পর্দায় নয়, মারাঠি নাট্যজগতেও বিক্রম গোখলে একটি অত্যন্ত চেনা মুখ ৷ সিনেমার পাশাপাশি অজস্র মারাঠি নাটকে কাজ করেছেন তিনি ৷ তবে 2016 সালে গলার সমস্য়া শুরু হওয়ায় নাটককে একেবারেই বিদায় জানান বিক্রম ৷
বড় পর্দায় তাঁর আগমন অমিতাভ বচ্চন এবং শত্রুঘ্ন অভিনীত 'পারওয়ানা' ছবির হাত ধরে । সালটা ছিল 1971 ৷ এরপর একের পর এক বিভিন্ন চরিত্রে তাঁকে দেখছেন দর্শকরা ৷ তাঁর ঝুলিতে একদিকে যেমন রয়েছে 'ধরম সংকট', 'সাউ কোটি', 'ক্রোধ', 'অগ্নিপথ', 'তুম বিন'-এর মতো ছবি তেমনই রয়েছে সলমন খান এবং ঐশ্বর্য রাই অভিনীত সুপারহিট ছবি 'হাম দিল দে চুকে সনম', অক্ষয় কুমার অভিনীত হিট ছবি 'ভুল ভুলাইয়া', 'মিশন মঙ্গল' এবং 'দে দানা দান'-এর মতো ছবিগুলিও ৷ তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে হিন্দি এবং মারাঠি মিলিয়ে প্রায় একশোরও কাছাকাছি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি ৷
একইসঙ্গে প্রায় 23 বছর ধরে ছোট পর্দায় কাজ করছেন বিক্রম ৷ 1990 সালে টিভি শো 'ক্ষিতিজ ইয়ে নাহি'-এর হাত ধরে তিনি টিভির জগতে পা রাখেন ৷ এরপর একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিক যেমন 'কুছ খোয়া কুছ পায়া', 'সঞ্জিবনী', 'বিরুদ্ধ'-এ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা ৷ তাঁর বড় পর্দায় আগমন অবশ্য় এর বেশকিছুদিন আগে ৷
আরও পড়ুন: প্রয়াত অভিনেতা বিক্রম গোখলে, শোকের ছায়া বলিউডে
তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছিল 'নিকমা' (2022) ছবিতে। 2010 সালে মারাঠি ছবি 'অনুমতি'-র জন্য জাতীয় পুরস্কারও পান অভিনেতা ৷ শুধু অভিনেতা নয় পরিচালক হিসাবেও সাফল্য পেয়েছিলেন বিক্রম ৷ 2010 সালে 'আগহাট' ছবির হাত ধরে পরিচালনায় পা রাখেন তিনি ৷ সেখানেও কুড়িয়েছেন প্রশংসা ৷ অবশেষে 26 নভেম্বর 'একে একে নিভিল দেউটি', অনুরাগীদের কাঁদিয়ে চোখ বুজলেন বিক্রম গোখলে ৷