হায়দরাবাদ, 10 ডিসেম্বর: ছবি মানে না দেশ-কালের সীমানা ৷ বাংলার মাটিতে অপু-দুর্গা যতটা প্রাসঙ্গিক, ততটাই প্রাসঙ্গিক ভিনদেশের কোনও নাম না-জানা গ্রামেও ৷ ছবির ভাষা যে কতোটা তীব্র হয়, সেটা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের বুঝিয়েছিলেন অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায় ৷ তাঁর ছবি আজও নাড়া দিয়ে যায় সকলকে ৷ ঠিক যেমন মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টস (MOMA)-এর প্রাক্তন কিউরেটর লরেন্স কার্দিশ, বুঝেছিলেন সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার গভীরতা ৷
29তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সত্যজিৎ রায় মেমোরিয়াল লেকচারে শনিবার কলকাতায় উপস্থিত হন লরেন্স কার্দিশ ৷ প্রায় পাঁচ দশক আগে সত্যজিৎ রায়ের 'পথের পাঁচালী' দেখেছিলেন তিনি ৷ এই ছবি বদলে দিয়েছিল তাঁর জীবন ৷ কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে সারা বিশ্বে মানুষ একই রকম, তাঁদের সাংস্কৃতিক পার্থক্য সত্ত্বেও। তিনি বলেন, "আমি একসময় স্বাধীন পরিচালকদের বানানো ছবি দেখা পছন্দ করতাম ৷ আমেরিকায় বাড়িতে বসে আমি যে ছবিগুলি দেখেছিলাম তার মধ্যে পথের পাঁচালী যা আমার জীবনকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দিয়েছে ৷"
78 বছর বয়সী কিউরেটর, নাট্যকার, তথা 'রিয়েল প্লাস্টিক ম্যাজিক (1972)-এর লেখক জানান, সেই সময় কোনও হলিউড ছবি তাঁকে প্রভাবিত করতে পারেনি, যতটা প্রভাবিত করেছিল 'পথের পাঁচালী' ৷ তিনি বলেন, "ছবিটা কোনও ড্রামা না থাকলেও তা ভীষণভাবে ড্রামাটিক ৷ আমি অনুভব করেছিলাম বাংলার বোরালে এই ছবির শুটিং হোক বা পৃথিবীর অনঅয যে কোনও প্রান্তে হোক, সব জায়গার মানুষ সাংস্কৃতির দুরত্ব সরিয়ে একই রকম ৷"
কুর্দিশ বলেছেন যে তিনি 1968 সালে মোমা-তে একজন 'ফিল্ম কিউরেটর'" হিসাবে যোগদান করেন ৷ 44 বছরে 1000টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে তিনি গিয়েছেন ৷ যার মধ্যে 'রে রেট্রোস্পেকটিভ' একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে রয়ে গিয়েছে।" তিনি আরও জানান, সত্যজিৎ রায় শুধুমাত্র অসাধারণ পরিচালক ছিলেন না, তিনি মহান শিল্পীও ছিলেন ৷
আরও পড়ুন
1. চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত রাজস্থানী ছবি 'আ বয় হু ড্রিমট অফ ইলেকট্রিসিটি'
2. বছর তেইশ পর... 'দিল চাহাতা হ্যায়' স্মৃতি উসকে চাপোরা ফোর্টে ফারহান; ভাসলেন নস্ট্যালজিয়ায়