কলকাতা, 4 জুন : কেকে'র কলকাতা সফর এবং দূর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর সঙ্গে ওতোপ্রোত হয়ে জড়িয়ে পড়েছিল আরেকটি নাম তিনি সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচি ৷ সম্প্রতি কেকে'র কলকাতার অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়ো দেখার পর তিনি মন্তব্য় করেছিলেন, "কলকাতার শিল্পীরা কেকে'র থেকে অনেক ভাল গান করেন । তবু বাংলার মানুষ তাঁদের পাত্তা দেয় না । তাঁরা সেই মুম্বই নিয়েই মেতে থাকে । কিন্তু আর কতদিন ? এবার তো বাংলার পাশে থাকতে হবে । কে এই কেকে ? হু ইজ হি ?" তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক ৷ দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই অনুষ্ঠানের পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কেকে ৷ ফলত তাঁর অনুরাগীরা আরও বেশি ট্রোল করা শুরু করেন রূপঙ্কর বাগচিকে নিয়ে ৷ সম্প্রতি এই ঘটনা নিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন রূপঙ্কর ৷ আর এবার তাঁর স্ত্রী চৈতালী লাহিড়ী লিখলেন ঠিক কতখানি মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে এই কটা দিন কাটিয়েছেন তাঁরা (Chaitali Lahiri Explains Their Situation After The KK Issue)৷
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে সম্প্রতি একটি দীর্ঘ কবিতা প্রকাশ করেছেন চৈতালী যেখানে উঠে এসেছে এই ট্রোলিংয়ের পর তাঁদের মানসিক যন্ত্রণার ছবি ৷ কারণ শুধু সোশ্য়াল মিডিয়ায় নানা মিম, বিতর্ক নয় এই কয়েকদিন হুমকি ফোনও করা হয়েছে রূপঙ্করের বাড়িতে ৷ যার জেরে পুলিশের দ্বারস্থও হতে হয়েছে তাঁদের ৷ তাই তিনি লেখেন, "ধরফরিয়ে বুকটা পোড়ে, বরটা বড়ই বোকা / দুনিয়াদারিতে নেহাৎ কাঁচা শিল্প যাপনে মগ্ন থাকা । /এমন কথা কি বলতে হয়, তুমি কি সমাজের হোতা?/কে দিয়েছে মাথার দিব্যি? কেন নড়ল মাথার পোকা?/নিজেকে নিয়ে বাঁচো, নিজের আখের গোছাও ওগো--/মেয়েটার ভবিষ্যৎ আছে, আমার কথাটাও ভাবো ।"
এর আগেই তাঁদের যন্ত্রণার কথাও তুলে ধরেছিলেন তিনি, "স্যোশাল মিডিয়া তোমার দেওয়া আ্যড্রনালিন রাশ, /ছোট্ট পরিবারের জীবনে নামিয়ে এনেছে ত্রাস ।/দরকার একটা স্মার্টফোন আর মনে একরাশ ঘৃণা,/ জীবনের যত না পাওয়ার যন্ত্রণা আর কিছু বাহানা ।"
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
রূপঙ্করের মন্তব্যে দুই ভাগ হয়ে গিয়েছিল টলিউডও এমনকী রূপঙ্কর যাঁদের গানের প্রশংসা করেছিলেন এই বিতর্কিত ভিডিয়োতে তাঁদের অনেকেও রূপঙ্করের সমর্থনে এগিয়ে আসেননি ৷ তাই চৈতালী সেকথা তুলে ধরেন তাঁর কবিতাতেও ৷ তাঁর কথায়, "ভালই হল চিনতে পেল বন্ধু এবং বাসা / সময় চেনায় কোনটা সত্যি আর কোনটা মরীচিকা", এরপর সমালোচক তথা ট্রোলারদেরও কথাও তুলে ধরেছেন রূপঙ্কর পত্নী ৷ তিনি লেখেন, "তোমাদেরও ঘরে জানি আছে এমন বোন ও মা/কেমন হবে তাদের জন্য এমন সমালোচনা?/হুমকি ফোন আর অশ্লীলতা ভাষায় ও ভঙ্গীতে/ বিনিদ্র রাত দুমুঠো ভাত মুখেও না রোচে ।"
আরও পড়ুন : গুছিয়ে বলতে না পারাতেই বিতর্ক, ব্যাখ্যা রূপঙ্করের
তাঁর কবিতার শেষে তিনি এও লেখেন যে এই ক'দিনে স্ত্রী এবং যশোদা মা দুই ভূমিকাই পালন করতে হয়েছে তাঁকে ৷ অর্থাৎ একদিকে স্বামীকে ঢাল হয়ে বাঁচাতে হয়েছে তেমনই তাঁকে সামালও দিতে হয়েছে সমস্ত আবেগ দিয়ে ৷ কবিতার শেষে তাই তিনি লেখেন,"সত্যিকারের মানুষ কিছু ঘিরে ছিলেন পাশ/তাদেরও নানান হেনস্তায় কেটেছে দিনরাত ।/তাদের বলি তোমাদের আমায় লড়াকু বলেই জানা/এক্ষেত্রে ভুমিকা আমার স্ত্রী ও যশোদা মা ।"