কলকাতা, 12 মার্চ : সাধারণত নেতার পিছন পিছন দলবদল করেন নিচুতলার কর্মীরা ৷ সরলা মুর্মুর ক্ষেত্রে ঘটেছে ঠিক উল্টোটা ৷ মালদার হবিবপুর কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ অথচ তারপরই শিবির বদলে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মে নাম লেখান সরলা ৷ কিন্তু তখন থেকে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলবিরোধী কোনও কথা শোনা যায়নি সরলার মুখে ৷ অথচ অন্য় দলবদলুরা তৃণমূল থেকে বেরোতেই পুরনো দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ৷ তাহলে সরলা ব্য়তিক্রম কেন ?
এর উত্তর দিয়েছেন সরলা নিজেই ৷ তাঁর সাফ কথা, দলের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ, কোনও অভিযোগ ছিল না তাঁর ৷ কিন্তু দলবদলের ধাক্কায় তৃণমূলে সাথীহারা দশা হয়েছিল ৷ গেরুয়া হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দলে দলে শাসকদলের সঙ্গ ত্যাগ করছিলেন নিচুতলার কর্মীরা ৷ এখন ভোট মরশুমে কর্মীরাই যদি নেতা, প্রার্থীদের সঙ্গে না থাকেন, তাহলে প্রচারটা করবে কে ? কীভাবে সারা হবে নির্বাচনের কাজকর্ম ? এই প্রশ্নের সদুত্তর না পেয়েই কর্মীদের পিছন পিছন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন সরলা ৷
শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, দীনেশ ত্রিবেদী ৷ ভোটমুখী বাংলায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীর সংখ্যা নেহাত কম নয় ৷ প্রায় সকলেরই দাবি, ‘মানুষের জন্য কাজ’ করার তাগিদেই দলবদল করেছেন তাঁরা ৷ অধিকাংশেরই অভিযোগ, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের দলে ‘দমবন্ধ’ হয়ে আসছিল তাঁদের ৷ তাই ভোটের মুখেই শিবির বদলের সিদ্ধান্ত নেন ৷ এঁদের মধ্যে শুভেন্দু, রাজীবের দলবদল তো রীতিমতো ‘টক অফ দ্য টাউন’-এ পরিণত হয় ৷ নজিরবিহীনভাবে রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে পদত্যাগ করেন দীনেশ ত্রিবেদীর মতো প্রবীণ রাজনীতিক ৷ যা দেখিয়ে চড়চড়িয়ে টিআরপি বাড়িয়ে নেয় খবরের চ্য়ানেলগুলি ৷
আরও পড়ুন : রাতারাতি তৃণমূলের প্রার্থী বদল, সরলা মুর্মুর জায়গায় প্রদীপ বাস্কে
এমন আবহে সরলার অকপট স্বীকারোক্তি নিঃসন্দেহে নজর কাড়ে ৷ দলবদলের যে কারণ তিনি দেখিয়েছেন, তা তাঁর নামের মতোই সহজ, সরল ৷ তিনি দল ছাড়ার পর হবিবপুর আসনে প্রদীপ বাস্কেকে প্রার্থী করে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই প্রদীপ আবার বিজেপি ছেড়েই যোগদান করেছেন শাসকদলে !