খড়্গপুর, 20 মার্চ : বাংলার প্রকৃত রাজনৈতিক দল কোনটি ? নরেন্দ্র মোদির উত্তর, বিজেপি ৷ শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে নির্বাচনী জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ সেখানেই তাঁর দাবি, বাংলার প্রকৃত রাজনৈতিক দল যদি কিছু থাকে, তাহলে সেটা একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টি ৷ কারণ, বিজেপির জন্ম হয়েছিল জনসংঘের হাত ধরে ৷ আর এই জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্য়ামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় ৷ তিনি বাংলারই সন্তান ৷ মোদির দাবি, বিজেপির ডিএনএ-তেই রয়েছে বাংলার নির্যাস ৷ কারণ, শ্য়ামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় ও আশুতোষ মুখোপাধ্য়ায়ের দেখানো পথেই এগিয়ে চলেছে বিজেপি ৷ এই দু’জনের ভাবনা আর সংস্কারই বিজেপির পাথেয় ৷
প্রসঙ্গত, বাংলায় ভোটের হাওয়া যখন সবেমাত্র বইতে শুরু করেছিল, ঠিক তখনই ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব সামনে আনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিজেপি দল ও তাদের নেতা-মন্ত্রীদের গায়ে ‘বহিরাগত’ তকমা সেঁটে দেয় তারা ৷ এই ঘটনার থেকেই নিজেদের আরও বেশি করে বাঙালি প্রমাণে মরিয়া হয়ে ওঠেন বিজেপির প্রচারকরা ৷ এই প্রেক্ষাপটে শাসকদলের নতুন ক্যাচলাইন ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ ৷ ‘বহিরাগত’ গেরুয়াশিবিরের মোকাবিলায় এই হল তাদের নয়া অস্ত্র ৷ এমন একটা টানাপোড়েনের পরিস্থিতিতে শ্যামাপ্রসাদের বাঙালি পরিচয়কে সামনে এনে পাল্টা আক্রমণাত্মক ব্য়াটিং শুরু করেছে বিজেপিও ৷ সেই তত্ত্বের সমর্থনেই এদিন আরও একবার মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদি ৷
আরও পড়ুন : 50-55 বছর ধরে বাংলার বিকাশ ডাউন, মোদির নিশানায় কং-বাম-তৃণমূল
তবে শুধুমাত্র শ্য়ামাপ্রসাদ বা আশুতোষ নন, মোদির এদিনের ভাষণে উঠে আসে মেদিনীপুরের বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম ৷ ক্ষুদিরাম বসু থেকে মাতঙ্গিনী হাজরা, ভাষণের শুরুতেই প্রণম্যদের কথা স্মরণ করতে ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী ৷ ভোলেননি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রানি রাসমণি, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্য়ায়, বীরেন্দ্রনাথ শাসমলদেরও ৷
ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী রাহুল সিনহার সমর্থনে কলকাতায় প্রচার করতে এসেছিলেন বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ৷ সেদিন তাঁর রোড-শো ঘিরে ছড়ায় অশান্তি ৷ বিদ্য়াসাগর কলেজ চত্বরে বিদ্য়াসাগরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয় ৷ যার দায় গেরুয়া শিবিরের উপরেই চাপিয়ে দেয় রাজ্যের শাসকদল ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা ধাক্কা দিয়েছিল বাঙালি মননকে ৷ পরবর্তীতে এই প্রসঙ্গ ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া হয় বিজেপি ৷ আর বিধানসভা ভোটের আবহে বাংলার প্রায় সব মনীষীকেই নিয়েই শুরু হয়েছে টানাটানি ৷ স্বামী বিবেকানন্দ থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, সকলকেই নিজেদের আদর্শ বলে দাবি করতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি ৷ আর এই খেলায় সবথেকে বেশি এগিয়ে রয়েছে, তৃণমূল-বিজেপি ৷ মোদির শনির সভাতেও যা অব্যাহত রইল ৷