শিলিগুড়ি, 20 নভেম্বর : দুর্গাপূজা ও দীপাবলির পর এবার ছটপুজোয় বিভিন্ন ঘাটে ভিড় রোখাই চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের । সেই লক্ষ্যে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক এবং শিলিগুড়ি ফাইট কোরোনা । চিকিৎসকরা বলেন, এর আগে কিছুটা সচেতনতা বাড়ায় আপাতত শহরের তুলনায় শিলিগুড়ি মহকুমা ও পাহাড়ে রোগের প্রকোপ অনেকটাই কমেছে । ফের গ্রামাঞ্চলের মানুষ পুজোকে সামনে রেখে ভিড় বাড়ালে বাড়তে পারে কোরোনার সংক্রমণ ।
শিলিগুড়িতে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক-এর তরফে চিকিৎসক কল্যাণ খাঁ বলেন, "দুর্গাপূজার ভিড় দেখে আমরা কোরোনার প্রকোপ বাড়বে বলে ভেবেছিলাম । কিন্তু সেভাবে এলাকায় রোগের প্রকোপ বাড়েনি । দীপাবলি ও ধনতেরসের সময় লাগাতার প্রচারে সাড়া দিয়ে আতসবাজি পোড়াননি অনেকে । গ্রামাঞ্চলে এবং পাহাড়ে এখন রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে । শিলিগুড়িতে রোগের প্রকোপ থাকলেও মৃত্যুর হার আটকানো গিয়েছে । তাই আজ থেকে দু'দিন ছটপুজোকে সামনে রেখে আমরা অতিমাত্রায় সক্রিয় রয়েছি ।" তিনি আরও বলেন, "আতসবাজি না পোড়াতে আবেদনের পাশাপাশি পরিবার পিছু দু'জন করে পুজো করতে ঘাটে যাবেন বলে হাইকোর্টের যে রায় আছে তা মানতে হবে । এটা বাস্তবায়িত হলে প্রতি বছর যে কয়েক লাখ লোকের ভিড় ঘাটগুলিতে হয় তা অনেকটাই কমবে । শুধু পুলিশ দিয়ে এই কাজ করানো যাবে না । তাই ফের আমরা আবেদন রাখছি নির্দেশিকা মেনে চলার । পাশাপাশি নির্দিষ্ট মাস্ক ছাড়া নদীঘাটে না আসার পরামর্শ দিচ্ছি ৷"
প্রশাসনের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুজোর সময় নদীঘাটে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না । নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে পূজায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে। শুধুমাত্র যাঁরা পূজা করবেন তাঁরাই ঘাটে যাবেন । দর্শনার্থীদের ঘাটে ভিড় করতে দেওয়া হবে না । শিলিগুড়িতে কোরোনা মোকাবিলার পাশাপাশি গ্রিন ট্রাইবুনালের রায় মাথায় রেখে নদীতে পূজার সামগ্রী ফেলা যাবে না পরিবেশ রক্ষার্থে । পৌর প্রশাসক অশোক ভট্টাচার্য জানান, "নদীতে পুজোর সামগ্রী ফেলা যাবে না । ভিড় মোকাবিলা করাই হবে আমাদের চ্যালেঞ্জ । আমাদের কর্মীরা নদীঘাটে উপস্থিত থাকবেন । নদী পরিষ্কার রাখতে পুজোর পর নানা সামগ্রী সংগ্রহ করে তা অন্যত্র নিয়ে যেতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করবেন জঞ্জাল সাফাই বিভাগের কর্মীরা ।"
দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, আপাতত জেলায় কোরোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । গড়ে আক্রান্তের হার যেমন কমেছে তেমনই মৃত্যুর হারও অত্যন্ত কম । ছট পুজোকে কেন্দ্র করে নদী ঘাটে গ্রাম ও শহরের বাসিন্দারা একত্রিত হলে এর জেরে ফের সংক্রমণ বাড়তে পারে । তাই নদী ঘাটের বদলে নিজ নিজ এলাকায় কৃত্রিম ঘাট বানিয়ে পূজা করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে পুণ্যার্থীদের ।