শিলিগুড়ি, 14 জানুয়ারি : স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও মিলল না সরকারি, বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা । অভিযোগ, এর ফলে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া অঞ্চলের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়র ।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত না হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির লাইসেন্স বাতিল করা হবে ৷ এমনকী পরিষেবা না পেলে কার্ড গ্রাহকদের এফআইআর করারও পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি শাসক দলের অন্য নেতারাও স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে ও মিলবে বলে দাবি করছেন । তখন সেই কার্ড থাকা সত্ত্বেও শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ার প্রমোদনগরে বাসিন্দা পৌঢ় বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারালেন বলে অভিযোগ ৷ পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ি শহরের একাধিক সরকারি ও হাসপাতালে যাওয়া হলেও পরিষেবা মেলেনি । এরপর কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় পৌঢ় মহম্মদ গফফারের (65) ৷ যদিও দু'সপ্তাহ আগেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড করেছিল পরিবারটি । এরমধ্যে ব্রেন স্ট্রোক হয় মহম্মদ গফফারের । শরীরের বেশ কিছু অঙ্গ বিকল হয়ে যায় । গত মঙ্গলবার সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে প্রথমে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান । সেখান থেকে রোগীকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । সেখানেও বেড না মেলায় স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের উপর ভরসা করে একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে ৷ রোগীর পরিবারের অভিযোগ, বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কার্ড দেখো মাত্র তাঁদের ফিরিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ । শেষে রোগীকে বাড়িতেই ফিরিয়ে আনা হয় ৷ মঙ্গলবার রাতেই মারা যান মহম্মদ গফফার । ঘটনার পরই রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা তথা স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মৃতের পরিবারের লোকেরা ।
আরও পড়ুন: নজরে নির্বাচন, রাজ্যের সবাই স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায়
মৃত মহম্মদ গফফরের ভাইপো বলেন, "কাকার কিছুদিন আগে ব্রেন স্ট্রোক হয় ৷ একটা দিক প্যারালাইসড ছিল ৷ এর মধ্যে বেশি অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাব বলে ঠিক করি ৷ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে বেড মেলেনি ৷ বেসরকারি হাসাপাতাল সরসরি জানিয়ে দেয় স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের পরিষেবা সেখানে দেওয়া হয় না ৷"
মৃতার ভাইপো আরও বলেন, "আমরা একটাই ইনসাফ চাই ৷ আমাদের মতো আরও গরিব আছেন যাঁরা, তাঁদের সঙ্গে যেন এমন না হয় ৷ তাঁরা যেন স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা পায় ৷"
গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার ভূমিকা নিয়ে । যদিও এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক ।
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, "স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে যিনি তালিকাভুক্ত তাঁকে পরিষেবা দিতেই হবে ৷ এমন অভিযোগ যদি পাই তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেব ৷"