মালদা, 22 অক্টোবর : রিভিউয়ের পর মাধ্যমিকের নতুন মেধাতালিকায় জায়গা করে নিল মালদার রোজা পারভিন ৷ শুধু তাই নয়, এবারের মাধ্যমিকে মালদা জেলার সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকও সে ৷
রোজা পারভিনের বাড়ি চাঁচলের আদর্শপল্লিতে ৷ আব্বা আনসার আলি হরিশ্চন্দ্রপুরের চণ্ডীপুর হাইস্কুলের শিক্ষক ৷ মেয়েকে নিজের স্কুলেই ভরতি করেছিলেন তিনি ৷ বরাবরই মেধাবী ছাত্রী রোজা স্কুলের পরীক্ষায় ভালোই ফল করত ৷ এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় সে ৷ ফলপ্রকাশের পর দেখা যায় 681 নম্বর পেয়ে স্কুলে তার নাম সবার আগে রয়েছে ৷ কিন্তু মাত্র 2 নম্বরের জন্য মেধাতালিকায় নাম ওঠেনি ৷ খানিকটা মুষড়ে পড়েছিল সে ৷ আব্বাকে জানিয়েছিল, ইংরেজি আর ইতিহাসে আরও বেশি নম্বর পাওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু যেমন পরীক্ষা দিয়েছিল সেইমতো নম্বর পায়নি সে ৷ এরপরই ওই দু'টি বিষয়ের খাতা রিভিউ-এর জন্য পর্ষদে আবেদন জানায় রোজা ৷ বুধবার সেই ফল প্রকাশিত হয়েছে ৷ দু'টি বিষয়েই তার তিন নম্বর করে বেড়েছে ৷ এর ফলে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর বেড়ে হয়েছে 687 ৷ মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে সে ৷ একইসঙ্গে নতুন তালিকা অনুযায়ী মালদা জেলাতেও সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক রোজা ৷ রিভিউ-এর ফলপ্রকাশের পর এখন বাংলায় তার প্রাপ্ত নম্বর 96, ইংরেজিতে 98, অঙ্কে 99, ভৌতবিজ্ঞানে 98, জীবনবিজ্ঞানে 98, ইতিহাসে 99 ও ভূগোলে 99 ৷
চণ্ডীপুর হাইস্কুল থেকে এর আগে কোনও পরীক্ষার্থী মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় ঠাঁই পাওয়া তো দূরের কথা জেলাতেও প্রথম হতে পারেনি ৷ স্বাভাবিকভাবেই রোজার জন্য গর্বিত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷ প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলি বলছেন, "রোজা শুধু তার নিজের কিংবা পরিবারের নয় আমাদের মাথাটাও অনেক উঁচুতে তুলে দিয়েছে ৷ এই প্রথম আমাদের স্কুল থেকে কেউ রাজ্যে এমন সাফল্য পেল ৷ ওকে প্রশংসা জানানোর ভাষা নেই ৷ স্কুল খুললেই রোজাকে আমরা সংবর্ধনা দেব ৷" একই বক্তব্য স্কুলের শিক্ষক গৌতম বেরা, আবদুর রশিদ, সুজিত মণ্ডলদেরও ৷
রোজা বলছে, "মাধ্যমিকের প্রকাশিত ফলে যখন দেখলাম 681 পেয়েছি তখন খানিকটা আশ্চর্য হয়েছিলাম ৷ আমি আরও বেশি নম্বর আশা করেছিলাম ৷ বিশেষ করে ইংরেজিতে 98 নম্বর পাওয়ার কথা ভেবেছিলাম ৷ এরপরই আমি ইংরেজি ও ইতিহাসের খাতা রিভিউ করার আবেদন জানাই ৷ গতকাল তার ফলপ্রকাশ হলে দু'টি বিষয়েই নম্বর বেড়েছে ৷ এখন আমার প্রাপ্ত নম্বর 687 ৷ আমি খুশি ৷ আমি ভবিষ্যতে অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স নিয়ে পড়তে চাই ৷"
রোজার আব্বা আনসার আলি বলেন, "মেয়ের এই সাফল্যে অভিভাবক হিসেবে আমরা যে খুশি হব তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ আমরা সবাই চেয়েছিলাম রোজা বড় হয়ে মেডিকেল লাইনে পড়াশোনা করুক ৷ কিন্তু মেয়ের ইচ্ছে সে অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স নিয়ে পড়বে ৷ আমরা সবাই তার ইচ্ছাকে সম্মান জানাচ্ছি ৷ সে যা চাইবে, সেটাই হবে ৷"