মালদা, 24 জুন : অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ ৷ গতকাল ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার দৌলতনগর এলাকায় ৷ আক্রান্ত পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করা হয়েছে ৷ এই ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু অস্ত্র ৷ এলাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট ৷ পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ৷
জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে রবিবার দুপুর থেকে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার দৌলতনগর এলাকা ৷ স্থানীয় হাতিছাপা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় গ্রাম্য চিকিৎসক নাইমুল হক এলাকারই বোরনাহী গ্রামের এক প্রান্তে বাড়ি তৈরির জন্য কিছু জমি কেনেন ৷ কিন্তু সেই জমিতে বাড়ি করতে দেওয়া হবে না বলে ওই গ্রামের কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছিল বলে অভিযোগ ৷ যদিও তাদের হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে নাইমুল সাহেব ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে দেন ৷ তারই জেরে রবিবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় বেশ কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী ৷ তারা নাইমুল সাহেবের বোন, ছেলে ও পুত্রবধূর উপর হামলা চালায় ৷ বর্তমানে তিনজনই মালদা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ৷ এই ঘটনায় মোট 15 জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নাইমুল সাহেব ৷ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷
সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গতকাল দুপুরে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে হাতিছাপা, ফতেপুর, বোরানাহী প্রভৃতি গ্রামে তল্লাশি চালায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ৷ অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন IC সঞ্জয়কুমার দাস ৷ সেই সময় ফতেপুর গ্রামে কয়েকজন দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায় ৷ তাদের লক্ষ্য ছিল IC-কে আক্রমণ করা ৷ যদিও সঞ্জয়বাবু সেই সময় খানিকটা দূরে থাকায় বেঁচে যান ৷ নটবর দাস নামে এক ASI হামলায় আহত হন ৷ তাঁর পায়ে বল্লমের আঘাত লাগে ৷ সুব্রত মণ্ডল নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের পিঠে হাঁসুয়ার কোপ পড়ে ৷ তিনিও গুরুতর আহত হন ৷ খবর পেয়ে পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থানে যান চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সজলকান্তি বিশ্বাস ৷ তাঁর নেতৃত্বে শুরু হয় ধরপাকড় অভিযান ৷ তাতেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বলেন, “গত রবিবার এই এলাকায় একটি ঘটনা ঘটে ৷ তার প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় ৷ সেই মামলায় পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এলাকায় তল্লাশি চালাতে আসে ৷ তখনই পুলিশের উপর আক্রমণ চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী ৷ তাদের হামলায় এক পুলিশ অফিসার ও একজন সিভিক ভলান্টিয়ার গুরুতর জখম হয়েছেন ৷ তাঁদের ভালুকা গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে ৷ পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে ৷ এলাকায় পুলিশি টহলদারি চলছে৷ বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেটও ৷”