মালদা, 3 অক্টোবর : জমি বিবাদের জেরে এক যুবককে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁরই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে । ওই ঘটনার জেরেই আবার অভিযুক্তের বাড়িতে পুলিশের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়দের একাংশ ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ । পাল্টা অভিযোগ, আক্রান্ত পরিবারের শত্রুপক্ষই একাজ করে পুলিশের উপর দোষ চাপাচ্ছে ৷ গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে রতুয়া-1 ব্লকের চাঁদমণি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোরাক্ষা গ্রামে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশি টহল চলছে ।
গোরাক্ষা গ্রামের বাসিন্দা সানাউল্লা হক ও ইসলাম হক সম্পর্কে দুই ভাই । শনিবার দুপুরে জমিতে গাছের ডাল রাখাকে কেন্দ্র করে সানাউল্লা ও ইসলামের সঙ্গে বচসা বাধে । বচসার জেরে হাতাহাতির ঘটনায় গুরুতর জখম হন সানাউল্লার ছেলে কাওসার আলি (35) । স্থানীয়রা কাউসারকে আড়াইডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন । শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করা হয় সন্ধ্যা নাগাদ । রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় কাওসারের । এই ঘটনায় শনিবার রাতেই কাওসারের বাবা সানাউল্লা ইসলাম হক-সহ তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ । ইসলাম-সহ বাকি অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় ইসলামের পরিবারের চার মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ ।
এদিকে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযুক্তের বাড়ির সামনে রাতে পুলিশি পিকেট বসানো হয় । রবিবার ভোরে কেউ বা কারা অভিযুক্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ৷ দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বাড়ি । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একটি ইঞ্জিন ৷ প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে । এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্তের বাড়িতে পুলিশই আগুন লাগিয়েছে । যদিও পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে । ঘটনাস্থলে যান চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল ও রতুয়া থানার আইসি সুবীর কর্মকার । তাঁদের নির্দেশে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী ।
ঘটনাপ্রসঙ্গে রতুয়া থানার আইসি জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ হাস্যকর । আজ সকালে গ্রামের কিছু মহিলা সেখানে জড়ো হয়েছিলেন । তাঁদের উসকানিতে সেখানকার কিছু দুষ্কৃতী অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে । তারা নিজেদের বাঁচাতে পুলিশের নাম বলছে । এলাকায় যাতে আর কোনও অশান্তি না হয়, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য সেখানে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছিল । কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে তা জানতে তদন্ত চলছে । যারা আগুন লাগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । বাকিদের খোঁজ চলছে ।
আরও পড়ুন : Liluah Murder : বাবা-মা এবং মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার, তীব্র চাঞ্চল্য লিলুয়ার বেলগাছিয়ায়