ETV Bharat / city

Cerebral Palsy Patient: দিন আনি দিন খাই পরিবারের ছেলে সেরিব্রাল পালসি-তে আক্রান্ত, পাশে দাঁড়ালেন বিডিও - Mamata Banerjee Government

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন সেরিব্রাল পালসি-তে (Cerebral Palsy Patient) আক্রান্ত মৃণাল ৷ কিন্তু চিকিৎসার যা খরচ, তা চালানোর ক্ষমতা নেই দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর ৷

http://10.10.50.85:6060/reg-lowres/25-November-2021/wb-mld-01-bdo-beside-cerebral-palsy-boy-7203520_25112021150714_2511f_1637833034_208.mp4
সেরিব্রাল পালসি আক্রান্তের পাশে দাঁড়ালেন বিডিও।
author img

By

Published : Nov 26, 2021, 10:02 PM IST

মালদা, 25 নভেম্বর: দিন আনি দিন খাই অবস্থা পরিবারের ৷ অথচ ছেলে এমন রোগে আক্রান্ত যে, চিকিৎসার খরচের বহর অনেক ৷ ডাক্তার-বদ্যি করতে তাই দরজায় দরজায় ঘুরেছেন মা-বাবা ৷ একটু সাহায্যের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেছেন পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে ৷ কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে সব জায়গা থেকে ৷ শেষমেশ অসহায় পরিবারের সহায় হলেন ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) (Malda BDO Helps Cerebral Palsy Patient) ৷ পরিবারটিকে সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি, অসুস্থ ছেলেটির পড়াশোনা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে দিলেন বিডিও ৷

মালদা জেলার চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের অলিহণ্ডা অঞ্চলের শীতলপুর গ্রামে কোনও রকমে সংসার চলে দবিরুদ্দিন শেখ এবং নুরবানু বিবির ৷ এত সময় বিদ্যুৎ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন দবিরুদ্দিন ৷ কিন্তু কয়েক বছর আগে, বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে আঘাত পান দবিরুদ্দিন ৷ তার পর থেকেও আজও হাত ঠিক হয়নি তাঁর ৷ তাই পুরনো কাজে আর ফেরার উপায় নেই ৷ এর, ওর জমিতে খেটেই দু’পয়সা রোজগার করেন ৷ সংসারের হাল ধরতে স্ত্রী নুরবানুও কৃষিশ্রমিকের কাজ বেছে নিয়েছেন ৷ ছোট ছেলেকেও সঙ্গে করে কাজে নিয়ে যান তিনি ৷

এ ভাবে মোটামুটি চলে যায় দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর সংসার ৷ কিন্তু তাঁদের দুশ্চিন্তার কারণ বড় ছেলে মৃণাল আলি ৷ বয়স 15 ছাড়িয়ে গেলেও, এখনও পরিষ্কার করে কথা বলতে পারে না সে ৷ চলাফেরার শক্তিও নেই তেমন ৷ এমনকি খেতেও পারে না ৷ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন সেরিব্রাল পালসি-তে (Cerebral Palsy Patient) আক্রান্ত মৃণাল ৷ কিন্তু চিকিৎসার যা খরচ, তা চালানোর ক্ষমতা নেই দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর ৷ বহু চেষ্টা করেও আর্থিক সাহায্য জোগাড় করতে পারেননি তাঁরা ৷

আরও পড়ুন: Bengali Service in Post Office : পোস্ট অফিসে বাংলা ভাষায় পরিষেবার দাবিতে ডেপুটেশন বাংলা পক্ষর

তবে সব জানতে পেরে নিজে থেকেই তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন, ‘‘মৃণাল আমার সঙ্গে দেখা করেছে ৷ সে সেরিব্রাল পালসির রোগী ৷ কিছু সাহায্য করেছি ৷ যাতে দ্রুত সরকারি ভাতা পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ যাতে পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য সব রকম ভাবে সাহায্য করা হবে ৷ ওর চিকিৎসার জন্য চাঁচল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার ৷’’

দিন আনি দিন খাই পরিবারের ছেলে সেরিব্রাল পালসি-তে আক্রান্ত, পাশে দাঁড়ালেন বিডিও

মৃণালের বক্তব্য, ‘‘আমার হাতে-পায়ে জোর নেই ৷ হাঁটাচলে করতে পারি না ঠিক মতো ৷ কাজ তো করতে পারিই না, খেতেও পারি না ৷ মুখে তুলতে গেলেই পড়ে যায় ৷ বাবা অসুস্থ ৷ মা-ভাই জমিতে কাজ করে ৷ পঞ্চায়েত প্রধানকে অনেক বার বলেছি ৷ কিন্তু লাভ হয়নি ৷ তাই বিডিও-র কাছে এলাম ৷ উনি কিছু ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ৷’’

দবিরুদ্দিনের বক্তব্য, “ছেলেটার হাত-পায়ে জোর নেই ৷ হাঁটতে পারে না, খেতে পারে না ৷ বার বার পড়ে যায় ৷ তবু মাদ্রাসা যায় রোজ ৷ ভোটের পর সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা করেননি ৷’’

আরও পড়ুন: MLA Missing Diary : ইংরেজবাজার থানায় বিজেপি বিধায়কের নামে নিখোঁজ ডায়েরি তৃণমূলের

মৃণালদের প্রতিবেশী আরসিফা বিবির কথায়, ‘‘জন্ম থেকেই মৃণাল অসুস্থ ৷ নিজে ভাতটুকুও খেতে পারে না ৷ ওর জীবনটা কী ভাবে চলবে ? সরকার সাহায্য করলে ভাল হয় ৷’’

তবে মৃণাল এবং তার পরিবার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে হত্যে দিয়ে লাভ হয়নি বলে দাবি করলেও, এ ব্যাপারে কিছু জানেনই না বলে পাল্টা দাবি করেছেন অলিহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোয়ারা বিবি ৷ তাঁর দাবি ওই নামের কেউ তাঁর কাছে কখনও আসেনি ৷ চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের (TMC MLA Malda) কথায়, ‘‘মানুষ সমস্যায় পড়ে পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা সদস্যের কাছে গেলেও অনেক সময় তাঁদের কিছু করার থাকে না ৷ অনেক আইনগত বাধার মুখে তাঁদের পড়তে হয় ৷ বিডিও সেই সমস্যা মেটাতে পারেন ৷ তিনি আইনি সমস্যায় পড়লে এসডিও এবং এসডিও আইনি সমস্যায় পড়লে এডিএম রয়েছেন ৷ এ ভাবে আইন অনুযায়ীই কাজ হয় ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে (Mamata Banerjee Government) মানুষ সহযোগিতা পাবেন না, এটা আমরাও মেনে নেব না ৷’’ কিন্তু বিধায়কের এই দাবি মানছেন না স্থানীয়রা ৷ তাঁদের অভিযোগ, দলীয় পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্যকে আড়াল করছেন তিনি ৷

মালদা, 25 নভেম্বর: দিন আনি দিন খাই অবস্থা পরিবারের ৷ অথচ ছেলে এমন রোগে আক্রান্ত যে, চিকিৎসার খরচের বহর অনেক ৷ ডাক্তার-বদ্যি করতে তাই দরজায় দরজায় ঘুরেছেন মা-বাবা ৷ একটু সাহায্যের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেছেন পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে ৷ কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে সব জায়গা থেকে ৷ শেষমেশ অসহায় পরিবারের সহায় হলেন ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) (Malda BDO Helps Cerebral Palsy Patient) ৷ পরিবারটিকে সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি, অসুস্থ ছেলেটির পড়াশোনা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে দিলেন বিডিও ৷

মালদা জেলার চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের অলিহণ্ডা অঞ্চলের শীতলপুর গ্রামে কোনও রকমে সংসার চলে দবিরুদ্দিন শেখ এবং নুরবানু বিবির ৷ এত সময় বিদ্যুৎ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন দবিরুদ্দিন ৷ কিন্তু কয়েক বছর আগে, বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে আঘাত পান দবিরুদ্দিন ৷ তার পর থেকেও আজও হাত ঠিক হয়নি তাঁর ৷ তাই পুরনো কাজে আর ফেরার উপায় নেই ৷ এর, ওর জমিতে খেটেই দু’পয়সা রোজগার করেন ৷ সংসারের হাল ধরতে স্ত্রী নুরবানুও কৃষিশ্রমিকের কাজ বেছে নিয়েছেন ৷ ছোট ছেলেকেও সঙ্গে করে কাজে নিয়ে যান তিনি ৷

এ ভাবে মোটামুটি চলে যায় দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর সংসার ৷ কিন্তু তাঁদের দুশ্চিন্তার কারণ বড় ছেলে মৃণাল আলি ৷ বয়স 15 ছাড়িয়ে গেলেও, এখনও পরিষ্কার করে কথা বলতে পারে না সে ৷ চলাফেরার শক্তিও নেই তেমন ৷ এমনকি খেতেও পারে না ৷ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন সেরিব্রাল পালসি-তে (Cerebral Palsy Patient) আক্রান্ত মৃণাল ৷ কিন্তু চিকিৎসার যা খরচ, তা চালানোর ক্ষমতা নেই দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর ৷ বহু চেষ্টা করেও আর্থিক সাহায্য জোগাড় করতে পারেননি তাঁরা ৷

আরও পড়ুন: Bengali Service in Post Office : পোস্ট অফিসে বাংলা ভাষায় পরিষেবার দাবিতে ডেপুটেশন বাংলা পক্ষর

তবে সব জানতে পেরে নিজে থেকেই তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন, ‘‘মৃণাল আমার সঙ্গে দেখা করেছে ৷ সে সেরিব্রাল পালসির রোগী ৷ কিছু সাহায্য করেছি ৷ যাতে দ্রুত সরকারি ভাতা পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ যাতে পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য সব রকম ভাবে সাহায্য করা হবে ৷ ওর চিকিৎসার জন্য চাঁচল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার ৷’’

দিন আনি দিন খাই পরিবারের ছেলে সেরিব্রাল পালসি-তে আক্রান্ত, পাশে দাঁড়ালেন বিডিও

মৃণালের বক্তব্য, ‘‘আমার হাতে-পায়ে জোর নেই ৷ হাঁটাচলে করতে পারি না ঠিক মতো ৷ কাজ তো করতে পারিই না, খেতেও পারি না ৷ মুখে তুলতে গেলেই পড়ে যায় ৷ বাবা অসুস্থ ৷ মা-ভাই জমিতে কাজ করে ৷ পঞ্চায়েত প্রধানকে অনেক বার বলেছি ৷ কিন্তু লাভ হয়নি ৷ তাই বিডিও-র কাছে এলাম ৷ উনি কিছু ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ৷’’

দবিরুদ্দিনের বক্তব্য, “ছেলেটার হাত-পায়ে জোর নেই ৷ হাঁটতে পারে না, খেতে পারে না ৷ বার বার পড়ে যায় ৷ তবু মাদ্রাসা যায় রোজ ৷ ভোটের পর সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা করেননি ৷’’

আরও পড়ুন: MLA Missing Diary : ইংরেজবাজার থানায় বিজেপি বিধায়কের নামে নিখোঁজ ডায়েরি তৃণমূলের

মৃণালদের প্রতিবেশী আরসিফা বিবির কথায়, ‘‘জন্ম থেকেই মৃণাল অসুস্থ ৷ নিজে ভাতটুকুও খেতে পারে না ৷ ওর জীবনটা কী ভাবে চলবে ? সরকার সাহায্য করলে ভাল হয় ৷’’

তবে মৃণাল এবং তার পরিবার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে হত্যে দিয়ে লাভ হয়নি বলে দাবি করলেও, এ ব্যাপারে কিছু জানেনই না বলে পাল্টা দাবি করেছেন অলিহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোয়ারা বিবি ৷ তাঁর দাবি ওই নামের কেউ তাঁর কাছে কখনও আসেনি ৷ চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের (TMC MLA Malda) কথায়, ‘‘মানুষ সমস্যায় পড়ে পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা সদস্যের কাছে গেলেও অনেক সময় তাঁদের কিছু করার থাকে না ৷ অনেক আইনগত বাধার মুখে তাঁদের পড়তে হয় ৷ বিডিও সেই সমস্যা মেটাতে পারেন ৷ তিনি আইনি সমস্যায় পড়লে এসডিও এবং এসডিও আইনি সমস্যায় পড়লে এডিএম রয়েছেন ৷ এ ভাবে আইন অনুযায়ীই কাজ হয় ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে (Mamata Banerjee Government) মানুষ সহযোগিতা পাবেন না, এটা আমরাও মেনে নেব না ৷’’ কিন্তু বিধায়কের এই দাবি মানছেন না স্থানীয়রা ৷ তাঁদের অভিযোগ, দলীয় পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্যকে আড়াল করছেন তিনি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.