মালদা, 14 মে : বৈশাখের শেষপর্ব ! পুরাতন মালদা মেতে উঠেছে গম্ভীরা উৎসবে । 28 বৈশাখ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হবে আগামীকাল । আজ সকাল থেকে মুখানাচে মেতে ওঠে গোটা শহর । এই উৎসবকে পর্যটনে শামিল করার আহ্বান জানাচ্ছেন গম্ভীরা শিল্পীরা (Gambhira Festival starts in Malda)।
গম্ভীরা মালদা জেলার অন্যতম লোক সংস্কৃতি (Gambhira Festival)। গম্ভীরা মানে শিব বন্দনা । কিন্তু এই উৎসবের সঙ্গে একাত্ম হয়ে রয়েছেন দেবী কালী ও চামুণ্ডা । বৈশাখের শেষ চারদিন প্রতি বছর পুরাতন মালদা পৌর এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় গম্ভীরা উৎসব । এই উৎসবে যোগ দিতে বাইরে থাকা এলাকার মানুষজনও ঘরে ফিরে আসেন । যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে গম্ভীরা উৎসব (Gambhira Dance) ।
মালদা জেলায় গম্ভীরা আর পুরাতন মালদা যেন সমার্থক । বলছিলেন গম্ভীরাশিল্পী রবিশঙ্কর ঘোষ । গম্ভীরা উৎসবের যাবতীয় তত্ত্ব জানালেন তিনি । তিনি বলেন, "এই লোক সংস্কৃতি আবহমান ধরে চলে আসছে । তবে এখন পুরাতন মালদা পৌর এলাকায় নতুন আঙ্গিকে গম্ভীরা উৎসব পালিত হচ্ছে । এভাবেই আমরা এই শিল্পকে ধরে রেখেছি । 28 বৈশাখ বিভিন্ন মন্দিরে ঘট ভরা দিয়ে এই উৎসবের শুরু । পরদিন সকালে এখানে কাঁটানৃত্য আয়োজিত হয় । নাচের তালে নিজেদের গায়ে গাছের কাঁটা বেঁধায় সবাই । 30 বৈশাখ ভোর সাড়ে চারটেয় শুরু হয় মা চামুণ্ডার মুখানৃত্য । তারপর মশানগড়া এবং মুখানাচ । এরপরেই প্রতিটি মুখা তার নিজস্ব মন্দিরে চলে যায় । সেখানে শুরু হয় আহারা অর্থাৎ কালীপুজো । রাতেও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয় । শেষদিন অর্থাৎ 31 বৈশাখ বিকেলে হবে ছদ্মবেশ ধারণ । পুরাতন মালদা পৌরসভার মূলত 3, 4 ও 5 নম্বর ওয়ার্ডে এই আসর বসে । রাতে হবে গম্ভীরা গান ও নাচ । কয়েক বছর ধরে গম্ভীরা নিয়ে পথনাটকও করা হচ্ছে । এবার তিনটি দল পাঁচটি পথনাটক করবে । আমাদের দলও একটি নাটক করবে ।"
তিনি আরও বলেন, "মাসখানেক আগে আমরা পৌরসভাকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানাই, গম্ভীরা উৎসবে পৌরসভার তরফে যদি কয়েকটি তোরণ তৈরি করা হয় তবে এই উৎসব সম্পর্কে আরও বেশি মানুষ জানতে পারবেন । আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে চেয়ারম্যান তিনটি তোরণের ব্যবস্থা করেছেন । আমরা চাই, গম্ভীরা শিল্পকে কেন্দ্র করে মালদায় একটি পর্যটন গড়ে তোলা হোক । নানা জায়গার মানুষ এই উৎসব দেখতে আসুন । মানুষ যদি সঙ্গে থাকে তবেই গম্ভীরা শিল্প বেঁচে থাকবে ।"
আরও পড়ুন : Malda Gecko Recovered : পাচারের আগে মালদায় উদ্ধার দুর্লভ তক্ষক, ধৃত তিন