মালদা, 12 অক্টোবর : কী বলা যাবে একে ? মিউজ়িকাল চেয়ার ? নাকি বিধানসভা ভোটের আগে আরও একবার প্রয়াত গণি খান চৌধুরির স্মৃতিকে উসকে দেওয়া? দেড় বছর আগে যাঁকে দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ফের তাঁকেই সেই পদে বহাল করল কংগ্রেস ৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরির (ডালু মিঞা) উপরই ফের ভরসা রাখল AICC ৷ আজ AICC-র সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপালের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সেকথা জানানো হয়েছে ৷ এই খবর চাউর হতেই জেলা কংগ্রেসের অন্দরমহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা ৷ কোরোনা সংক্রমিত হয়ে আবু হাসেম খান চৌধুরি এই মুহূর্তে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা সম্পর্কিত এক মামলায় কলকাতায় রয়েছেন অপসৃত জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলমও ৷
গণি খান চৌধুরির আমল থেকেই মালদা কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত ৷ তাঁর মৃত্যুর পর এই জেলায় কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে বহাল হয়েছেন তাঁর বোন রুবি নুর, ডালু মিঞা, এমনকী মৌসম নুরও ৷ তাঁরা সবাই কোতওয়ালি ভবনেরই সদস্য ৷ এরই মধ্যে গত বছরের 4 ফেব্রুয়ারি খান চৌধুরি পরিবারের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে সেই ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলমের হাতে ৷ সম্ভবত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কোতওয়ালি ভবনের বাইরে গিয়ে এই জেলায় দলের সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা করেছিল ৷ এর পিছনে যে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের মস্তিষ্ক কাজ করেছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ সোমেনবাবুর মৃত্যুর পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে অধীররঞ্জন চৌধুরিকে৷ খান চৌধুরি পরিবারের সঙ্গে অধীরবাবুর সুসম্পর্কের কথা কারও অজানা নয় ৷ ফলে জেলা কংগ্রেসের হাতে গোনা কয়েকজন আগেই আশঙ্কা করেছিলেন, দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে মোস্তাক আলমের অপসারণ শুধুই সময়ের অপেক্ষা ৷ তাঁদের সেই আশঙ্কাই আজ সত্যি হল ৷
AICC-র সিদ্ধান্ত নিয়ে মোস্তাক সাহেব জানিয়েছেন, “দলের তরফে আমাকে এখনও বিষয়টি জানানো হয়নি ৷ তবে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে খবরটি কানে এসেছে ৷ একইসঙ্গে জানতে পেরেছি, আমাকে প্রদেশের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন কমিটিতে রাখা হয়েছে ৷ সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, আমার খানিকটা পদোন্নতিও হয়েছে ৷ তবে এসব নিয়ে আমি এখনই কোনও মন্তব্য করব না ৷”
অন্যদিকে আবু হাসেম খান চৌধুরির ছেলে বিধায়ক ইশা খান চৌধুরি বলেন, “বাবা এর আগেও দীর্ঘদিন জেলা কংগ্রেস সভাপতির পদ সামলেছেন ৷ চ্যালেঞ্জ নেওয়া তাঁর কাছে নতুন কোনও বিষয় নয় ৷ সামনেই একুশের বিধানসভার নির্বাচন ৷ শীর্ষ নেতৃত্ব হয়ত মনে করেছে, বাবার দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই নির্বাচনে জেলার 12টি আসনে জয় পাওয়া সম্ভব৷ তাই হয়তো এই সিদ্ধান্ত৷ আমাদের সবারই লক্ষ্য, বিধানসভা নির্বাচনে জেলার প্রতিটি আসনে জয় পাওয়া ৷ তার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷”
এর ফলে একই পরিবারের দুই সদস্য দুটি রাজনৈতিক দলের হয়ে জেলা সামলানোর দায়িত্ব পেলেন ৷ কোতওয়ালি ভবনের বাসিন্দা মৌসম নুর আগেই জেলা তৃণমূল সভানেত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন ৷ এবার ওই ভবনের আবু হাসেম খান চৌধুরি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি হলেন ৷