মালদা, 12 এপ্রিল : তৃতীয় দফায় 23 এপ্রিল ভোট মালদার দুই লোকসভা কেন্দ্রে। তার আগে মালদার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে অপসারণের দাবিতে আজ জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম অবজ়ারভারের কাছে লিখিত আবেদন জানান। আবেদনপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। জেলা পুলিশকে 'হিজড়া' বলেন। আর তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
নির্বাচন শুরুর আগেও জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে অপসারণের দাবিতে কমিশনে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। জেলায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তাঁদের অপসারণ চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়নি নির্বাচন কমিশন। আজ ফের একই দাবিতে মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই অবজ়ারভারের সঙ্গে দেখা করেন। একই ইশুতে ফের চিঠি দেন। পরে তিনি বলেন, "আজ আমরা নতুন সার্কিট হাউজ় এবং গৌড় ভবনে গেছিলাম। ওই দুই জায়গায় পুলিশ ও প্রশাসনিক অবজ়ারভার রয়েছেন। আমরা তাঁদের জানিয়েছি, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদা জেলায় এই জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে কী কী হয়েছে। তৃণমূলের এক মন্ত্রীর নির্দেশে গত পঞ্চায়েত নির্বাচন বাম জামানাকেও ছাপিয়ে গেছিল।" তিনি আরও অভিযোগ করেন, "পুলিশ সুপার যেহেতু সারদাকাণ্ডে যুক্ত তাই তাঁকে শাসকদলের তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করতেই হবে। আমাদের নয়, এই জেলার তৃণমূলের বক্তব্য, তাদের সভাপতি পুলিশ সুপার আর সম্পাদক জেলাশাসক। আমরা অবজ়ারভারদের বলেছি, এদের নেতৃত্বে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত কতজন দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে? কতজন দুষ্কৃতী অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে? এই তথ্য প্রতিদিন সংবাদমাধ্যমকে দিতে হবে। কিন্তু জেলাশাসক কিংবা পুলিশ সুপার সেই নির্দেশ মানছেন না। যারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে লুটতরাজ চালিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আজ জেলাশাসক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ডেকে বলছেন, ভোট দিতে হবে শাসকদলকে। আর পুলিশ সুপার সব সিভিক ভলান্টিয়ারদের OC আর IC-র মাধ্যমে জানিয়েছেন, তারা যেন জনগণকে বলে শাসকদলকে ভোট দেওয়ার কথা। না দিলে সবাইকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হবে।"
গতকাল প্রথম দফার নির্বাচন ছিল কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে। তাঁর বক্তব্য, কোচবিহারে সংবাদমাধ্যম ও পুলিশের সামনেই ভোটে লুটতরাজ হয়েছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশ সেখানে হিজড়ার মতো দাঁড়িয়েছিল। চোখের সামনে সব কিছু ঘটতে দেখেও পুলিশ চুপচাপ বসেছিল।
প্রসঙ্গত, ভোটের আগেই কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তাকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। মোস্তাকসাহেবের প্রশ্ন, "তাঁকে যদি অপসারণ করা যায় তবে মালদার পুলিশ সুপারকে অপসারণ করা যাবে না কেন? জেলাশাসককেই বা অপসারণ করা যাবে না কেন?"