মালদা, 3 ডিসেম্বর : BJP পরিচালিত সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পর BJP-কংগ্রেস জোট পরিচালিত মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত ৷ বাংলা আবাস যোজনায় এবার পুরাতন মালদার এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল ৷ এ নিয়ে আজ তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী ৷ জানিয়ে দিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি এই অভিযোগের তদন্ত হবে ৷ তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার উপযুক্ত শাস্তি হবে ৷ যদিও গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান এই ঘটনায় রাজনৈতিক অভিসন্ধির অভিযোগ তুলেছেন ৷ দাবি করেছেন, তাঁরা নির্দোষ ৷ এমন কোনও ঘটনা তাঁর পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটেনি ৷
এলাকার বাসিন্দা, পুরাতন মালদা ব্লক তৃণমূল মনিটারিং কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ ঘোষাল এ প্রসঙ্গে বলেন, "আজ আমরা নলডুবি এলাকার মানুষজন ব্লক অফিসে এলাকার বাংলা আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ জানাতে এসেছি ৷ বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে BJP ও কংগ্রেস পরিচালিত মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড দুর্নীতি চালাচ্ছে ৷ পঞ্চায়েত বোর্ডের সদস্যরা বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে অবৈধভাবে গরিব মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন, কাটমানি যে নিচ্ছে সে অপরাধী ৷ অথচ তারপরও গরিব মানুষের কাছ থেকে তারা কাটমানি নিয়ে নিজেদের পকেটে ভরছে ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, নলডুবি এলাকায় যারা রেলের জমিতে বসবাস করে, তাদের ভুল বুঝিয়েও 30-50 হাজার টাকা কাটমানি নিচ্ছে ৷ অথচ নিজেদের জায়গা না থাকলে কেউ বাংলা আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার অধিকারী নয় ৷ আমাদের সন্দেহ, এ নিয়ে আগামীতেও দুর্নীতি চলতে থাকবে ৷ তাই আজ আমরা প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷"
অভিযোগ পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভানেত্রী মৃণালিনী মণ্ডল মাইতি ৷ তিনি বলেন, "আজই অভিযোগ পেলাম মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নলডুবি এলাকার সদস্য বাংলা আবাস যোজনায় দুর্নীতি করে টাকা তুলেছে ৷ সেখানে উপভোক্তারা ঠিকমতো টাকা পাচ্ছে না ৷ বাড়ি তৈরি করতেও পারছে না ৷ আমরা এ নিয়ে তদন্ত করছি ৷ তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে কড়া আইননত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ বাংলা আবাস যোজনায় কোনও দুর্নীতি আমরা কোনও মতেই বরদাস্ত করব না ৷"
এ দিকে মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান রিপন বর্মণ গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক অভিসন্ধির অভিযোগ তুলেছেন ৷ তিনি বলেন, "আজ যারা অভিযোগ জানাতে গেছে তারা সবাই তৃণমূলের ৷ কেউ সাধারণ মানুষ নয় ৷ আমি কংগ্রেসের বলেই এরা আমাকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে ৷ গরিব মানুষ ঘর পাচ্ছে ৷ এতে আমাদেরও ভালো লাগছে ৷ আমি যদি ঘরের জন্য কারও কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকি তবে আইন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক ৷ আমি প্রশাসনিক তদন্তকে স্বাগত জানাচ্ছি ৷"