মালদা, 19 অগস্ট : করোনার তৃতীয় ঢেউ এখনও আসেনি । বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা মতো শিশুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না । কিন্তু এই মুহূর্তে শিশুরা মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোমে (Multisystem inflammatory syndrome in children- MIS-C) আক্রান্ত হচ্ছে । এই ঘটনাই ভাবাচ্ছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের । সেকথা স্পষ্ট করেছেন মালদা মেডিক্যালের শিশু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সুষমা সাহু । জানাচ্ছেন, এমআইএস-সিতে (MIS-C) আক্রান্ত হয়ে এই মুহূর্তে 20-22টি শিশু মেডিক্যাল ভর্তি রয়েছে ।
শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, "মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে বাচ্চাদের বাবা-মা কিংবা বাড়ির লোকজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন । সেই সময় অনেক বাচ্চাই তাদের বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে এসেছিল । কিন্তু বাচ্চাদের মধ্যে সেই সময় করোনার কোনও উপসর্গ ধরা পড়েনি । উপসর্গ না থাকায় তাঁদের করোনা পরীক্ষাও করা হয়নি । কিন্তু এখন সেই বাচ্চাদের মধ্যে জ্বর, চোখ লাল হওয়া, ঠোঁট ও জিভ লাল হওয়া, গায়ে রাশ তৈরি হওয়ার মতো কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে । তার সঙ্গে রয়েছে কাশি, দ্রুত শ্বাস নেওয়া বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ । এসবই এমআইএস-সি (MIS-C) সিনড্রোম । এমন উপসর্গ থাকায় শিশুরা খেতে পারছে না, ঢোঁক গিলতে কষ্ট হচ্ছে, মায়ের বুকের দুধ টানতে পারছে না । অনেক বাচ্চার পেটে ব্যথা, বমি কিংবা পাতলা পায়খানাও হচ্ছে । অনেক বাচ্চার মধ্যে মস্তিষ্ক কিংবা স্নায়ুঘটিত সমস্যাও দেখা যাচ্ছে । অনেকের খিঁচুনি হচ্ছে । দু-একটি ওষুধ দিলেও কাজ হচ্ছে না । এই ধরনের একাধিক উপসর্গ নিয়ে বাচ্চারা মেডিক্যালে আসছে । সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করা গেলে কিংবা চিকিৎসা হলে বাচ্চা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে ।"
চিকিৎসক আরও বলেন, "এমন উপসর্গ থাকলেই বাচ্চাদের করোনা হয়েছে তা বলা যাবে না । এটা করোনা পরবর্তী ক্লিনিক্যাল সিনড্রোম । এটা দ্বিতীয় ঢেউয়েরই প্রভাব । ভাবা হয়েছিল, করোনার তৃতীয় ঢেউ বাচ্চাদেরই বেশি আক্রমণ করবে । আমরা তার জন্য প্রস্তুতও রয়েছি । যেহেতু বাচ্চাদের এখনও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি, তাই তারাই বেশি আক্রান্ত হতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছিল । কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাচ্চাদের মধ্যে করোনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি না । মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোমেই এখন বাচ্চারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে । মালদায় এখন 20-20টি বাচ্চা এসব উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে । গত একমাসে আমরা এই ধরনের উপসর্গ থাকা বাচ্চাই বেশি পাচ্ছি । এই রোগ মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য দফতর যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে । আমরা চিকিৎসার যাবতীয় সরঞ্জাম ও ওষুধপত্র সরকারের তরফে পাচ্ছি ।"
আরও পড়ুন : তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি , মালদা মেডিকেলের কোভিড ইউনিটে চালু চাইল্ড ওয়ার্ড