কলকাতা, 12 জুলাই: যুব কংগ্রেসের সভাপতি, সম্পাদক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠল দলের অন্দরেই (Youth Congress Membership)৷ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে আগামীতে হতে চলেছে এই নির্বাচন ৷ আর এই প্রক্রিয়ায় একজনকে দিয়ে একাধিক আবেদনের মাধ্যমে ফলস ভোটিং করানোর অভিযোগ উঠেছে ৷ এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ ঘটে রাজ্যজুড়ে যুব কংগ্রেস সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দেড় লাখেরও বেশি আবেদন জমা পড়ায় ৷ হাইকম্যাান্ডের কাছে এই নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা (Youth Congress workers lodge complaint)৷
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য পদ অভিযানে লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বিধান ভবন । অথচ, তার পরপরই যুব সদস্য সংগ্রহ অভিযানে লক্ষ্যের গণ্ডি পেরনোয় হইচই পড়ে যায় । অনলাইনে যুব কংগ্রেস সদস্য সংগ্রহ অভিযানে রাজ্যজুড়ে প্রায় 1 লাখ 55 হাজার আবেদন জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর । যদিও তা নিয়ে এখন ডামাডোল শুরু হয়েছে দলেরই অন্দরে । কারণ, এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে আগামীতে রাজ্য যুব কংগ্রেসে কে সভাপতি হবেন, কে সম্পাদক হবেন তার নির্বাচন হবে । এই নির্বাচনেই দলের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে (Complaint with Congress high command)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুব রাজ্য সভাপতি পদপ্রার্থীর অভিযোগ, "বহু জেলাতে একজনকে দিয়ে একাধিক আবেদনের মাধ্যমে ভোট করানো হয়েছে । টাকার বিনিময়ে ভোট কেনা হয়েছে । এই অভিযোগের সুরাহা পেতে ইতিমধ্যে আমি-সহ দুই তিন জন প্রতিযোগী দিল্লিতে মেইল মারফত তদন্তের জন্য দরবার করেছি । যাতে 1 লাখ 55 হাজার আবেদনেরই পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য যাচাই করা হয় । তবেই ফলস ভোটিং যে হয়েছে, তা প্রমাণ হয়ে যাবে ।"
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, এ বছরই প্রথম অনলাইনের মাধ্যমে যুব কংগ্রেস সদস্যপদ সংগ্রহ অভিযান চলে 25 জুন থেকে 3 জুলাই পর্যন্ত । 1 লাখ 55 হাজার আবেদনকারী একইসঙ্গে রাজ্য যুব সভাপতি, জেলা যুব সভাপতি কে হবেন তা নির্ধারণে ভোট দিয়েছেন । টাকার বিনিময়ে প্রভাবিত হয়ে সেই ভোটদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ ।
আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গেল, রাজ্যজুড়ে দেড় লক্ষেরও বেশি ছাত্র-যুব সদস্য সংগ্রহ কংগ্রেসের
অভিযোগ এখানেই শেষ নয় । কংগ্রেসের সদস্য সংগ্রহ অভিযান ও ভোট করানোর নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে একাধিক জেলার প্রদেশ সভাপতিরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট করানোর নিদান দিয়েছেন । মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি জয়ন্ত দাসের এমনই নির্দেশ হাতে পেয়েছে ইটিভি ভারত । যদিও মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতির এই নির্দেশের সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত । এই নির্দেশে লেখা আছে, আসন্ন যুব কংগ্রেস নির্বাচনে এক জন ভোটার 4 জনকে ভোট দিতে পারবেন । নির্দেশানুসারে, রাজ্য ও যুব সভাপতি হিসাবে সাইনা জাভেদ, জেলা যুব সভাপতি পদে সুমন সাহা ও ব্লক যুব সভাপতি পদে নিজের পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ।"
গোটা অভিযোগের বিষয়ে যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর সরকার বলেন, "কংগ্রেসের নির্বাচন কমিশনার বা যে ফোরাম আছে, সেখানে অভিযোগ জানানো যায় । সেই অভিযোগের তদন্ত হয় । তারপরও যদি অভিযোগকারীদের মনে হয় তদন্ত সঠিক হয়নি, তাহলে তাঁরা পরে আরও উচ্চতর তদন্তের জন্য দলীয় স্তরে আবেদন জানাতে পারেন ।"