কলকাতা, ২৮ মার্চ : পাশে আছি। বার্তাটা নানাভাবে দিতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। তারই অঙ্গ হিসেবে অভিনব ভাবনা নিউ আলিপুর থানার। এবার এই থানা এলাকায় মানুষের জন্য বাজার পৌঁছে দেবে পুলিশ। শুধু ফোন করলেই হল। লকডাউনের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য বাজারে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। যার ফলে বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। বাজারে যাতে ভিড় বেশি না হয়, তার জন্য কী করা যায় ? সেই ভাবনা ছিল নিউ আলিপুর থানার আধিকারিকদের মনে। সেই সূত্র ধরেই নেওয়া হল অভিনব ব্যবস্থা।
থানার পক্ষ থেকে কথা বলা হয় বাজারের বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিক্রেতাদের সঙ্গে। তৈরি করা হয় একটি তালিকা। যে তালিকায় রয়েছে চাল, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, তেল, মুদিখানার জিনিসপত্র, ডিম, মাছ-মাংস। সেই তালিকা অনুযায়ী তৈরি করা হয় ফোন নাম্বারের লিস্ট। এই লিস্ট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে নিউ আলিপুরের বাসিন্দাদের কাছে। তাঁদের পছন্দমতো দোকানদারকে দিচ্ছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অর্ডার। অর্ডার দিয়ে দিতে হবে সন্ধ্যে সাতটার মধ্যে। কোন বিক্রেতাকে সেই অর্ডার দেওয়া হল তা পুলিশকে জানাতে হবে চারটি নির্দিষ্ট নম্বরে। সঙ্গে দিতে হবে নিজের বাড়ির ঠিকানা এবং ফোন নম্বর। তবে কোনওভাবেই এক ব্যাগের বেশি জিনিস অর্ডার করতে পারবেন না মানুষজন। আবার ন্যূনতম ১০০০ টাকার জিনিস কিনলেই পাওয়া যাবে পরিষেবা। মানুষজনের অর্ডার করা জিনিসপত্র দোকানদারেরা একটি ব্যাগের মধ্যে গুছিয়ে রাখবেন। সকাল দশটার মধ্যে পুলিশের টিম ওই জিনিসপত্র পৌঁছে দেবে প্রত্যেক বাড়িতে।
এপ্রসঙ্গে থানার এক আধিকারিক বলেন, “ যেমনভাবে বাজারের ভিড় কমানো আমাদের উদ্দেশ্য, একইভাবে ভাবনাতে ছিল আরও কয়েকটি বিষয়। ইদানিং প্রবণতা দেখা যাচ্ছে প্রচুর জিনিসপত্র কিনে ফেলার। তার জেরে বাজারে জিনিসপত্রের কৃত্রিম অভাব তৈরি হচ্ছে। আমাদের বার্তা, এক ব্যাগের বেশি জিনিস কিনতে পারবেন না কেউ । এর ফলে মানুষের বেশি কেনার প্রবণতা কমবে। আবার উলটোদিকে সুযোগ বুঝে কিছু দোকানদার বেশি দাম নিচ্ছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ সরাসরি যুক্ত থাকায় সেই অভিযোগ করার সুযোগ অনেকটাই কমবে। সবদিক ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত।"
নিউ আলিপুর থানার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।