কলকাতা, 2 মে: সুন্দরবন কুমিরমারি অঞ্চলের বিধবা পাড়ার একাধিক মহিলা গত এক বছর ধরে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন না । COVID -19 -র জন্য গোটা দেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে সেই সংকটে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন কুমিরমারি অঞ্চলের বিধবা পাড়ার একাধিক স্বামীহারা মহিলা।
অভিযোগ, দক্ষিণ 24 পরগনার জেলা শাসককে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না।এই সংকটে প্রশাসন তাঁদের ক্ষতিপূরণের টাকা গুলো দিয়ে দিলে তাঁরা বাচার রসদ পাবেন।
আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরি জানান, সুন্দরবন কুমিরমারি অঞ্চল কয়েকশো বিধবা মহিলা রয়েছেন যাঁদের স্বামী বাঘের আক্রমণে মারা গেছেন। আইন অনুযায়ী সুন্দরবন বাফার জোনে যদি কেউ বাঘের হামলায় মারা যান, তাহলে তাঁর নিকট আত্নীয়রা 2 লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। কিন্ত এখানকার বিধবা মহিলারা স্থানীয় প্রশাসন থেকে উপর মহল পর্যন্ত অনেক আর্জি জানিয়েও কিছু পাননি।
বেশ কয়েকজন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এরকম দুজন হলেন- পুষ্প মণ্ডল ও পারুল মণ্ডল। পুষ্পর স্বামী মতীন্দ্র মন্ডল 2017 সালের 6 জুন রায়মঙ্গল নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা যান।অন্যদিকে, পারুল মণ্ডলের স্বামী মনোরঞ্জন মণ্ডল গত 2015 সালে 19 ডিসেম্বর ভোরবেলা মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা যান। এই দুজনের বাড়ির লোক গত বছর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন । বিচারপতি দেবাংশু বসাক তাঁর নির্দেশে এদেরকে এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।কিন্ত সেই পর্যন্ত। সরকার এখনও পর্য়ন্ত এঁদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়নি।
এঁদের প্রত্যেকেরই সন্তান সন্ততি রয়েছে। গোটা দেশে যে লকডাউন চলছে তাতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা এখন রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত তিনদিন আগে আইনজীবী মারফত এই দুই মহিলা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা শাসককে ই-মেলের মাধ্যমে তাঁদের দাবি জানিয়েছিলেন । কিন্ত জেলা শাসক কোনও উত্তর দেননি। তাঁরা অত্যন্ত কাতর আবেদন জানিয়েছেন, প্রশাসন যাতে তাঁদের প্রাপ্য টাকাগুলো দেওয়ার ব্যবস্থা করে ।
পুরো সুন্দরবন অঞ্চলকে প্রশাসন দুই ভাগে ভাগ করেছে। একটা হচ্ছে, কোর এরিয়া। আর দুই হচ্ছে, বাফার জোন।কোর এরিয়াতে লোকজনের প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ। অপর দিকে বাফারজোনে মাছ ধরে, মধু সংগ্রহ করে সেখানকার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। এখানেই মাছ ধরতে গিয়েই বাঘের হানায় প্রাণ হারান বহু মানুষ। কিন্তু বছর পেরোলেও পরিবারের কাছে ক্ষতিপূরণের টাকা এলসে পৌঁছাচ্ছে না ৷