কলকাতা, 17 জুন : বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Baisakhi Banerjee) নিজের সমস্ত সম্পত্তি দান করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) ৷ আইন অনুযায়ী তিনি সেটা করতেই পারেন ৷ কিন্তু তাঁর এই সিদ্ধান্তের পিছনে কি কোনও অভিসন্ধি আছে ? বুধবার সম্পত্তি দানের খবর সামনে আসার পর থেকে এই প্রশ্নই ঘুরছে বিভিন্ন মহলে ৷
বৃহস্পতিবার সকাল হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যায় যে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এই সম্পত্তি দানের পদক্ষেপ অত্যন্ত হিসেব কষে করা ৷ কারণ, এতে নাকি তিনি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেকট বা ইডির (ED) হাতে বাজেয়াপ্ত হওয়ার থেকে নিজের সম্পত্তি বাঁচিয়ে নিলেন ৷
যদিও আইনজীবীরা সরাসরি এই ধরনের যুক্তিকে খারিজ করে দিয়েছেন ৷ তাঁদের বক্তব্য, এটা কখনও হতে পারে না ৷ ইডি চাইলেই ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারে ৷ এতে তাদের কোনও আইনি বাধার মুখে পড়তে হবে না ৷ আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য, ডাকাতি করার পর সেই টাকা কেউ দান করে দিলে তো আর দায়ভার কমে যায় না ৷
আরও পড়ুন : Narada Case: মার্চ থেকে শোভন রাজনীতিতে নেই, নারদ মামলায় সওয়াল আইনজীবীর
শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন যে বন্ধুত্বের অধিকার থেকে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ কিন্তু এতে কি তিনি নিজেই বিপদে ফেলে দিলেন না বান্ধবী বৈশাখীকে ? উঠছে সেই প্রশ্নও ৷
আরেক আইনজীবী অরুণাংশু চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, এতে বৈশাখীর বিপদে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে ৷ কারণ, দান করা সম্পত্তি নিয়ে এবার কাঁটাছেঁড়া শুরু হবে ৷ শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন বিজেপির (BJP) থেকে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে এবার আয়কর দফতরও সক্রিয় হতে পারে ৷ খতিয়ে দেখতে পারে যে ওই সম্পত্তির মধ্যে হিসেব বহির্ভূত কিছু আছে কি না ৷ তাহলে শোভন তো বটেই, বৈশাখীকেও বিপাকে পড়তে হতে পারে ৷
অরুণাংশু চক্রবর্তীর মতে, শোভন এই পদক্ষেপ করতে গিয়ে নিজেই খাল কেটে কুমির আনলেন ৷ এর পর শুধু শোভন নয়, বৈশাখীরও জেলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেল, যদি সম্পত্তিতে কোনও গোলমাল থাকে তাহলে ৷
আরও পড়ুন : বৈশাখীর সাহসকে কুর্নিশ অনুরাগীর, বোল্ড ম্য়াডোনার সঙ্গে তুলনা বাঙালি বধূর
অন্যদিকে আইনজীবী পার্থপ্রতীম বিশ্বাস বলছেন, নারদ মামলায় ইডির নোটিসে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি আগে থেকেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলে উল্লেখ করা থাকে ৷ তাহলে পুরো বিষয়টি বিচারাধীন ৷ সেক্ষেত্রে দান করার পরও ইডির হাত থেকে সম্পত্তি বাঁচাতে পারবে না শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷
তবে তিনি অন্য একটি প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তাঁর প্রশ্ন, আদৌ কি শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পত্তি দান করেছেন ? মুখে বলছেন কিন্তু শোভন বা বৈশাখী কি দলিল দেখিয়েছেন ? পার্থপ্রতীম বিশ্বাসের বক্তব্য, মুখের কথার কোনও দাম নেই ৷ এটা কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধিও হতে পারে ৷