ETV Bharat / city

Covid Restriction in Bengal : গণপরিবহণ বন্ধ রেখেই খুলল অফিস, সরকারি সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে রাজ্যে চলছে কড়া বিধিনিষেধ ৷ তার মধ্যে অফিস খোলায় ছাড় দিয়েছে সরকার ৷ কিন্তু বাস-ট্রেন-মেট্রো বন্ধ, কর্মীরা আসবেন কীভাবে ? এই নিয়ে ক্ষোভ যেমন আছে, তেমনই এই পরিস্থিতি করোনার সংক্রমণ কমাতে সরকারের পাশে থাকা উচিত বলে মনে করছেন অনেকে ৷

west bengal government decision on covid restriction creating controversy
গণপরিবহণ বন্ধ রেখেই খুলল অফিস, সরকারি সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
author img

By

Published : Jun 16, 2021, 5:30 PM IST

কলকাতা, 16 জুন : এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী । একটা সময় দৈনিক 20 হাজারের কাছাকাছি সংক্রমণ পৌঁছে গেলেও, এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে । বিগত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে মৃত্যুহারও কমতে শুরু করেছে । এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের তরফে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে । সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে 25 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার ।

অথচ গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফ থেকে । আর এতেই তৈরি হয়েছে সমস্যা ৷ কারণ, রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ গণপরিবহণের উপর নির্ভরশীল ৷ তাই বাস-ট্রেন-মেট্রো বন্ধ করে রেখে অফিস, বাজার, শপিং মল, রেস্তরাঁ-সহ একাধিক জায়গায় ছাড় দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের একাংশের উপর ।

আরও পড়ুন : 1 জুলাই পর্যন্ত বন্ধ গণপরিবহণ, সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বেসরকারি বাস মালিকরা

যে পদ্ধতিতে আত্মনিয়ন্ত্রণ বা কড়া বিধিনিষেধ রাজ্য সরকার চালু করেছে, তাতে লাভের কিছু দেখছেন না চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশ । বুধবার রাজ্য সরকারের বর্তমান উদ্যোগের কিছুটা সমালোচনা করেছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ। তিনি বলেন, ‘‘এভাবে মানুষের উপর লকডাউন বা বিধিনিষেধ যাই বলা হোক না কেন, তা চাপিয়ে দিয়ে করোনার সংক্রমণ কমানো সম্ভব নয় । বরং এর মাধ্যমে বহু সংখ্যক মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয় । এভাবেই সবকিছু বন্ধ না করে সরকার যদি মাইক্রো লেভেলে কনটেইনমেন্ট জোন তৈরি করে করোনা মোকাবিলার চেষ্টা করত, তাতে অনেক ভালো ফল পাওয়া যেত ।’’

তিনি বলেন, ‘‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম এবং শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ, কেউই কেন্দ্রের লকডাউন এবং রাজ্যের কড়া বিধিনিষেধকে সমর্থন করে না ।’’ চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণের মতে, ‘‘শেষ পর্যায়ে যে বিধিনিষেধ রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, তার কোনও বাস্তব ব্যাখ্যা আমি খুঁজে পাচ্ছি না । যদিও এটা আমার ব্যক্তিগত মত । আসলে যে বিশাল সংখ্যক মানুষকে সরকারি এবং বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে । তাঁরা কীভাবে সেখানে পৌছবেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে না । সবচেয়ে বড় কথা, সব বেসরকারি অফিসের ক্ষমতা নেই তাদের কর্মীদের অফিসে নিয়ে আসার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার । ফলে তারা কার্যক্ষেত্রে এই সুযোগের কোনও সদ্ব্যবহার করতে পারছে না । সমস্যা বাড়ছে ।’’

আরও পড়ুন : ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে নতুন কমিটির উপর আস্থা নেই বাস মালিকদের একাংশের

রাজ্য সরকার যদি এখনই গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দেয়, তাহলে কতগুলি বাস বা মিনিবাস রাস্তায় নামবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে । একদিকে টানা দেড় বছর লকডাউন বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাস মালিকরা । অনেক বাস দীর্ঘদিন না চলার কারণে জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছে ৷ সেগুলিকে আবার রাস্তায় চলার যোগ্য করে তোলার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তা এই মুহূর্তে বাস মালিকদের হাতে নেই । অন্যদিকে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, টোল প্লাজাগুলিতে ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়ানো, সব মিলিয়ে জটিল অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গণপরিবহণ ব্যবস্থা ।

জয়েন্ট কাউন্সিল বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কেন্দ্র এবং রাজ্যের কল্যাণে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বাস মালিকরা । তাই সরকার চাইলেও এখনই বাস নামানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে । সরকার যদি মনে করে বেসরকারি বাস শহরের বুকে চলুক ৷ তাহলে সবার আগে এক-দুই টাকা নয়, বিজ্ঞানসম্মতভাবে বাসের ভাড়া বাড়াতে হবে । তবেই এই বেসরকারি পরিবহণ শিল্প বাঁচবে । নতুবা আমাদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব নয় ।’’

আরও পড়ুন : কলকাতার দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক বাস চালানোয় জোর দিতে চান পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম

এমতাবস্তায় একটা জটিল সমস্যার সামনে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ । তাঁরা এই মুহূর্তে গণপরিবহণের দিকে তাকিয়ে থাকলেও তা বাস্তবে কতটা চলা সম্ভব হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে । কিন্তু এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে মনে করছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী ।

তাঁর মতে, ‘‘সরকার একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এই অবস্থায় সকলের উচিত সরকারকে সাহায্য করা । হ্যাঁ, এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই বর্তমান পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবন কঠিন হয়ে পড়ছে । তবে গত এক-দু’মাস আগেও আগেও রাজ্যে করোনা সংক্রমণের যে ছবিটা ছিল, সরকারি পদক্ষেপের ফলেই তার বদল এসেছে । যেহেতু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় ঝড় আসতে পারে করোনার । সে দিক থেকে বিচার করলে সরকারকে আরও কিছুটা সময় দেওয়া উচিত ।’’

আরও পড়ুন : ভাড়া না বাড়লে চলবে না বাস-মিনিবাস, হুঁশিয়ারি মালিক সংগঠনের

কলকাতা, 16 জুন : এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী । একটা সময় দৈনিক 20 হাজারের কাছাকাছি সংক্রমণ পৌঁছে গেলেও, এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে । বিগত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে মৃত্যুহারও কমতে শুরু করেছে । এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের তরফে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে । সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে 25 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার ।

অথচ গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফ থেকে । আর এতেই তৈরি হয়েছে সমস্যা ৷ কারণ, রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ গণপরিবহণের উপর নির্ভরশীল ৷ তাই বাস-ট্রেন-মেট্রো বন্ধ করে রেখে অফিস, বাজার, শপিং মল, রেস্তরাঁ-সহ একাধিক জায়গায় ছাড় দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের একাংশের উপর ।

আরও পড়ুন : 1 জুলাই পর্যন্ত বন্ধ গণপরিবহণ, সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বেসরকারি বাস মালিকরা

যে পদ্ধতিতে আত্মনিয়ন্ত্রণ বা কড়া বিধিনিষেধ রাজ্য সরকার চালু করেছে, তাতে লাভের কিছু দেখছেন না চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশ । বুধবার রাজ্য সরকারের বর্তমান উদ্যোগের কিছুটা সমালোচনা করেছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ। তিনি বলেন, ‘‘এভাবে মানুষের উপর লকডাউন বা বিধিনিষেধ যাই বলা হোক না কেন, তা চাপিয়ে দিয়ে করোনার সংক্রমণ কমানো সম্ভব নয় । বরং এর মাধ্যমে বহু সংখ্যক মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয় । এভাবেই সবকিছু বন্ধ না করে সরকার যদি মাইক্রো লেভেলে কনটেইনমেন্ট জোন তৈরি করে করোনা মোকাবিলার চেষ্টা করত, তাতে অনেক ভালো ফল পাওয়া যেত ।’’

তিনি বলেন, ‘‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম এবং শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ, কেউই কেন্দ্রের লকডাউন এবং রাজ্যের কড়া বিধিনিষেধকে সমর্থন করে না ।’’ চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণের মতে, ‘‘শেষ পর্যায়ে যে বিধিনিষেধ রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, তার কোনও বাস্তব ব্যাখ্যা আমি খুঁজে পাচ্ছি না । যদিও এটা আমার ব্যক্তিগত মত । আসলে যে বিশাল সংখ্যক মানুষকে সরকারি এবং বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে । তাঁরা কীভাবে সেখানে পৌছবেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে না । সবচেয়ে বড় কথা, সব বেসরকারি অফিসের ক্ষমতা নেই তাদের কর্মীদের অফিসে নিয়ে আসার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার । ফলে তারা কার্যক্ষেত্রে এই সুযোগের কোনও সদ্ব্যবহার করতে পারছে না । সমস্যা বাড়ছে ।’’

আরও পড়ুন : ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে নতুন কমিটির উপর আস্থা নেই বাস মালিকদের একাংশের

রাজ্য সরকার যদি এখনই গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দেয়, তাহলে কতগুলি বাস বা মিনিবাস রাস্তায় নামবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে । একদিকে টানা দেড় বছর লকডাউন বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাস মালিকরা । অনেক বাস দীর্ঘদিন না চলার কারণে জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছে ৷ সেগুলিকে আবার রাস্তায় চলার যোগ্য করে তোলার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তা এই মুহূর্তে বাস মালিকদের হাতে নেই । অন্যদিকে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, টোল প্লাজাগুলিতে ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়ানো, সব মিলিয়ে জটিল অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গণপরিবহণ ব্যবস্থা ।

জয়েন্ট কাউন্সিল বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কেন্দ্র এবং রাজ্যের কল্যাণে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বাস মালিকরা । তাই সরকার চাইলেও এখনই বাস নামানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে । সরকার যদি মনে করে বেসরকারি বাস শহরের বুকে চলুক ৷ তাহলে সবার আগে এক-দুই টাকা নয়, বিজ্ঞানসম্মতভাবে বাসের ভাড়া বাড়াতে হবে । তবেই এই বেসরকারি পরিবহণ শিল্প বাঁচবে । নতুবা আমাদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব নয় ।’’

আরও পড়ুন : কলকাতার দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক বাস চালানোয় জোর দিতে চান পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম

এমতাবস্তায় একটা জটিল সমস্যার সামনে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ । তাঁরা এই মুহূর্তে গণপরিবহণের দিকে তাকিয়ে থাকলেও তা বাস্তবে কতটা চলা সম্ভব হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে । কিন্তু এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে মনে করছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী ।

তাঁর মতে, ‘‘সরকার একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এই অবস্থায় সকলের উচিত সরকারকে সাহায্য করা । হ্যাঁ, এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই বর্তমান পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবন কঠিন হয়ে পড়ছে । তবে গত এক-দু’মাস আগেও আগেও রাজ্যে করোনা সংক্রমণের যে ছবিটা ছিল, সরকারি পদক্ষেপের ফলেই তার বদল এসেছে । যেহেতু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় ঝড় আসতে পারে করোনার । সে দিক থেকে বিচার করলে সরকারকে আরও কিছুটা সময় দেওয়া উচিত ।’’

আরও পড়ুন : ভাড়া না বাড়লে চলবে না বাস-মিনিবাস, হুঁশিয়ারি মালিক সংগঠনের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.