কলকাতা, 8 মার্চ : তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে মালদায় ক্ষোভ চলছিল । বিশেষ করে হবিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মুকে নিয়ে অভিযোগ ছিল, তিনি নাকি তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন । রবিবার রাতে সেই অভিযোগ আরও স্পষ্ট হয় । জানা যায় কলকাতায় পদ্ম শিবিরে যোগ দিতে রওনা দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী । এই অবস্থায় চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়ে তৃণমূল । তাই সকাল হতে হবিবপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বদল করা হল । এদিন তৃণমূলের তরফে প্রেস বিবৃতিতে জারি করে এই বদলের খবর জানানো হয়েছে । বলা হয়েছে শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাঁকে প্রার্থী পদ থেকে সরানো হল । এদিন তাঁর বদলে প্রদীপ বাস্কেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় ।
তৃণমূল একথা বললেও বাস্তব চিত্র অন্য । আজ কলকাতার হেস্টিংসে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন মালদা জেলা পরিষদের একাধিক সদস্য । সেই তালিকায় রয়েছে তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মুর নাম । পশ্চিম বাংলার বুকে এমন ঘটনা ঘটেনি যে, প্রার্থী হয়ে কেউ অন্য দলে যোগদান করেছেন । কিন্তু এমন ঘটনা বাস্তবে ঘটতে চলেছে আজ । যার ফলস্বরূপ এদিন প্রার্থী বদল করতে হল রাজ্যের শাসক দলকে ।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছে, বরাবর সরলা মুর্মু নিজেকে হেভিওয়েট মনে করেন । কার্যত মন্ত্রীর মতোই তাঁর চলনবলন, হাঁকদর, দাপট । আর তাই নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেন তিনি । দলের ইচ্ছা গুরুত্ব পায় না তাঁর কাছে । তাই দল তাঁকে টিকিট দিলেও তা তাঁর পছন্দ হয়নি । সেই না পসন্দের জেরে এবার তিনি দলত্যাগ করছেন । ঘাসফুল ছেড়ে চলে তিনি পদ্মবনে যাচ্ছেন ।
আরও পড়ুন : তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পাঁচ মন্ত্রী
সরলা মুর্মু মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন । 2013 সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন । কিন্তু 2016 সালে তিনি চলে আসেন তৃণমূলে । 2018 সালে তৃণমূল তাঁকে জেলা পরিষদের আসনে টিকিট দিলেও আর জেলা পরিষদের সভাধিপতি করেনি । তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল সরলার । সেই ক্ষোভ মেটাতে চেয়েছিলেন দল তাঁকে বিধানসভার টিকিট দিক । সেই আবদার অবশ্য রেখেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব । তাঁকে আদিবাসী অধ্যুষিত তফশিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত হবিবপুর আসন দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু সেই আসন না পসন্দ সরলার । তাঁর চাই পুরাতন মালদা আসন । যা কিনা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত । কিন্তু দল সেই আসনে তাঁকে টিকিট দেয়নি । সেই রাগে এবার তিনি বিজেপির পথে পা বাড়িয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ।