ETV Bharat / city

‘মা'-র রান্নাঘর নাকি ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’, ভোট বাক্সে কে টেক্কা দেবে ? - পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোট

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মায়ের রান্নাঘর’ বনাম সিপিএমের ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’৷ বাংলাতে শ্রমজীবী ক্যান্টিন বা মায়ের রান্নাঘরের সাফল্য ঠিক কতটা হবে, কিংবাকে কে কাকে টেক্কা দেবে, তা এখনই বলা মুশকিল ৷ কিন্তু এটা যে এবার ভোটের অন্যতম হাতিয়ার হতে যাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য ৷

মমতার ‘মায়ের রান্নাঘর’ নাকি সিপিএমের ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’, ভোট বাক্সে কে কাকে টেক্কা দেবে ?
মমতার ‘মায়ের রান্নাঘর’ নাকি সিপিএমের ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’, ভোট বাক্সে কে কাকে টেক্কা দেবে ?
author img

By

Published : Feb 15, 2021, 10:19 PM IST

Updated : Feb 15, 2021, 10:51 PM IST

কলকাতা, 15 ফেব্রুয়ারি : ‘আম্মা উনভগম’ ৷ তামিল এই কথাটির অর্থ ‘মায়ের রান্নাঘর’ ৷ ঠিক তেমনই একটি প্রকল্প আজ, সোমবার থেকে বাংলার বুকে শুরু হল নতুন একটি প্রকল্প ৷ আপাতত কলকাতায় পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার চালু করা ওই ‘আম্মা উনভগম’ প্রকল্পের ৷ আম্মা ক্যান্টিন নামে বহুল পরিচিত ওই প্রকল্পেও 5 টাকায় খাবার পাওয়া যায় ৷ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মা’-এর রান্নাঘরেও 5 টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ডিম-ভাত ৷

তৃণমূল কংগ্রেসের কট্টর বিরোধী বিজেপি অবশ্য এই প্রকল্পকে নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে ৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে এই প্রকল্প কি সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নির্বাচনে বৈতরণী পার করার অন্যতম সাঁকো হয়ে উঠতে পারবে ? গরিব জনতার পেট ভরিয়ে কি ইভিএমে ঘাসফুলের ভোট ভরাতে পারবেন মমতা ?

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সেটা সম্ভব হলে অস্বাভাবিক হওয়ার কিছু নেই ৷ কারণ, যাঁদের দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হয় ৷ তাঁদের কাছে এই প্রকল্প হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো ৷ অন্তত একবেলার খাবার তো মিলবে ৷ বিশেষ করে কোরোনা পরবর্তী এই পরিস্থিতিতে যখন উপার্জনের পথ আরও বন্ধুর হয়ে উঠেছে ৷

কিন্তু এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে অনেক বেশি টক্কর দিতে হবে আরেক বিরোধী রাজনৈতিক দল সিপিএমের সঙ্গে ৷ কারণ, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে পরিচালিত হওয়া এই দল আগেই এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে ৷ যার পোশাকি নাম শ্রমজীবী ক্যান্টিন ৷ সেখানে শুধু ডিম-ভাত নয়, মাছ-মাংসও পাওয়া যায় ৷ দাম 20 টাকা ৷ আর নিরামিষ খাবার 10 টাকায় সপ্তাহে একদিন পাওয়া যায় ৷ কলকাতায় শুরু হওয়া এই উদ্যোগ ৷ এখন রাজ্যের বেশ কয়েকটি অংশে ছড়িয়ে গিয়েছে ৷

মূলত, কোরোনার সময় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ৷ ফলে এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই, এটা সিপিএমের পক্ষে দাবি করা অনেক সহজ ৷ যদিও অন্য একটি মত হল, পরের বছর বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের ভিত্তি বাড়াতে আগেভাগেই সিপিএমের তরফে এই উদ্যোগ পরিকল্পনা করে নেওয়া হয়েছিল ৷

কিন্তু সামগ্রিক ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মা’-এর রান্নাঘর ভোটের মুখে সিপিএমের ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল ৷ তাই শেষ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে কে ভোট-বাক্স ভরাতে পারবে, তার উত্তর তো সময় হলেই মিলবে ৷ কিন্তু তুলনামূলক আলোচনায় যদি যাওয়া যায়, তাহলে দেখা যাবে যে জয়ললিতার চালু করা আম্মা ক্যান্টিনের সুফল তাৎক্ষণিক হলেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি ৷

2013 সালের 19 ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল তামিলনাড়ুতে ৷ পরের বছর 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল জয়ললিতার দল এআইএডিএমকে ৷ রাজ্যের 39টি আসনের মধ্যে 37টিতে তারা জিতেছিল ৷ 2009 সালের ভোটের নিরিখে 11টি আসন বেড়েছিল জয়ললিতার দলের ৷ কিন্তু দু’বছর পর 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এআইএডিএমকে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলেও তাদের আসন কমেছিল 14টি ৷ ফলে বলা যেতেই পারে যে শুরুর দিকে সাফল্যের অন্যতম সূত্রধর হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রিয়তা কমেছে আম্মা ক্যান্টিনের ৷

আরও পড়ুন : রাজ্য়ের ডিম-ভাত নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির, পালটা জবাব ফিরহাদের

তাই বাংলাতেও শ্রমজীবী ক্যান্টিন বা মা-এর রান্নাঘরের সাফল্য ঠিক কতটা হবে, কিংবাকে কে কাকে টেক্কা দেবে, তা এখনই বলা মুশকিল ৷ কিন্তু এটা যে এবার ভোটের অন্যতম হাতিয়ার হতে যাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য ৷

কলকাতা, 15 ফেব্রুয়ারি : ‘আম্মা উনভগম’ ৷ তামিল এই কথাটির অর্থ ‘মায়ের রান্নাঘর’ ৷ ঠিক তেমনই একটি প্রকল্প আজ, সোমবার থেকে বাংলার বুকে শুরু হল নতুন একটি প্রকল্প ৷ আপাতত কলকাতায় পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার চালু করা ওই ‘আম্মা উনভগম’ প্রকল্পের ৷ আম্মা ক্যান্টিন নামে বহুল পরিচিত ওই প্রকল্পেও 5 টাকায় খাবার পাওয়া যায় ৷ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মা’-এর রান্নাঘরেও 5 টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ডিম-ভাত ৷

তৃণমূল কংগ্রেসের কট্টর বিরোধী বিজেপি অবশ্য এই প্রকল্পকে নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে ৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে এই প্রকল্প কি সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নির্বাচনে বৈতরণী পার করার অন্যতম সাঁকো হয়ে উঠতে পারবে ? গরিব জনতার পেট ভরিয়ে কি ইভিএমে ঘাসফুলের ভোট ভরাতে পারবেন মমতা ?

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সেটা সম্ভব হলে অস্বাভাবিক হওয়ার কিছু নেই ৷ কারণ, যাঁদের দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হয় ৷ তাঁদের কাছে এই প্রকল্প হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো ৷ অন্তত একবেলার খাবার তো মিলবে ৷ বিশেষ করে কোরোনা পরবর্তী এই পরিস্থিতিতে যখন উপার্জনের পথ আরও বন্ধুর হয়ে উঠেছে ৷

কিন্তু এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে অনেক বেশি টক্কর দিতে হবে আরেক বিরোধী রাজনৈতিক দল সিপিএমের সঙ্গে ৷ কারণ, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে পরিচালিত হওয়া এই দল আগেই এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে ৷ যার পোশাকি নাম শ্রমজীবী ক্যান্টিন ৷ সেখানে শুধু ডিম-ভাত নয়, মাছ-মাংসও পাওয়া যায় ৷ দাম 20 টাকা ৷ আর নিরামিষ খাবার 10 টাকায় সপ্তাহে একদিন পাওয়া যায় ৷ কলকাতায় শুরু হওয়া এই উদ্যোগ ৷ এখন রাজ্যের বেশ কয়েকটি অংশে ছড়িয়ে গিয়েছে ৷

মূলত, কোরোনার সময় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ৷ ফলে এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই, এটা সিপিএমের পক্ষে দাবি করা অনেক সহজ ৷ যদিও অন্য একটি মত হল, পরের বছর বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের ভিত্তি বাড়াতে আগেভাগেই সিপিএমের তরফে এই উদ্যোগ পরিকল্পনা করে নেওয়া হয়েছিল ৷

কিন্তু সামগ্রিক ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মা’-এর রান্নাঘর ভোটের মুখে সিপিএমের ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল ৷ তাই শেষ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে কে ভোট-বাক্স ভরাতে পারবে, তার উত্তর তো সময় হলেই মিলবে ৷ কিন্তু তুলনামূলক আলোচনায় যদি যাওয়া যায়, তাহলে দেখা যাবে যে জয়ললিতার চালু করা আম্মা ক্যান্টিনের সুফল তাৎক্ষণিক হলেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি ৷

2013 সালের 19 ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল তামিলনাড়ুতে ৷ পরের বছর 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল জয়ললিতার দল এআইএডিএমকে ৷ রাজ্যের 39টি আসনের মধ্যে 37টিতে তারা জিতেছিল ৷ 2009 সালের ভোটের নিরিখে 11টি আসন বেড়েছিল জয়ললিতার দলের ৷ কিন্তু দু’বছর পর 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এআইএডিএমকে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলেও তাদের আসন কমেছিল 14টি ৷ ফলে বলা যেতেই পারে যে শুরুর দিকে সাফল্যের অন্যতম সূত্রধর হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রিয়তা কমেছে আম্মা ক্যান্টিনের ৷

আরও পড়ুন : রাজ্য়ের ডিম-ভাত নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির, পালটা জবাব ফিরহাদের

তাই বাংলাতেও শ্রমজীবী ক্যান্টিন বা মা-এর রান্নাঘরের সাফল্য ঠিক কতটা হবে, কিংবাকে কে কাকে টেক্কা দেবে, তা এখনই বলা মুশকিল ৷ কিন্তু এটা যে এবার ভোটের অন্যতম হাতিয়ার হতে যাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য ৷

Last Updated : Feb 15, 2021, 10:51 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.