কলকাতা, 25 ফেব্রুয়ারি : রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের হস্তক্ষেপেও বেরল না কোনও সমাধান সূত্র । শহরতলীর গোপন জায়গায় আব্বাস সিদ্দিকীর পাঠানো প্রতিনিধির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ । এই বৈঠকে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে কেউ উপস্থিত ছিলেন না । কংগ্রেসের হাইকমান্ড সোনিয়া গান্ধির নির্দেশে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের দুই প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন । অতীতেও বারবার যে জেলাগুলিতে প্রার্থীদের নিয়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল কংগ্রেসের, আজকের বৈঠকেও একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তি হল । কোনওভাবেই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসতে নারাজ আইএসএফ এবং কংগ্রেস ।
আজকের বৈঠকের ফলাফল জানানো হবে সোনিয়া গান্ধিকে । আগামিকাল অথবা পরশু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে ফের বৈঠক হওয়ার কথা । আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য আসল সমঝোতার রফা করতে পারেন । কিন্তু সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকেই । কাকে কোন আসন ছাড়া হবে, সে বিষয়ে এআইসিসির নির্দেশ অনুসারে অধীর চৌধুরী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ৷ তাই তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন যে আইএসএফ-কে ক’টি আসন দেওয়া হবে ।
মালদা, মুর্শিদাবাদ, দুই 24 পরগণা, দুই দিনাজপুর নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে ফের নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে আইএসএফ-এর । আন্তরিকতার সঙ্গে আজ আইএসএফ প্রতিনিধিদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন আব্দুল মান্নান এবং প্রদীপ ভট্টাচার্য । কিন্তু তারা মানতে নারাজ । আজকেও ফের একলা লড়াইয়ের কথাই উঠে এল নওশাদ সিদ্দিকীর গলায় ।
সূত্রের খবর, বৈঠকেই তিনি জানিয়েছেন যে মনের মতো আসন না পেলে সমঝোতায় যেতে নারাজ তাঁরা । একক ভাবেই রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাঁরা । যা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত কংগ্রেসের জোটপন্থীরা । তাঁদের মতে, বিজেপি এবং তৃণমূলের সুবিধা হয়ে যাবে আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দল আইএসএফের এককভাবে লড়াই করলে । অন্যদিকে কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে আসন সমঝোতার জন্য রাজ্য কংগ্রেসকে যথেষ্ট নমনীয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ।
আরও পড়ুন : মোদি ও মমতার বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ সেলিমের
তাহলে কেন এখনও জোট নিয়ে জটিলতা ?
প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, জোট আসলে ভেঙে গিয়েছে । তাঁর দাবি, জোট নিয়ে অধীর চৌধুরীর আন্তরিকতা নেই ৷ তাই জোট প্রক্রিয়ায় জল ঢেলেছেন স্বয়ং অধীর চৌধুরী । প্রত্যেকটি বৈঠকে উপস্থিত থাকেননি অধীর চৌধুরী । বাম-কংগ্রেসের মোট তিনটি বৈঠকে উপস্থিত থেকে বৈঠকের মাঝেই ধৈর্য হারিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি । 'দলের কাজে' এতটাই ব্যস্ত তিনি যে, জোট প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য সময় নেই তাঁর । প্রবল ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্য কংগ্রেসের একাধিক নেতৃত্ব । এই অবস্থায় এসে যদি জোট প্রক্রিয়া বানচাল হয়, তার জন্য দায়ী থাকবেন অধীররঞ্জন চৌধুরী, দাবি প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের ।