কলকাতা, 12 অক্টোবর : রাজ্যে আজ মহাসপ্তমীর সুর সপ্তমে। ঠিক তখনই কলকাতা থেকে প্রায় দু'হাজার কিলোমিটার দূরে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ঘর গোছানোর কাজ শুরু করেছে। সমুদ্র এবং সৈকত প্রধান পশ্চিমের রাজ্য গোয়া মেতেছে তৃণমূলে। দিনকয়েক আগেই কলকাতায় এসে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা লুইজিনহো ফালেইরো। তারপর থেকেই প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে তৃণমূলের নাম লেখাচ্ছেন সেখানকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং কর্মীরা। সবচেয়ে বড় কথা সুশীল সমাজের একটা বড় অংশ বিজেপিকে হঠাতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে ।
একুশের নির্বাচনের পরই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল যে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ক্ষমতা কায়েম করতে ঝাঁপাবে তৃণমূল কংগ্রেস। তার জন্য তৈরি হয় রূপরেখা। স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, যে রাজ্যে পা রাখবেন সেই রাজ্য দখল করবেন। 2022 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তৃণমূল কংগ্রেস বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এবার ঘর গোছানো শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
হাতে সময় কম। দেখতে দেখতে ফেব্রুয়ারি মাস চলে আসবে। এই অবস্থায় সম্প্রতি গোয়ায় গিয়ে সেখানের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকি গোয়ায় অনেক রাজনৈতিক নেতারাও অভিষেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে সূত্রের খবর। গায়ক লাকি আলি থেকে প্রাক্তন সাঁতারু তথা অভিনেত্রী নাফিসা আলির সঙ্গে গতকালই দেখা করেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। গোয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে একপ্রস্থ কথাও হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ‘বেঙ্গল টাইগ্রেস’ বলে উল্লেখ করে শুভেচ্ছা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন নাফিসা আলি। তিনি লিখেছেন, "আমি খুশি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস গোয়া নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
আরও পড়ুন : পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতাই যোগ্যতম, কংগ্রেসকে বিঁধে বোঝাল তৃণমূল
প্রযোজক-পরিচালক টনি ডিয়াজও তৃণমূল কংগ্রেসে পা বাড়িয়েছেন । রবিবার তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন। পাশাপাশি ছাত্র যুব মহিলা সংগঠনের প্রায় 200 জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী যোগদান করেন তৃণমূলে।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেন যে, "গোয়ার মানুষ বিজেপির প্রতি বীতশ্রদ্ধ। তারা যেকোনও মূল্যেই বিজেপি সরকারের থেকে মুক্তি চাইছে। কিন্তু সমস্যা হল ওই রাজ্যে বিরোধী শক্তি হিসেবে কংগ্রেস বা অন্য বিরোধীরা এতটাই দুর্বল এটা বাস্তবে সম্ভব কি না সে বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন মানুষ আশাবাদী ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তাঁরা চাইছেন গোয়াতেও মা-মাটি-মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। আর সে কারণেই গোয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন ক্রমেই বাড়ছে ৷"