কলকাতা, 8 অক্টোবর: উইনেস্কোর সম্মানকে ধন্যবাদ জানিয়ে পদযাত্রার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল দুর্গোৎসব ৷ আর পুজো কার্নিভাল (Kolkata Durga Puja Carnival) দিয়ে শেষ হচ্ছে দুর্গাপুজো ৷ শহরের নামজাদা প্রায় 100টি পুজোর প্রতিমা নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হল রেড রোডে ৷ দেশ-বিদেশ থেকে বহু অতিথি এই কার্নিভালে অংশ নিয়েছেন ৷ তবে, ব্রাত্য শহরের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন ৷ এ বারের কার্নিভালে থাকছে সোনাগাছির যৌনপল্লির কচিকাচারাও ৷ কিন্তু, বাদ পড়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন (Transgender Community Feel Deprived) ৷ এমনকি এ বছর তাঁরা সরকারি টাকাও পাননি ৷ বিষয়টি নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কেও (Mamata Banerjee) চিঠি লিখেছেন ৷
গত 5 বছর তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন একত্রিত হয়ে দুর্গাপুজো করেন (Transgender Community Puja) ৷ এমনকি তাঁদের প্রতিমার রুপ একেবারেই আলাদা ৷ তাঁরা মাকে অর্ধনারীশ্বর রূপে আরাধনা করেন ৷ অর্থাৎ, একদিকে শিব, অন্যদিকে পার্বতী ৷ হর-গৌরী বা অর্ধনারীশ্বর রূপে দুর্গার আরাধনা হয় এখানে ৷ কোনও রকম আর্থিক সহায়তা ছাড়াই নিজেরা নিজেদের সাধ্য মতো মায়ের পুজো করেছেন তাঁরা ৷ ক্লাবগুলিকে পুজোর জন্য যে সরকারি অনুদান দেওয়া হয় ৷ সেই অর্থ গতবছর পর্যন্ত মিললেও, এই বছর সেই 60 হাজার টাকাও পাননি তাঁরা। তাই টানাটানি থাকলেও নিষ্ঠার সঙ্গেই এই বছরেও পুজো করেছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন ৷
গত চার বছর ধরে পুজোর আয়োজন করছেন রূপান্তরকামী রঞ্জিতা সিনহা ৷ অন্যান্যবার পুজো হতো গোখেল রোডে তাঁর বাড়িতেই। তবে, এই বছর প্রথমবার সরকারের দেওয়া হোম মুকুন্দপুরের গরিমা গৃহতে হয়েছে পুজো ৷ রঞ্জিতা সিনহা বলেন, যে সরকারের দেওয়া জমিতে পুজো হলেও, এত বড় পুজোর জন্য এই বছর রাজ্য সরকারের আর্থিক অনুদান থেকে ব্রাত্য রইল গরিমা গৃহের পুজো ৷
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজো কার্নিভালের ট্যাবলোয় ধাক্কা বেপরোয়া ট্যাক্সির
মেম্বার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সজেন্ডার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড-এর প্রাক্তন সদস্য রঞ্জিতা সিনহা বলেন, ‘‘এটা খুব দুঃখের বিষয় যে, প্রতিবছর দুর্গাপুজোর কার্নিভাল হয় ৷ তবে, আমরা কোনও বছরেই ডাক পাই না ৷ পুজো কমিটি এবং ক্লাবগুলিকে যে অর্থদান করা হয় ৷ তা এ বছর আমরা পাইনি ৷ আমি এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠিও দিয়েছি ৷ কিন্তু, কোন উত্তর পাইনি ৷ আমাদের এই পুজোটা শুধুমাত্র একটা পুজো নয় ৷ এটা মানুষকে সচেতন করার একটা পদক্ষেপও বটে ৷ এই বছর পুজোয় দেশ-বিদেশের গবেষকরা এসেছেন ৷ অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন দূতাবাসের অ্যাম্বাসাডরাও এসেছেন ৷ বহু মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে এই পুজোকে সমর্থন জানিয়েছেন ৷’’