কলকাতা, 28 জুন : রাজ্যে আবার করোনা (Covid-19) গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী । বিশেষ করে কলকাতা এবং তার লাগোয়া জেলাগুলিতে বাড়ছে সংক্রমণ । এই অবস্থায় প্রায় দু’বছরের মাথায় আবার একুশ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ (TMCs 21 July Programme) ফিরছে ধর্মতলায় । গত দু’বছর জনস্বাস্থ্য ও দলীয় কর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবে শহিদ সমাবেশ ধর্মতলায় করা থেকে বিরত থেকেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) । বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে রাজধর্ম পালন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) ।
শুধু তাই নয়, একুশের বিধানসভা (Bengal Assembly Elections 2021) ভোটে জয়ের পর ব্রিগেডে জনসভা করে বিজয় উৎসব পালনের কথা আগে ঘোষণা করলেও, করোনার কারণে সেই কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে এসেছিল তৃণমূল । তবে গত বছরের তুলনায় এবার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে করোনা সংক্রমণ (Covid-19 Infection) । আর তাই কালীঘাট মিলন সংঘের বন্ধ চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে এবার শহিদ দিবস পালন হবে ধর্মতলায় । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের ক্রমবর্ধমান করোনার গ্রাফ চিন্তা বাড়াচ্ছে শাসক শিবিরের ।
একুশে জুলাই মানেই লাখো লাখো মানুষের জমায়েত ধর্মতলায় । মমতার বক্তব্য শুনতে বিভিন্ন জেলা থেকে কাতারে কাতারে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক আসে এই মহানগরে । কিন্তু করোনার এই বাড়ন্ত পরিস্থিতির মধ্যে তাদের সুরক্ষার বিষয়টি কী হবে, সেটাই তৃণমূল কংগ্রেসকে চিন্তায় রেখেছে ।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা পশ্চিমবঙ্গ ডক্টরস ফোরামের সভাপতি অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘একটা নির্দিষ্ট সংযমের অধ্যায় পার করে আসার পরে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোভিড সচেতনতা নিয়ে কিছুটা ঢিলেমি দেখা যাচ্ছে । বহু ক্ষেত্রে তাঁরা মাস্ক বিধি মানছেন না । এই অবস্থায় যেমন সরকারের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, একইভাবে ভূমিকা রয়েছে চিকিৎসক ও রাজনৈতিক দলগুলিরও ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কোন সন্দেহ নেই একুশে জুলাইয়ের মতো বড় সমাবেশ যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ ধর্মতলায় জমা হন সেখানে করোনা বিধি না মানলে, তা বড় সংক্রমণের কারণ হতে পারে । এই কারণেই এই ধরনের সমাবেশ যখনই হবে শহর অথবা গ্রামে তখন উচিত কঠোরভাবে করোনাবিধি পালনের উপর জোর দেওয়া । যারা এই সভায় আসবেন তারা যেন মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা । ভুলে গেলে চলবে না, করোনা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের গুরু দায়িত্ব রয়েছে ।’’
এদিন এই বিষয় নিয়েই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব জানিয়েছে, রাজ্যের শাসক দল এই বিষয়টিকে কখনোই হালকাভাবে নিচ্ছে না । দু’বছর বাদে সমাবেশ হলেও প্রথম দিন থেকেই কর্মীদের সুরক্ষা কথা মাথায় রেখে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে । এখানেই শেষ নয় যেখানে যেখানে দলীয় কর্মীদের রাখার ব্যবস্থা হবে, সেখানে আলাদা করে চিকিৎসকদের একটা দল থাকবে । যেকোনো সন্দেহভাজন দলীয় কর্মীদের ক্ষেত্রে কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে । এ বিষয়ে সচেতনতার দায়িত্ব আলাদা করে দেওয়া হয়েছে ছাত্রদের । বর্তমানে যে প্রচার সভাগুলি চলছে, সেখান থেকেই দলীয় কর্মীদের করোনার বিপদ সম্পর্কেও সচেতন করা হচ্ছে ।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায় জানিয়েছেন, এই দলের মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি জনগণের সুরক্ষার বিষয়টিকে সব সময় অগ্রাধিকার দেন । একুশের শহিদ সমাবেশ যাতে সঠিকভাবে পালন করা যায়, তার জন্য সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা করা হবে । অবশ্যই করোনা সতর্কতা থেকে বাঁচতে মাস্কের ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে ।